সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

আলোর মুখ দেখছে ঢাকা- সিলেট ৪ লেন মহাসড়ক প্রকল্প

ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প অনুমোদনের প্রায় দুই মাসের মাথায় ভৌত কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ২১০ কিলোমিটার মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ ১৩টি অংশে ভাগ করে করা হবে। এর মধ্যে ঢাকার কাঁচপুর থেকে নরসিংদীর বিসিক অংশ পর্যন্ত উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। একে একে এভাবে সব অংশের কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।

প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক- এডিবি। বাকি অর্থের জোগান হবে সরকারি তহবিল থেকে। সূত্র জানায়, সওজ অধিদপ্তর এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিকাদার নিয়োগের জন্য নথিপত্র এডিবির ম্যানিলার প্রধান দপ্তরে পাঠানোর পর সংস্থাটির অনুমোদন নিয়ে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।

সওজ অধিদপ্তরের প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ঠিকাদার নিয়োগ চূড়ান্ত করতে কমপক্ষে আট মাস সময় লেগে যাবে। আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে প্রকল্পের ভৌত কাজ শুরু হবে। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেটে অধিগ্রহণের কাজ চলছে। তবে, সিলেট ও হবিগঞ্জে ‘প্রক্রিয়াগত জটিলতা’র মুখে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।

প্রক্রিয়া সংক্রান্ত জটিলতায় ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। এতে ব্যয় বেড়েছে। ২০১৭ সালে চীনা প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিতে চেয়েছিল। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। চীনাদের শর্ত মানা হয়নি এবং তাদের প্রস্তাবও নেওয়া হয়নি। পরে প্রকল্প নেওয়া হলো এডিবির সহায়তায়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াল প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকায়।

জানা যায়, সিলেট- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন ২০১৬ সালে। এরপর থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে সিলেটবাসীকে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দেন। তার মতে, এটি তার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) স্বপ্নের প্রকল্প। প্রকল্পের অগ্রগতি কেমন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে প্রকল্প পরিচালককে ডেকে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি (প্রকল্প পরিচালক) বলেছেন, ঢাকাপ্রান্ত থেকে জোরেশোরে কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। নারায়ণগঞ্জসহ পাশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সিলেট থেকে তামাবিল অংশের মহাসড়ক উন্নয়নের জন্য আরও একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে তামাবিল পর্যন্ত মহাসড়কের উন্নয়ন হচ্ছে।

ড. মোমেন বলেন, ‘প্রক্রিয়া সংক্রান্ত জটিলতায় ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। এতে ব্যয় বেড়েছে। ২০১৭ সালে চীনা প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিতে চেয়েছিল। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। চীনাদের শর্ত মানা হয়নি এবং তাদের প্রস্তাবও নেওয়া হয়নি। পরে প্রকল্প নেওয়া হলো এডিবির সহায়তায়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াল প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকায়।’

‘সরকারের ৫৭৮টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে’Ñ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মেয়াদ বাড়লে ব্যয়ও বাড়ে। সঠিক সময়ে সুফল পাওয়া যায় না। তবে আমি আশা করব, এখানে এ ধরনের কিছু হবে না। প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, ভৌত কাজ দ্রুত সময়ে শুরু হবে। ঢাকাপ্রান্ত থেকে এটি শুরু হবে। সিলেটপ্রান্তে ভূমি অধিগ্রহণের কাজে প্রক্রিয়াগত জটিলতা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্ট নির্ধারণ হয়েছে। তবে কোনো এক পক্ষ এ মহাসড়ক সুনামগঞ্জ পর্যন্ত নেওয়ার প্রস্তাব তুলেছে। এ ধরনের বিক্ষিপ্ত উদ্যোগে প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হতে পারে।

মেয়াদ বাড়লে ব্যয়ও বাড়ে। সঠিক সময়ে সুফল পাওয়া যায় না। তবে আমি আশা করব, এখানে এ ধরনের কিছু হবে না। প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, ভৌত কাজ দ্রুত সময়ে শুরু হবে। ঢাকাপ্রান্ত থেকে এটি শুরু হবে। সিলেটপ্রান্তে ভূমি অধিগ্রহণের কাজে প্রক্রিয়াগত জটিলতা চলছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সওজ অধিদপ্তর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেটের পীর হাবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২১০ কিলোমিটার। প্রকল্পের উপ-পরিচালক রোকনুজ্জামান জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি একনেকে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায় ১১ মার্চ। এখন পর্যন্ত ৪৬ পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১১ জন। ১৩টির মধ্যে দুটা অংশের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য গত ২৮ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে আবেদন জানাতে হবে ১২ জুনের মধ্যে। তবে করোনাকালীন পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে।

প্রকল্প কার্যালয় থেকে জানা গেছে, কাঁচপুর থেকে ছনপাড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এবং ছনপাড়া থেকে নরসিংদীর বিসিক পর্যন্ত (১৮ থেকে ৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত) অংশের কাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। আসছে অর্থবছর থেকে বরাদ্দ মিলবে।

প্রকল্পটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, সিলেট অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। কারণ, এখানে প্রবাসীদের অর্থ অলস পড়ে থাকে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে এখানে শিল্পকারখানাও গড়ে উঠবে। এ কারণে প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর করোনা সংক্রমণের কারণে এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার গতি থেমে যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: