সর্বশেষ আপডেট : ৯ মিনিট ১২ সেকেন্ড আগে
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

জোরপূর্বক ডিভোর্স নিতে চাইছেন শশুরবাড়ির লোকজন : সংবাদ সম্মেলন যুবকের অভিযোগ

জোরপূর্বক ডিভোর্স নিতে চাইছেন শশুরবাড়ির লোকজন। এতে রাজি না হওয়ায় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে থানা ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সিলেটের খাদিমপাড়া ইউনিয়নের এক যুবক। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের সুরমা গেইট বাইপাস এলাকার কাজল মল্লিকের ছেলে উজ্জল মল্লিক।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার গ্রামের বাসিন্দা নিলুৎপল তালুকদার নীলুর মেয়ে সিলেট এমসি কলেজের ইংরেজি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণী তালুকদার নীতি আমার বিবাহিত স্ত্রী। তিনি সিলেটের একটি অনলাইন টেলিভিশনে সংবাদ পাঠিকা হিসেবেও কাজ করছেন। আমার স্ত্রীকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজন এক নোংরা খেলায় মেতে উঠেছেন। তারা আমাকে প্রতিনিয়ত নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে ডিভোর্স নিয়ে নিতে চান।’

পেশায় মিউজিশিয়ান উজ্জল বলেন, ‘শ্রাবণী তালুকদার নীতির সঙ্গে ২০১৭ সালে ফেইসবুকের মাধ্যমে আমার পরিচয় হয়। এরপর থেকে মাঝেমধ্যে কথাবার্তা ও আড্ডায় যোগাযোগ বাড়ে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সম্পর্ক গভীর হয়। সে আমার বাসায় একাধিকবার বেড়াতে গিয়েছিল। পরিবারের সদস্য এমনকি আমার বন্ধুদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক। আমাদের যৌথ ছবি এবং আমার পরিবারের সঙ্গে তোলা ছবি সে নিজের ফেইসবুক আইডিতে আপলোড দিয়েছে। ফলে, আমার ঘনিষ্টজনরা আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে জেনে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা সময় শ্রাবণীই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তার এমন প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে যাই এবং গত ৭ এপ্রিল সিলেট জজকোর্টে আমরা অ্যাফিডেভিট সম্পন্ন করি। পরে ১০ এপ্রিল শ্রীমঙ্গল মঙ্গলেশ্বরী কালিমন্দরে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। পরবর্তীতে ১২ এপ্রিল আমাদের বিয়ের নিবন্ধন হয়।’ উজ্জল মল্লিক বলেন, ‘দুজনেই প্রথমদিকে পরিবারকে বিয়ের কথা জানাতে চাইনি। পরে আমি আমার বাবা-মার কাছে তাকে নিয়ে যাই এবং তাদের অজান্তে বিয়ে করার জন্য ক্ষমা চাই। আমার মা-বাবা আমাকে ক্ষমা করে ঘরে নেন এবং আমরা সংসার করতে থাকি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু পরিবারকে আগামী দুই বছর জানাবে না বলে সে আমাকে জানায়। এ জন্য সে মেসে থাকত।’ গত জুন মাসের মাঝামাঝি শ্রাবণী গ্রামের বাড়িতে গেলে বিষয়টি ঘোলাটে হয় বলে জানান উজ্জল। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে যাওয়ার পর বিয়ের কথা তার বাড়ির সবাই জানতে পারেন এবং তাকে মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। ফোনে সে আমাকে এসব জানায় এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।’

উজ্জল মল্লিক আরও বলেন, ‘বাড়ি থেকে ফিরলে তার মধ্যে নানা পরিবর্তন দেখতে পাই। কিছুতেই সে স্বাভাবিক হতে পারছিল না। আমি শ্রাবণীর বড় ভাই নির্বেন্দু তালুকদার নিয়মকে মোবাইলে বিষয়টি অবগত করি। নিবেন্দু বিস্তারিত শুনে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেনÑ যেহেতু এখন সে তোমার স্ত্রী তাই তুমি যা ভালো মনে কর করতে পারো।’
মল্লিক আরও বলেন, ‘নীতির ভাই আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অপারগতা প্রকাশের পর রাত ১০টার দিকে চাচাতো ভাই সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বিজিত তালুকদার ফোন করে বলেনÑ তুমি আপাতত নীতিকে তার মেসে দিয়ে আসো। তোমাদের বিষয়টি আমি সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছি।’

উজ্জল অভিযোগ করেন, গত ২৬ জুন বিজিত তালুকদার আমার স্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে চান। তার কথামতো স্ত্রীকে নিয়ে জিন্দাবাজারে নিয়ে গেলে বোনের সঙ্গে একা দেখা করতে বলেন বিজিত। ৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পর নীতিকে কল দিয়ে তিনি নিজের নম্বর অফলাইন ও অনলাইন ব্লক দেখতে পান। একইসঙ্গে ফেইসবুকে ব্লক করে উজ্জল-নীতির যৌথ ছবিগুলোও ডিলেট করে দেন বিজিত। উজ্জল মল্লিক আরও জানান, ওইদিনের পর থেকে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। একদিন হঠাৎ আনব্লক করে স্ত্রী শ্রাবণী তাকে কল দিয়ে বলেÑ তুমি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও। না হলে তোমার সমস্যা হবে। সে সময় পরিবারের লোকজনের সামনেই আমাকে কল দিয়েছে সেটি বুঝতে পারেন তিনি।
তিনি পরবর্তীতে কোনোভাবেই স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পেরে এসএমপির শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি করার পর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে মেরে ফেলার এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার। তিনি বলেন, ‘আমি বাধ্য হয়ে নীতির কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। তারা আমাদের বিয়ে মেনে নিতে না পেরে আমার স্ত্রীকে আমার ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য ও প্রলোভন দেখিয়ে প্রভাবিত করেছেন।’

শশুরবাড়ির লোকজন স্ত্রী শ্রাবণী তালুকদার নীতিকে অন্যত্র বিয়ে দিতে চাইছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে চেয়ে গত ১৭ আগস্ট সিলেটের সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হিন্দু ধর্মে ডিভোর্সের কোন বিধান নেই। কিছু যৌক্তিক কারণ প্রমাণ করলে আলাদা হওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন আদালত। তবে সেক্ষেত্রে বিয়েটা বলবৎ থাকে। তাই অন্যাত্র বিয়ে করাটা আইনগত ও ধর্মীয়ভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ তিনি এসব ঘটনার পেছনে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিজের স্ত্রীকে যথাযথ মর্যাদায় তার নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানান। বিজ্ঞপ্তি

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: