cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
‘শুনলাম কুয়েতের টাকার মান অনেক বেশি। দেশের যে পরিস্থিতি তাতে তো কিছুই করতে পারবো না। তাই আর দেরি না করে ২০১৫ সালে সাড়ে ৭ লাখ টাকা খরচ করে কুয়েত এসে পড়লাম। ভিসার যে এতো ধরন আছে সেটা তখনও বুঝতাম না। ভাবছিলাম ভিসা তো ভিসাই। কিন্তু কুয়েতে আসার পর জানতে পারলাম, যে কাজের জন্য ভিসা নিয়েছি সে কাজ ছাড়া অন্য কাজ করতে পারবো না। এভাবে কাজ করতে গেলেই ধরে দেশে পাঠিয়ে দেবে।’। আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন কুয়েত প্রবাসী, কুমিল্লার লাল মিয়া (ছদ্মনাম)।
পাঁচ বছর ধরে তিনি কুয়েতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তাও আবার মরুভূমিতে। ভোর ৫টায় খাওয়ার পানি নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান, বিকেল ৫টায় কাজ শেষ করে আবার বাসায়। সারাদিন উত্তপ্ত মরুভূমিতে দিন পার করতে হয় তাকে। দুপুরের খাওয়াটা কখনও বাসায় এসে খেয়ে যান, আবার কখনও কর্মস্থলে খেয়ে নেন। ময়লা জিনিস থেকে ভাঙারি খোঁজা তার কাজ।
লাল মিয়া আখুদ ভিসায় কুয়েত যান। যাওয়ার পর চারমাসেও কোনো কাজ পাননি। এয়ারপোর্টে নামার পর ভিসার দালালেরও কোনো খবর নাই। কোম্পানি ব্রাকে (আবাসস্থল) বসায় রাখেন। এরপর মাত্র ৭৫ দিনার (২১ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করলেন। তিন বছর এভাবেই চলছিল। এরপর জানতে পারেন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি শেষ। নতুন চুক্তি নবায়নের জন্য আরও ৮৯ হাজার টাকা দিতে হবে।
‘কুয়েতের নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু আখুদ ভিসায় এসে অন্য কোনো ভিসায় কাজ করা অপরাধ। চাইলেই যে কোথাও কাজ করতে পারবে না। কিন্তু এভাবে তো তার চলা সম্ভব না। এতোগুলো টাকার চিন্তা মাথায়। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন অবৈধভাবেই থাকবেন।
লাল মিয়া বলেন, তিন বছর কোম্পানির কাছে থেকে ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। এতো অল্প বেতনে নিজের খরচ বাদ দিয়ে আর থাকেই বা কি?
তিনি বলেন, প্রতিবছর আবার আকামার জন্য টাকা দেওয়া লাগতো মালিককে। প্রতি বছরের জন্য প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। ৩ বছর শেষ হলে আবার চুক্তি নবায়ন। এদিকে, আমার পরিবার চালাতে হবে সেই চিন্তাও মাথায় ঘুরপাক খায়। শত কষ্টের মাঝেও এসব স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। তাহলে তারা আমার চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবে।
কোম্পানি থেকে বের হয়ে এভাবে অবৈধ জীবন পার করছেন লাল মিয়া। আকামা, পাসপোর্ট কিছুই নেই। সিভিল আইডি ছাড়া তো কুয়েতে চলাফেরা করা নিষেধ। ধরতে পারলেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে তাকে। পাঁচটি বছর এই মরুভূমি থেকে বের হতে পারেন না। চাইলেই কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন না। সারাক্ষণ পুলিশের ভয় তার মাথায় কাজ করে। তিনি বলেন, পুলিশ যদি একবার ধরতে পারে তখন তো একেবারে দেশে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এতোগুলো টাকা দিয়ে এসে যদি কিছুই না করতে পারেন তাহলে এই প্রবাস জীবন তো বৃথা।
লাল মিয়া বলেন, ‘আমার মত এখানে আরও ১০০ জনের বেশি প্রবাসী অবৈধভাবে কাজ করেন। তারাও আমার মতো ভুক্তভোগী। তাদের কারও বয়স ৩০ বছরের বেশি হয়ে গেলেও এখনও বিয়ে করতে পারেন নাই। বিয়ে করার জন্য দেশে গেলে তো আর আসতে পারবে না। কারও আবার মা-বাবা মারা গেছেন কিন্তু শেষ দেখাটা দেখার সুযোগ হয় নাই। আমার সন্তান যখন আমাকে বলে দেশে কখন যাবো? তখন তাদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘কান্না আসলেও চেপে রাখি। এমন দুর্ভাগা আমরা। নিজের জায়গা জমি বিক্রি করে বিদেশ আসছি, কিন্তু ভাগ্যের চাকা আর ঘুরলো না। সরকার রেমিট্যান্স রেমিট্যান্স করে কিন্তু অবৈধ হওয়ার পর আমরা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া রেমিট্যান্স কীভাবে পাঠাবো সেটা একবারও ভাবে না।’
কুয়েতের পুলিশ বর্তমানে অবৈধ প্রবাসীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গত চার মাসে ১১ হাজার প্রবাসীকে কুয়েত থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে দেশটির প্রশাসন। লাল মিয়ার মতো হাজারো প্রাবাসী এভাবে অবৈধভাবে দিন যাপন করছেন কুয়েতে। কেউ অপেক্ষা করছেন সাধারণ ক্ষমা করবে দেশটির সরকার সেই আশায়। আবার কেউ দিন গুনছেন আরেকটু টাকা পয়সা হলে দেশে যাওয়ার। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের এই বোবাকান্না কি শুনতে পায় প্রিয় বাংলাদেশ?