সর্বশেষ আপডেট : ১৫ ঘন্টা আগে
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

ভোমরায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারে ২৭টি ঘর রাতের আঁধারে দখল!

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা ইউনিয়নের হাড়দ্দহ গ্রামে নির্মিত ২৭টি ঘর রাতের আঁধারে দখল করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বদলী হয়ে চলে যাচ্ছেন এমন খবরের ভিত্তিতে স্থানীয় একটি দালাল চক্র আর্থিক সুবিধা নিয়ে গত বৃহষ্পতিবার (১৭ জুন) রাতে এ জবর দখলে সহযোগতিা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা ইউনিয়নের হাড়দ্দহ গ্রামে প্রথমে এক লাখ ৭০ হাজার ও পরে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘর নির্মাণের বরাদ্দ পান শ্যামনগরের ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম। ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেন এক হাজার ৬০০ ভূমিহীন ও গৃহহীনসহ কিছু বিত্তশালী লোকজন। যাঁচাই বাছাই শেষে তালিকাভুক্ত করা ৪৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ২০জনকে বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে দলিল করে দেওয়া হয়। বাকী ২৭টি দলিল বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আজ শনিবার দলিল রেজিষ্ট্রি করে ২০ জুন রবিবার ওই ঘরের উদ্বোধন করবেন বিদায়ী জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।

শাঁখরা বাজার কমিটির সহসভাপতি আসাদুজ্জামান পলাশ, স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম, মফিজুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, ভোমরা ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের সংখ্যা অনুযায়ী ৪৭টি ঘর খুবই নগন্য। ফলে ঘর না পাওয়া ভূমিহীনরা অনেকেই হতাশ ছিল। সে কারণে গুচ্ছগ্রামের মমতাজ, তার ছেলে আব্দুর রহমান, রোমিছা, শাহজাহান, আফছার আলী, আব্দুল কাদের গয়েশপুরের আব্দুর রব, বৈচানা গ্রামের মোজাহারের ছেলে চানবাবু, তার বোন খাদিজা, ফুফু আলেয়া, খানবাড়ির ফিরোজাসহ ২৭টি ভূমিহীন পরিবার বৃহষ্পতিবার রাতে দলিল না হওয়া ওই ২৭টি ঘরের দখলে নেয়। ঘরের মধ্যে তারা মালামাল নিয়েও আসে বসবাসের জন্য। তবে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল ব্যক্তিদের কয়েকজনের নাম আছে ওই ৪৭ জনের তালিকায় বলে স্থানীয় গরীব মানুষের অভিযোগ রয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল, মকফুর, আলিমদ্দিনসহ একটি দালাল চক্র মাথাপিছু ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়ে দলিল করিয়ে দেওয়ার কথা বলে বৃহষ্পতিবার রাতে ২৭ জন ভূমিহীনকে ওইসব নতুন ঘরে তুলে দেয়। বিষয়টি শুক্রবার সকালে জানাজানি হলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফতেমা তুজ জোহরা ও ভোমরা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কান্তিলাল সরকার ঘটনাস্থলে আসেন। তারা এসে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী ও জবরদখলকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদেরকে পরবর্তী কোটায় পর্যায়ক্রমে ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দ্রত মালামাল নিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ভূমিহীনরা চলে যাওয়ার পরপরই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কান্তি লাল সরকার ওই সব ঘরে তালা লাগিয়ে দেন।

এদিকে ভূমিহীন মমতাজ, রোমিছা ও খাদিজাসহ কয়েকজন জানান, জেলা প্রশাসক ২০টি ঘরের দলিল করে দিয়ে বদলী হয়েছেন, বাকীগুলো তাদের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়া যাবে বলে তাদের কাছ থেকে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ও দালাল (দালালদের নাম প্রকাশে অনীহা) তাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। টাকা নিয়েই তারা ঘর দখলে সহযোগিতা করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে তারা দখল ছেড়ে দিয়েছেন। তিন দিনের মধ্যে টাকা ফেরৎ না পেলে দাালাল নেতাদের নাম উলেখ করে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ও থানায় অভিযোগ করবেন।

ভোমরা ইউপি চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী জানান, খালিঘর দখলে কোন টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে ভূমিহীনদের সংখ্যা অনুযায়ী ঘর কম বরাদ্দ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হলেও তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ভোমরা ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম বলেন, যারা দখলে করেছিল তাদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর সহকারি ভূমি কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী তুলে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুযায়ী ঘর দেওয়া হবে। এর সঙ্গে কোন নেতা বা দালালের আর্থিক লেনদেন আছে কিনা তার জানা নেই।

ভোমরা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কান্তি লাল সরকার বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ি তালিকাভুক্ত ২৭ জনকে শনিবার দলিল রেজিষ্ট্রি করে খুব শিগগরই তা হস্তান্তর করা হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফতেমা তুজ জোহরা সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী যে মহতী উদ্যোগ নিয়েছেন তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। চাহিদার তুলনায় প্রথম দফায় অনেক কম লোক ঘর পাচ্ছেন। যাদের নাম তালিকায় না থাকার পরও ঘর দখল করেছিলেন তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা অসহায় হলে পরবর্তী তালিকায় তাদের নাম অর্ন্তভুক্ত করে সমস্যার সমাধান করা হবে। তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: