cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
এমজেএইচ জামিল ::
হাল চাষ ও বোরো মওসুমের চারারোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের কৃষক। কিন্তু নদ-নদী ও খালবিলের পানি দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ সংকটে উদ্বিগ্ন হাওরপারের অধিকাংশ কৃষক। মওসুমের আগেই বিল সেচে ও হাওরের বাঁধ কেটে মাছ ধরায় সেচ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কৃষকরা বলছেন, পানির অভাবে হালচাষ ও চারা রোপণ করতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাজেট না থাকায় কৃষকের সেচের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না তারা। সুনামগঞ্জের দেখার হাওর, সাংহাই হাওর সহ অধিকাংশ বড় হাওরে পর্যাপ্ত পানি ছাড়াই শুষ্ক জমিতে হালচাষ করছেন কৃষক। ফলে পানির অভাবে জমিতে পর্যাপ্ত কাদা তৈরি হচ্ছে না। হাওরের উঁচু জমির আশপাশ পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। কিছু জায়গায় পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। কৃষকরা দীর্ঘ ফিতা পাইপ দিয়ে কোনোরকমে জমি ভিজিয়ে হালচাষের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।
কৃষকরা জানান, এবছর এমনিতে বন্যার পানি দেরিতে নেমেছে। একই সাথে মওসুমের শুরুতেই শুকিয়ে গেছে জমির পানি। অসময়ে দ্রুত হাওরের পানি কমে যাওয়ায় জলাশয় ও খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। সেচ সংকটের কারণে জমি হালচাষ করতে না পারায় বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন না কৃষকরা। মওসুমের শুরুতে পানি সরে যাওয়ার চিত্র শুধু দেখার হাওর ও কিংবা সাংহাই হাওরই নয়, জেলার হালির হাওর, শনির হাওর, পাকনার হাওর, করচার হাওর, ছায়ার হাওর, নলুয়ার হাওরের ও মাটিয়ান হাওরসহ বড় বড় সব হাওরের উঁচু জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, জামালগঞ্জ, দিরাই, জগন্নাথপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজারসহ জেলার ৮টি উপজেলার হাজার হাজার কৃষক বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের কৃষক নুর মিয়া বলেন, গেলো বার থেকে এবার হাওরের উঁচু জমির পানি দ্রুত নেমেছে। কোনমতে কষ্ট করে হালচাষ করে চারা রোপণ করছি। কিন্তু পানি সেচ দিতে না পারলে ফলন নিয়ে শঙ্কা থেকে যাবে। নদীর পানিও শুকিয়ে গেছে।
ছাতক উপজেলার বড়কাপন গ্রামের দেখার হাওরের কৃষক ফরহাস মিয়া বলেন, গতবার পৌষ মাস পর্যন্ত জমিতে পানি ছিল। কিন্তু এবার অগ্রহায়ণের শেষভাগেই জমির পানি নেমে গেছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের কৃষক আমজাদ আলী বলেন, একদিকে দেরিতে পানি নামায় সময় মতো বীজতলা তৈরী করা সম্ভব হয়নি। এখন আবার চারা রোপণ শুরুর আগেই পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এবার বোরো ধানের কি হবে তা আল্লাহপাকই ভালো জানেন।
সদর উপজেলার আমবাড়ী এলাকার কৃষক রশীদ মিয়া বলেন, এ বছর দেখার হাওরের তীব্র সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। হাওরের উঁচু জমি পানি শূন্যহয়ে পড়েছে। কোনোরকমে হালচাষ দিয়ে চারা রোপণ করতে পারলেও পরে আর পানি পাওয়া যাবে না।
জানা গেছে, এবার ভারত থেকে বন্যার পানিতে আসা বালি ও পাথরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার কৃষি জমি। হাওরের ফসলি জমিতেও এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। শুধু তাই নয়, হাওর ও নদীর তলদেশে পলি ভরাটে পানির ধারণক্ষমতা কমে যাওয়ায় ভারতের মেঘালয়ে একদিনের বৃষ্টিতে এ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয় বলে মনে করছে পরিবেশ ও হাওর নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। জেলার অনেক হাওর ইতোমধ্যেই ভরাট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষক।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় সোয়া দুই লাখ হেক্টর বোরো ধান, ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন, ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ হয়। কিন্তু এবারের বন্যায় আউশ ধানচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারত থেকে আসা বন্যার পানির সঙ্গে বালি ও পলিমাটিতে ভরাট হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং এবং সুরমা ইউনিয়নে দুই থেকে আড়াইশ হেক্টর, দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর, দোহালিয়া, বোগলা বাজার, সুরমা, নরসিংপুর, পান্ডারগাঁও, বাংলাবাজার ও মান্নারগাঁওসহ আটটি ইউনিয়নে একশ আট হেক্টর জমি। তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকার ছড়া দিয়ে ভারত থেকে নেমে আসা বালি ও পাথরেও অনেক কৃষি জমি, বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় বালু এবং পাথরে ভরাট হয়ে কৃষি জমি এখন শুকনো মাঠে পরিণত হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, এবার মওসুমের শুরুতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এখনো হাওরে ১০ ভাগ জমিতেও ধান চাষ হয়নি। অথচ শান্তিগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ হাওরে পানি শুকিয়ে গেছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার ফলে মওসুমের শুরুতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এবার বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুবা, শুধু শান্তিগঞ্জ উপজেলা নয়, বৃহত্তর সুনামগঞ্জ জেলার বিশাল কৃষি জমি ফলনের হুমকীতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ জেলার উপ-পরিচালক বিমল চন্দ সোম বলেন, গত বারের চেয়ে এবার ৪ দিন আগে পানি নেমেছে। তবে এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোন সমস্যা হবে বলে আমরা মনে করছিনা। বিল সেচে মাছ ধরা জনিত কারণে সদর উপজেলার দেখার হাওরের কিছু অংশ সেচ সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। আমরা ইতোমধ্যে সেটা সমাধান করেছি। উপজেলায় ৫টি সেচ পাম্প বসানো হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় সেচ সঙ্কট দেখা দেয়ার কোন শঙ্কা নেই। এরপরও জেলার কোন এলাকায় সেচ সঙ্কট দেখা দিলে কৃষি বিভাগের লোকজন সেচের ব্যবস্থা করতে তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, চলতি মওসুমে সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ হয়ে গেছে। যা মোট জমির ১০ ভাগের কম। সোমবার বৃষ্টি হওয়ায় জমির অনেক উপকার হবে। এছাড়া জেলায় ২৪ হাজার হেক্টর জমি আছে যা পুরোপুরি বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল। সুতরাং সেচ জনিত কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তেমন সমস্যা হবেনা। যে কোন সঙ্কটে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পাশে রয়েছে।