সর্বশেষ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

রাস্তায় বসে কাঁদছিলো বৃদ্ধা: গাড়ীতে তুলে নিলেন ইউএনও

বিধবা সমলা বেগম। বয়স আশির্ধ। চামড়ায় কুচ ধরে গেছে তার। প্রায় সময় তার দিন কাটে অনাহারে-অর্ধাহারে। কোন উপায়ন্তর নাই তার। অভাবের তাড়নায় দুই ছেলেও দেখভাল করে না বৃদ্ধা মাকে। বিধবা বৃদ্ধা সমলা বেগম উপজেলার খৈলকুড়া গ্রামের মৃত ছোবহানের স্ত্রী। তার এক ছেলে ঝালমুড়ি বিক্রেতা ও অপরজন দিনমজুর এবং এক মেয়ে বিয়ে করে সংসার করছেন স্বামীর বাড়িতে।

মানুষের সাহায্যে জীবনটাকে কোন রকমে বেঁচে রেখেছে। এখন বয়সের ভারে পারেন না কাজ করতে। এক সময় মানুষের বাড়িতে আর ধানের খলায় কাজ করতো সে। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকে না। নানা দুভোর্গে কোন রকমে দিন কাটছে তার।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়কের খৈলকুড়া এলাকায় রাস্তার পাশে বসে কাঁদছিলেন তিনি।

ওইসময় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের করোনা টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করে ফিরছিলেন ইউএনও ফারুক আল মাসুদ। রাস্তার পাশে বসে থাকা এক বৃদ্ধাকে দেখে, চালককে গাড়ি থামাতে বলেন ইউএনও।

পরে তিনি গাড়ি থেকে নেমে বৃদ্ধার কাছে এগিয়ে দেখেন বৃদ্ধা কাঁদছেন। কেন কাঁদছেন জানতে চাইলে, বিধবা বৃদ্ধা সমলা বেগম দুচোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, ‘ঘরে খাবার নাই। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। একটু সাহায্য পাওয়ার আশায় বসে আছি।’

বৃদ্ধার আর্তনাদ শুনে ইউএনও তার গাড়িতে তোলেন তাকে। পরে ইউএনও’র গাড়ির চালকের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী কিনে তুলে দেন বৃদ্ধার হাতে। খাদ্যসমাগ্রীর মধ্যে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, এক কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, ১ লিটার তেল, ১ কেজি লবণ ও একটি সাবান। পরে বাড়ি যাওয়ার জন্য ভাড়া দিয়ে রিকশায় তুলে দেওয়া হয় বৃদ্ধাকে।

এ সময় খাবার পেয়ে ইউএনওর জন্য দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন বৃদ্ধা।

ওইসময় কাদতে কাদতে বিধবা বৃদ্ধা সমলা বেগম বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পরে মানুষের বাড়িতে আর ধানের খলায় কাজ করে সন্তানদের খুব কষ্টে বড় করেছি। কিন্তু এখন ওদেরও অভাব। তাই তারা আমাকে আলাদা করে দিয়েছে। এখন বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারি না। কয়দিন ধরে ঘরে খাবারের কিছুই নাই। কী খাব। তাই সাহায্য পাওয়ার আশায় রাস্তায় বসে ছিলাম, ইউএনও স্যার দেখে আমারে খাবার দিছেন। দোয়া করি আল্লাহ তার ভালো করুক।’

ইউএনও ফারুক আল মাসুদ বলেন, ‘মানুষ হিসেবে একজন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, সহযোগিতা করেছি। এটা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমি দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোন মধ্যবিত্ত পরিবার যদি খাদ্য সঙ্কটে থাকেন ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন দিলে খাবার পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: