সর্বশেষ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

‘সিটিতে না গ্রামে থাহি হেইডাই কইতে পারি না’

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

‘শহরে থাহার লইগ্গা হগল ধরনের ট্যাক্স দেই, খাজনা দেই, পানির বিল দেই। অথচ মোগো কোনো সুযোগ সুবিধা দেয় না সিটি করপোরেশন। যুগের পর যুগ ধইররা এ রাস্তাডায় আডু হোমান পানি জুইম্মা থাহে, কিন্তু কেউ ঠিক হরার ব্যবস্থা হরে না।’

এভাবেই ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন বরিশাল নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ড রুপাতলী সোহরাব হাউজিংয়ের বাসিন্দা দুলাল হোসেন।

তিনি আরও বলেন, মেয়র আয় মেয়র যায়, কিন্তু রাস্তাডা কেউ মেরামত হরে না। এলাকার হগোলডি মিইল্লা কাউন্সিলরের ধারে মেলাদিন দৌড়াইছি। তাও কুনো লাভ অয় নাই।

সোহরাব হাউজিং এলাকার আরেক বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, নিয়মিত পানির বিল, সিটি কর পরিশোধ করি। অথচ বাস্তবতায় সিটির প্রায় সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এ এলাকার সবাই। স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে দীর্ঘ দিন রাস্তাটির জন্য গিয়েছি, কিন্তু প্রতিবারই শুধু প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরে এসেছি।

তিনি আরও বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে কোনো রিকশা বা গাড়ি এ সড়কে ঢুকতে চায় না। ‘অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অনুনয় বিনিময় করে রিকশাচালকদের আনতে হয়। শুকনো দিনেও রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। বর্ষায় সড়কটি খালে পরিণত হয়। সে সময় সড়কটি দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা নাসির বলেন, ‘সিটিতে থাহি না গ্রামে থাহি হেইডাই কইতে পারি না। একটা মাত্র রাস্তা এ এলাকার। এরপরও ভালো নাই। কেমনে মোরা রাস্তা দিয়া চলাফেরা হরি হে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’

নাসির আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশন দিয়া তিন-চারগুণ হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াইছে, হেই তুলনায় মোগো সেবা বাড়ায়নি। আগে যেই বাড়িতে ৭ হাজার টাহা ট্যাক্স দিছি, হেই বাড়িতে এহন ট্যাক্স দেই ২৫ হাজার টাহা। আগে যে বাড়িতে ১৫ হাজার টাহা ট্যাক্স নেছে হেই বাড়িতে এহন ট্যাক্স নেয় ৪০ হাজার টাহা। আগে একটা টিউবওয়েল ১৫০ টাহা ট্যাক্স দিতাম, এহন হেই টিউবয়লে ৪০০ টাহা ট্যাক্স দেই।

নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে দুটি সড়ক বাদে অন্য সকল সড়ক খানাখন্দে ভরা। এরমধ্যে মাওলানা ভাসানী সড়ক থেকে ফকির বাড়ি, আহম্মেদ মোল্লা সড়ক, সোহরাব হাউজিং, বটতলা হাইস্কুল থেকে কীর্তনখোলার পাড়, সামিট পাওয়ারের সামনে থেকে কীর্তনখোলা নদীর পাড়, আদর্শ সড়ক থেকে কাজী বাড়ি, মৃধা বাড়ি থেকে মিস্ত্রী বাড়ি সড়কগুলো চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী।

একটু বর্ষা এলেই হাঁটু সমান পানিতে ডুবে যায় এসব সড়ক। বর্ষা ছাড়াও সড়কে জমে থাকা পানিতে হাস সাতার কাটতে দেখা গেছে।

নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ড আদর্শ সড়কের বাসিন্দা অটোরিকশা চালক ইলিয়াস আলী বলেন, ‘প্রতিদিন রুপাতলী থেকে দপদপিয়া ফেরি ঘাট পর্যন্ত এই রোডে বহুবার যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু রাস্তার দুরবস্থার কারণে যা ইনকাম হয় তার অর্ধেক টাকা খরচ হয় গাড়ি মেরামত করতে। অটোচালকরা দীর্ঘদিন ধরে এই ভোগান্তির মধ্যে আছি। সড়কটি মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি’।

আদর্শ সড়কের বাসিন্দা শামীম বলেন, রুপাতলী মূল সড়ক থেকে আদর্শ সড়কের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দে ভরা। এই খানাখন্দের কারণে সড়কটি প্রায় চলাচলের অনুপযোগী। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় বর্ষাকালে এই দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে একাধিকবার জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।

২৫ নং ওয়ার্ডের গ্যাস্টারবাইন এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, গ্যাস্টারবাইন থেকে দপদপিয়া ফেরি ঘাট পর্যন্ত সড়কটি পুরাই চলাচলের অনুপযোগী। কোনো গাড়ি গেলে পুরা রাস্তাটি ধুলা বালিতে ভরে যায়। তাছাড়া রাস্তার পাশের বাড়িগুলো ধুলা বালিতে হলুদ হয়ে গেছে। এমন অবস্থা থেকে উক্ত এলাকাবাসীকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকির বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লার অনুসারী হওয়ায় এলাকার কোনো উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড না করলেও তার বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেননি। তবে সাদিক মনোনয়ন হারানোর পর এই কাউন্সিলরের বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন ওয়ার্ডবাসী।

অভিযোগ আছে, রুপাতলী এলাকায় নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে ওয়ার্ডবাসীর সেবার চেয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা মামলা নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী ২৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকির। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিপক্ষের লোকজনকে কুপিয়ে জখমেরও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় একাধিক মামলার আসামিও হয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকির জাগো নিউজকে বলেন, আমি কি জন্য উন্নয়ন করতে পারিনি তা বরিশালবাসী সবাই জানেন। এটার আর বক্তব্যের কিছু নেই। তবে আবার নির্বাচিত হতে পারলে সড়কগুলোর সংস্কার করবো। এসব সড়ক মেরামতের টেন্ডার হয়ে আছে।

শ্রমিক নেতাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তখন একটি গ্রুপিংয়ের কারণে মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। রুপাতলী বাস টার্মিনালে একটি ঝামেলা চলছিল। এছাড়া এলাকার কাউন্সিলর হিসেবে ওখানে আমার যাওয়া লাগে সেজন্য গিয়েছিলাম। কুপিয়ে জখমের সময় উপস্থিত হলেও এর সঙ্গে আমি জড়িত না।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: