সর্বশেষ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সিসিক ও লাফার্জহোলসিমের সফল উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ::

বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নগরায়ন ও জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির ফলে দৈনন্দিন বর্জ্যের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। পরিবেশ দূষণ এবং অপরিকল্পিত বর্জ্য ডাম্পিংয়ের কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ একত্রে এগিয়ে এসেছে একটি টেকসই সমাধান নিয়ে।

সিলেট সিটি করপোরেশন দেশের প্রথম সিটি করপোরেশন হিসেবে স্থাপন করেছে একটি আধুনিক ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি। প্রায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ফ্যাসিলিটি সিলেটের লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে অবস্থিত। প্রতিদিন প্রায় ৩৭৫ টন বর্জ্য ডাম্পিং করা হয় এই স্থানে, যা বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পুনঃব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হচ্ছে।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এ উদ্যোগে তাদের জিওসাইকেল প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। প্রতিদিন প্রায় ৬০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে সিলেট থেকে ছাতকের লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এটি ক্লিংকার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

২০২৪ সালের মে মাস থেকে এই ফ্যাসিলিটি পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করে। লাফার্জহোলসিমের সিনিয়র ম্যানেজার লতিফুর রহমান জানিয়েছেন, প্রতিদিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিমাণ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। জিওসাইকেল প্রযুক্তি দিয়ে বছরে প্রায় এক লাখ টন বর্জ্য পুনঃব্যবস্থা করা সম্ভব।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, “লাফার্জহোলসিমের সহায়তায় সিলেটকে একটি সবুজ নগরীতে রূপান্তর করার প্রচেষ্টা চলছে। এটি দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোর জন্য উদাহরণ হতে পারে।”

এশিয়া ইউরোপ ফাউন্ডেশনের গবেষণা অনুসারে, বাংলাদেশে শহুরে বর্জ্যের পরিমাণ প্রতি ১৫ বছরে দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে এর প্রায় ৫৫% যেখানে-সেখানে ফেলা হয়, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সিলেট সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে সঠিক পরিকল্পনা ও আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্ভব।

সাবেক মেয়র আরিফুল ইসলাম জানান, “সিলেটের এই উদ্যোগ টেকসই উন্নয়নের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সহযোগিতা পেলে এটি আরও কার্যকর হবে।”

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ইতিমধ্যে সিলেটের এই ফ্যাসিলিটি পরিদর্শন করেছে এবং একসাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

লাফার্জহোলসিমের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বর্জ্যবিহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এই প্রযুক্তি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে দিতে আমরা প্রস্তুত।”

সিলেট সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে, সঠিক পদক্ষেপ ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এটি একটি সবুজ বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: