ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

সিলেটের ৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। বিশ্বনাথের পাঁচটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে ২টিতে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী, একটিতে স্বতন্ত্রের ব্যানারে বিএনপি নেতা ও অপর দুটিতে স্বতন্ত্রপ্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্রপ্রার্থী বিজয় হয়েছে। এখানেও হেরেছে নৌকা।

সোমবার (১৭ জুলাই) বিশ্বনাথের পাঁচটি এবং জকিগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

৩ নম্বর অলংকারী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান লিটন। ঘোড়া প্রতীকে ৪ হাজার ৭২৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী তাজ্জুল ইসলাম মাইকেল নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭৩৪ ভোট।

৪ নম্বর রামপাশা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইমাম উদ্দিন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা বশির আহমদ চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৮০ ভোট। আর ১ হাজার ৫০৫ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরব আলী চতুর্থ হয়েছেন।

৫ নম্বর দৌলতপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা হাফিজ আরব খান। চশমা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ৮৯৭ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওয়াহাব আলী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৪৩৭ ভোট।

৬ নম্বর সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. দয়াল উদ্দিন তালুকদার। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল জলিল হিরণ মিয়া নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ২৮০ ভোট।

৭ নম্বর দেওকলস ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আহমদ মতছিন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ৭০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও জামায়াত নেতা হোসাইন মোহাম্মদ আক্তার ফারুক চশমা প্রতীকে ২ হাজার ৩১৬ ভোট পেয়েছেন। আর নৌকা প্রতীক আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম জুয়েল পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫৭ ভোট।

বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম সারওয়ার জানান, এর আগে সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়। পাঁচ ইউনিয়নের ৪৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ২৫৯ জন প্রার্থী।

অপরদিকে, সিলেটের জকিগঞ্জের কসকনকপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী আব্দুস সাত্তার মঈন। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ১৫৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হোসাইন আহমদ লস্কর আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৩ ভোট। আর চশমা প্রতীকে শামীম আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৩৮৮ ভোট। এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আফজল হোসেন পেয়েছেন মাত্র ২৬৩ ভোট ।

সোমবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রিপন হোসেন। এ ইউপিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৮০৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ৮২৭ এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৯৮২।

গত ৩০ মার্চ কসকনকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলতাফ হোসেন লস্কর মারা যান। পরে শূন্য পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

সংবাদটি শেয়ার করুন:

• ফেইসবুক
• টুইটার
• গুগল প্লাস
• ইমেইল