সর্বশেষ আপডেট : ৮ মিনিট ২১ সেকেন্ড আগে
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সুনামগঞ্জের জাদুকাটা নদীতে চোরাকারবারিদের মহাতাণ্ডব

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা ::

সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী জাদুকাটায় চোরাকারবারির মহাতাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। একদিকে নদীর তীর কেটে বালু বিক্রি করা হচ্ছে, অন্যদিকে নদীপথে কোটি কোটি টাকার কয়লা, পাথর ও মাদকদ্রব্য পাচার চলছে নির্বিঘ্নে। এতে নদীর তীর ধসে শত শত একর ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। প্রশাসনের নীরবতায় দিন দিন বাড়ছে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতা জরুরি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পের ২০০ গজ দক্ষিণে চিহ্নিত চোরাকারবারিরা ২০-৩০টি মাহিন্দ্র লড়ি দিয়ে বালু বিক্রি শুরু করে। তারা প্রায় দুই মাস ধরে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন করছে। একইভাবে সীমান্তের ১২০৩-এর ৩এস পিলার সংলগ্ন জাদুকাটা নদী ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোস্টের সামনে দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন শত শত লোক কয়লা, পাথর ও মাদক পাচার করছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক ও বিস্ফোরক মামলার আসামি সীমান্তের গডফাদার তোতলা আজাদ ও তার সহযোগী একাধিক মামলার আসামি বাদাঘাট ইউনিয়নের সদস্য রানু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে নদীর তীর কেটে বালু ও পাথর বিক্রি করছে। তারা গভীর কোয়ারি (মৃত্যুকূপ) তৈরি করে পাথর উত্তোলন করায় রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও তাদের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হয় না, বরং আরও বেড়ে যায়।

গতকাল সোমবার (৩ মার্চ) সকাল ৭টায় লাউড়গড় সীমান্তের ঘাগটিয়া গ্রামের বাঁশবাগানের পূর্ব পাশে একাধিক স্থানে একযোগে বালু উত্তোলন শুরু করে রানু মেম্বার ও তোতলা আজাদের লোকজন। এ সময় গড়কাটি গ্রামের আশরাফ তালুকদার তার জায়গার মালিকানা দাবি করে বাধা দেন। এতে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, জাদুকাটা নদীর অবৈধ তাণ্ডবের কারণে সহস্রাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভারত থেকে অবৈধভাবে কয়লা ও পাথর চোরাচালান করতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ও নদীতে ডুবে শতাধিক লোক প্রাণ হারিয়েছে। সংঘর্ষে একাধিক মানুষের মৃত্যু হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন নিয়ে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধভাবে নদীর তীর কাটা, মাদক ও কয়লা পাচারের ফলে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অনেক গ্রাম বিলীন হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: