সর্বশেষ আপডেট : ১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড আগে
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

মুক্তিযুদ্ধ শুধু ইতিহাস নয়, হৃদয়ের সাক্ষ্য : লন্ডনে নির্মাতা গৌতম ঘোষ

প্রবাস ডেস্ক ::

“তোমাদের ইতিহাস জানো। ভুলে যেও না, এই স্বাধীনতা অনেক রক্তে কেনা। তোমাদের দায়িত্ব হলো সেই সত্যকে সযত্নে বহন করা—কথায়, লেখায়, চলচ্চিত্রে, বা হৃদয়ে।” — এমনই আবেগঘন বার্তা দিলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ।

পূর্ব লন্ডনের বার্কিং অ্যান্ড ডেগেনহ্যাম টাউন হলের মেয়রস পার্লারে আয়োজিত এক বিশেষ কফি সকালের আলোচনায় তিনি এসব বলেন। আয়োজক ছিলেন স্থানীয় মেয়র, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির গর্ব, মইন কাদরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা, সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং তরুণ প্রজন্মের অনেকে। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিল্প-সংস্কৃতি ভিত্তিক সংগঠন Soudh-এর পরিচালক মি. ফয়সাল।

গৌতম ঘোষ শুধু একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা নন, ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, ক্যামেরায় বন্দি করা বেদনার ছবি এবং ত্রাণশিবিরে কাজ করার গল্প উপস্থিত সবাইকে আবেগাপ্লুত করে তোলে। তিনি বলেন, “যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, তখন আমি কাছ থেকে দেখেছি লক্ষ লক্ষ শরণার্থী কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসেছে। আমি তখন ক্যামেরা হাতে সেই কষ্ট, সেই বেদনাকে ধারণ করতে চেয়েছি। যুদ্ধ শুধু বন্দুকের নয়, মানুষের মর্যাদা বাঁচানোর লড়াই—সেই কথাই আমি বারবার আমার ছবির মাধ্যমে বলতে চেয়েছি।”

তিনি তাঁর জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পদ্মা নদীর মাঝি, শঙ্খচিল, ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যচিত্রগুলোর উল্লেখ করে বলেন, এই কাজগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস ও মানবিকতা তুলে ধরেছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই গভীর মনোযোগে শুনছিলেন—হলে যেন এক সময়চক্র খুলে গিয়েছিল।

কফি পর্ব শেষে কাউন্সিল চেম্বারে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তরুণদের মুখোমুখি হন গৌতম ঘোষ। একজন প্রশ্ন করেন—এই ইতিহাস কীভাবে তিনি শিল্পে রূপ দিয়েছেন? উত্তরে তিনি বলেন, “আমি কেবল গল্প বলি না, আমি সাক্ষ্য রাখি। আমি দেখেছি মা তাঁর সন্তানকে হারিয়ে উন্মাদ হয়ে যাচ্ছেন, দেখেছি বাচ্চারা না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে। সেই কষ্ট, সেই ত্যাগ আমাকে আমৃত্যু তাড়া করে।”

আয়োজক মেয়র মইন কাদরী বলেন, “গৌতম ঘোষ শুধু একজন শিল্পী নন—তিনি ইতিহাসের ধারক, একজন নীরব মুক্তিযোদ্ধা। আজকের সকালটি আমাদের কমিউনিটির জন্য ছিল একটি গর্বের অধ্যায়।”

এ অনুষ্ঠানটি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও গৌরব সম্পর্কে জানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।

উল্লেখ্য, গৌতম ঘোষ ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন, যিনি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, মানবিকতা ও মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর নির্মিত তথ্যচিত্র ও চলচ্চিত্রগুলো আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। তিনি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’সহ বহু আন্তর্জাতিক সম্মাননা অর্জন করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: