cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক:: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছে। এর মধ্যে শিশু প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বেশি। গর্ভকালীন মায়েদের অসচেতনতা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও পুষ্টিহীনতার কারণে এ গ্রামে প্রতিবন্ধী লোকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
জানা যায়, ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম আমতৈল। এখানে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ মৎস্যজীবী। উপজেলা সদর থেকে আমতৈল গ্রামের দূরত্ব প্রায় ছয় কিলোমিটার। এ গ্রামে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত হাজার। লোকসংখ্যা ২৫ হাজারেরও বেশি। চারপাশের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে এ গ্রামের মানুষের রোগব্যাধি নিত্যসঙ্গী।
মৌসুমী বেগম। বয়স ১৮ হলেও বাস্তবে দেখে বোঝার উপায় নেই। কোলে করে বাইরে না আনলে পৃথিবীর আলো দেখার ক্ষমতাও নেই তার। জন্ম থেকেই তিনি বিকলাঙ্গ।
পাশের বাড়ির ১৩ বছরের সামিয়ারা। জন্ম থেকে একবারো বসার ভাগ্য হয়নি তার। ছোটবেলায় দু-একবার চিকিৎসকের কাছে নিয়েছেন বাবা। কিন্তু চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের পাশে ‘নিয়মিত চলবে’ লেখাটি পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। অভাবের সংসারে ওষুধ আর খাওয়া হয়নি।
মৌসুমী কিংবা সামিয়ারা নয় গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিশুই এমন প্রতিবন্ধী। তাদের বেশিরভাগই জন্ম থেকে। এ চিত্র সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউপির আমতৈল গ্রামের। এ গ্রামে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসতি। অনেকের কাছে ‘প্রতিবন্ধীর গ্রাম’ হিসেবেও পরিচিত।
উপজেলা শহর থেকে ছয় কিলোমিটার ও সিলেট শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটির অবস্থান। যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভালো থাকা সত্ত্বেও এ গ্রামে আজও উন্নয়নের ছোঁয়া মেলেনি। শহরের বস্তিবাসীর চেয়েও আরো নোংরা পরিবেশে তাদের বসবাস। এখনো খোলা শৌচাগার ব্যবহার করেন বেশিরভাগ মানুষ। স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা থেকে গ্রামের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ বঞ্চিত। নেই শিক্ষার ছোঁয়াও। রয়েছে সামজিক সচেতনতার অভাব। প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে অধিক সন্তান।
বিশেষজ্ঞরা জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে প্রতিনিয়ত ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সের মানুষ। বিশেষ করে গর্ভবতীরা অপুষ্টি, অসচেতনতা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকায় প্রতিবন্ধী শিশু জন্মের মৌলিক কারণ হতে পারে।
প্রতিবন্ধী মৌসুমীর বাবা আব্দুল মতিন বলেন, মানুষের বাড়িতে শুঁটকি বিক্রি করে সংসার চালাই। প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে বিপদে আছি। অনেক চেষ্টা করেও প্রতিবন্ধী ভাতা পাইনি। অনেকে আমাদের এলাকায় এসে সাহায্যের আশা দেখিয়ে চলে যান।
মৌসুমীর ফুফু বলেন, ইউপি সদস্যকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য বলেছি। তিনি এক হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু এক হাজার টাকা জোগাড় করতে পারিনি বলে কার্ডও পাইনি।
একই গ্রামের ১৪ বছরের কিশোরী আছিয়া বেগম বলেন, মাদরাসায় ভর্তি হয়েছি। কিন্তু ভালো করে হাঁটতে না পারায় আর যেতে পারিনি। কয়েকবার চিকিৎসকের কাছে গিয়েছি। ডাক্তার বলেছে দীর্ঘদিন ওষুধ খেলে কমতে পারে। কিন্তু টাকার অভাবে পুরোপুরি চিকিৎসা করাতে পারিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা অটোচালক শায়েস্তা মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামে দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা করালে হয়তো অনেকে ভালো হতো। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ হতদরিদ্র। তাদের পক্ষে চিকিৎসা চালানো সম্ভব না। এখন থেকে উদ্যোগ নেয়া হলে আগামী প্রজন্মকে ভালো রাখা যাবে।
ইউপি সদস্য মো. আবুল খায়ের বলেন, মূলত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে গ্রামের মানুষের রোগবালাই কমছে না। ফলে বেশিরভাগ বাড়িতে প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হচ্ছে। শিক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু বরাদ্দ কম থাকায় সব পরিবারে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বেশিরভাগ প্রতিবন্ধীকে ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ মৎস্য পেশায় নিয়োজিত থাকায় তারা সচেতন নয়। ফলে প্রত্যেক পরিবারে অন্তত পাঁচজন করে ছেলে-মেয়ে রয়েছে। কোনো কোনো পরিবারে আরো বেশি রয়েছে। এসব কারণে জনসংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি রোগবালাইও বাড়ছে।
ইউপি চেয়্যারম্যান অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন, আমতৈল গ্রামটি খুব অপরিচ্ছন্ন। গ্রামের মানুষের শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেন, এ উপজেলায় শুধু একটি গ্রামেই প্রতিবন্ধী নয়। পুরো উপজেলায় সাড়ে চার হাজার প্রতিবন্ধী রয়েছে। সবার জন্য কাজ করছি। বিশেষ করে কোনো গ্রাম নিয়ে কাজ করা সম্ভব না।
তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা দিতে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হয়েছে।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম বলেন, একই গ্রামে এতো প্রতিবন্ধী হওয়ার কথা না। সবগুলো শিশু প্রতিবন্ধী না হয়ে অটিজমও হতে পারে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে ওই এলাকার রিপোর্ট সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।