সর্বশেষ আপডেট : ১৮ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড আগে
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

১৫ বিল ফের অভয়াশ্রম ঘোষণার দাবি : হাকালুকি হাওরের লুটপাটকারীদের বিচার চায় হাওরবাসী

খলিলুর রহমান ::

হাকালুকি হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় রাজস্ব খাতে হস্তান্তর করা ১৫টি বিলকে পুনরায় অভয়াশ্রম ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন হাওর তীরবর্তী এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। সেই সঙ্গে হাওরের উন্নয়নের নামে গত ১৫ বছরে যারা লুটপাট ও পরিবেশ ধ্বংসের সাথে জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি উঠেছে।

‘হাওর বাঁচাও কৃষক বাঁচাও’ এবং ‘হাকালুকি হাওর তীরের সচেতন নাগরিক সমাজ’ এ দাবি জানিয়ে বলেছেন, হাকালুকি হাওরকে বিশেষ উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় আনতে হবে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও বাস্তবে হাওরের পরিবেশ বা স্থানীয়দের জীবনমানের কোনো উন্নয়ন হয়নি।

বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলায় ৯টি স্থায়ী মৎস্য অভয়াশ্রম রয়েছে। এর মধ্যে বড়লেখায় ৫টি, শ্রীমঙ্গলে ১টি, কুলাউড়ায় ১টি এবং জুড়ীতে ২টি। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিস হাকালুকি হাওরের আরও ১১টি বিলকে নতুন করে অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবিত বিলগুলো হচ্ছে: মেদি বিল, পানি খাওয়া বিল, কছমা বিল, সিংকুড়ি বিল, শ্রীকষ্টি বিল, শশা বিল, মহিষমারা বিল, গৌড়কুড়ি বিল, হাওয়া বর্নী ফুট বিল, চাপড়া বিল ও ফাটা চাপড়া বিল।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু মাসুদ বলেন, “এই বিলগুলো অভয়াশ্রমে পরিণত হলে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, হাওরের ইকোসিস্টেম সুরক্ষিত থাকবে এবং দীর্ঘমেয়াদে এখান থেকে রপ্তানির জন্যও মাছ উৎপাদন সম্ভব হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিলগুলো খনন করে গভীরতা বাড়ানো, নিরাপত্তা জোরদার করাসহ মৌসুমভেদে মাছ ধরা বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে।”

২০০০-এর দশকে হাকালুকি হাওরের ২২টি বিলকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরে পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর ডিও লেটারে এসব বিলের মধ্যে ১৫টি রাজস্ব খাতে হস্তান্তর করা হয়। পরিবেশবাদীদের দাবি, তখন সরকারদলীয় লোকজন এসব বিলের ইজারা নিয়ে মাছ শিকার ও পরিবেশ ধ্বংসে লিপ্ত হন।

ভুকশিমইল ইউপি চেয়ারম্যান ও ‘হাওর তীরের সচেতন নাগরিক সমাজ’-এর প্রতিনিধি আজিজুর রহমান মনির বলেন, “সাবেক পরিবেশমন্ত্রীর লোকজন গত ১৫ বছরে হাওরে হরিলুট চালিয়েছে। তারা এখনো বিলের ইজারা ভোগ করছে। এসব বিল ফের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে কার্যকর রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।”

বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি তৌহিদুর রহমান বলেন, “অভয়াশ্রম বাড়লে শুধু মাছ নয়, অতিথি পাখির আগমনও বাড়বে। হাওরের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জন্য বিকল্প জীবিকার দরজাও খুলবে।”

মৎস্য কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দিন আফজল বলেন, “হাকালুকি হাওরের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। বাকি চার উপজেলার মৎস্য বিভাগও যদি এগিয়ে আসে, তাহলে হাওরে ৫০টির বেশি অভয়াশ্রম গড়ে তোলা সম্ভব। তখন এ হাওর দেশের মাছ রপ্তানির অন্যতম কেন্দ্র হতে পারে।”

হাকালুকি হাওরের বিলগুলোকে পুনরায় অভয়াশ্রমে পরিণত করা এবং লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে পরিবেশ রক্ষা ও হাওরবাসীর জীবনমান উন্নয়নের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হাওরের টেকসই উন্নয়নের জন্য এখন প্রয়োজন কার্যকর ও দূরদর্শী উদ্যোগ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: