সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সাঁতরে মসজিদে যাওয়া সেই ইমাম পেলেন নৌকা ও নগদ টাকা

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজে’লার ব’ন্যাদূর্গত প্রতাপনগর ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত হাওলাদার বাড়ি জামে ম’সজিদের ই’মামকে আর সাঁতরে ম’সজিদে যেতে হবেনা। তাকে নগদ অর্থের সাথে একটি নৌকা দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন পানি সাঁতরে ম’সজিদে যাতয়াতকারী সেই ই’মামকে সহায়তা প্রদান করেছে ডু সামথিং ফাউন্ডেশন।

স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রায় চারমাস অ’তিবাহিত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় আশাশুনি উপজে’লার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ফের ইয়াসের আ’ঘাত। সর্বশেষ ১০ সেপ্টেম্বর খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রতাপনগর গ্রামের মানিক হাওলাদারের বাড়ি সংলগ্ন জামে ম’সজিদের পাশের বিকল্প রিং বাঁধ ভেঙে ফের প্লাবিত হয় প্রতাপনগর, তালতলা, মাদারবাড়িয়া, কুড়িকাহনিয়া ও কল্যাণপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রতিদিন দুপুরে ও রাতের জোয়ারে নিয়ম করে পানিতে ভাসছে ওই পাঁচ গ্রামের মানুষ।

প্রতাপনগরের হাওলাদার বাড়ি জামে ম’সজিদের একেবার পাশের দুটিসহ আশপাশের ১৫/২০টি ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। তবু ম’সজিদ চালু রাখতে ম’সজিদের ই’মাম হাফেজ মইনুর রহমান প্রতিদিন পাঁচবার সাঁতরে ম’সজিদে গিয়ে আজান ও নামাজ আদায় করেন। অন্য ওয়াক্তে অনেকে না যেতে পারলেও জুমা’র দিন মু’সল্লিরা ক’ষ্ট করে হলেও ম’সজিদে নামাজ আদায় করেন। কখনও কখনও ই’মাম মইনুর রহমান ম’সজিদের ভেতরেই থেকে যান।

আবার যখন ম’সজিদের ভেতরে পানি উঠে যায় তখন ম’সজিদের ছাদে রাত্রিযাপন করেন বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় ম’সজিদের ই’মাম সাহেব সাঁতরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাওয়া-আসা করেন এমন একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাই’রাল হয়।

মানবিক সংগঠন হিউম্যানিটি ফার্স্টের অ্যাডমিন ও ভিডিও ধারণকারী প্রভাষক ইদ্রিস আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান থেকে এই এলাকার মানুষ জোয়ার ভাটায় বসবাস করছে। তাদের যে কী’ ক’ষ্ট, সেটা চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বা’স করবে না। আমি সাতক্ষীরা এলাকায় ফিরলে প্রতাপনগরের বিভিন্ন এলাকায় কী’ অবস্থা দেখতে যাই। ওইদিন দূর থেকে দেখি একজন সাঁতরে আসছে, কৌতুহলবসত ভিডিও ধারণ করি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের প্রোফাইলে আপলোড দিলে মুহূর্তেই কয়েক লাখ ভিউ হয়। ভিডিও দেখে অনেকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।

এর মধ্যে চিকিৎসকের একটি সংগঠন ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’ এগিয়ে আসে। মানবিক সংগঠন হিউম্যানিটি ফার্স্টের মাধ্যমে ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ই’মাম হাফেজ মইনুর ইস’লামের হাতে নগদ অর্থ ও নৌকা তুলে দেওয়া হয়। বেড়িবাঁধ নির্মাণ হলে ঘর নির্মাণ এবং ই’মামতির পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান করে দেওয়ার আশ্বা’স দেন সংগঠনটির সদস্যরা।

হাওলাদার বাড়ি জামে ম’সজিদের ই’মাম হাফেজ মইনুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে আছে আমা’র এলাকা। নদীর জোয়ার-ভাটায় আম’রা ডুবি-ভাসি। জোয়ার থাকলে সাঁতরে ম’সজিদে যেতে হয়। ওইদিন জুমা’র দিন ছিল, আমি সাঁতরে ম’সজিদে যাওয়ার সময় প্রভাষক ইদ্রিস আলী ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেই ভিডিও দেখে একটি সংগঠন আমা’র জন্য নৌকা কিনে দিয়েছে। আলহাম’দুলিল্লাহ আমি এবং মু’সুল্লিরা ওই নৌকায় করে ম’সজিদে যাচ্ছি। আরও অনেকে আমাদের পাশে থাকার আশ্বা’স দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমা’র ম’সজিদের আশপাশে অনেক বাড়িঘর ও কবরস্থান ছিল, সব বিলীন হয়ে গেছে। গত দুইদিন আগে ম’সজিদের বারান্দাও ভেঙে গেছে। এখন শুধুমাত্র ম’সজিদটি টিকে আছে। কত সময় থাকবে জানি না। তবে ম’সজিদটি যেন টিকে থাকে সবাই দোয়া করবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: