cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
বিউটি হাসু ::
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, কিছু অর্জন-বর্জন ও নানা ঘটনার মধ্যে ২০২৪ সাল শেষ হয়েছে। কালের সাক্ষী করে রেখে গেছে তার ত্যাগ, ব্যর্থতা এবং অর্জিত সাফল্যের নানা গল্প ও কর্মফল। অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে নতুন বছর ২০২৫ শুরু হয়েছে। সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও নতুনের রেশ এখনও কাটেনি।
মানুষের জীবনে প্রতিটি দিনই আসলে নতুন। প্রতি সকালে ঘুম ভাঙার পরে আমরা নতুন জীবন লাভ করি। তারপরও নতুন বছর নিয়ে আলাদা প্রত্যাশা থাকে, পরিকল্পনা থাকে। প্রতিটি দিনের সূচনা হয় নতুন ভাবনা নিয়ে, শেষ হয় নতুন অভিজ্ঞতা দিয়ে। নারীরাও প্রতিটি দিন নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন, চারপাশের মানুষকেও নতুন করে চেনেন। কারণ নারীর জীবনের রূপরেখা বহুমাত্রিক, পুরুষের তুলনায় পরিবর্তনশীল ও বৈচিত্র্যময়। নারী মা, বোন, কন্যা; আবার কখনও স্ত্রী, পুত্রবধূ, শাশুড়ি। নারীর জীবনের দীর্ঘযাত্রায় তাকে নানারকম বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আধুনিক যুগে সব বাধাবিঘ্ন অগ্রাহ্য করে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন। সংসার, সমাজ ও দেশ গঠনের কাজ এবং শিক্ষা ও চাকরি সব ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান প্রশংসনীয়। তারপরও বৈষম্য নারীর চলার পথে প্রধান অন্তরায়। নারীদের লক্ষ্য অর্জনে এখনও বড় চ্যালেঞ্জ বৈষম্য।
* নারীর বৈষম্য শুরু হয় ঘর থেকেই। পরিবার থেকেই নারী বৈষম্যের অবসান হওয়া জরুরি।
* নারীর অর্জন অনেক হলেও মূল্যায়ন কম।
* অধিকার ও সুযোগ প্রাপ্তিতে নারী ও পুরুষের মধ্যে বিশাল বৈষম্য।
* শ্রম বেশি দিলেও নারীর ক্ষেত্রে বেতন বৈষম্য।
পরিবার থেকেই বৈষম্য:
নারী-পুরুষের সমান সুযোগ প্রাপ্তি, অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখনো গোড়ার সমস্যা। নারীদের প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, কাজের মূল্যায়ন না করা পরিবার থেকেই শুরু হয়। সমাজকে রাষ্ট্রের একক মনে করলে পরিবার হলো সমাজের একক। নারীরাই সাধারণত একটি পরিবারে ঘরের সব কাজ করে থাকেন। আর ঘরের কাজের কোনো শেষ নেই, সীমা-পরিসীমা নেই। ঘর, বর ও সন্তান সামলানোর গুরুদায়িত্ব নারীর উপরই ন্যস্ত। আর যে নারী সংসার সামলান তার কোনো অবসর নেই। আরাম-আয়েশের সুযোগ নেই। নারীর ভাগ্যে জুটে না কাজের প্রশংসা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রাপ্তি। পরিবারের এই অসীম পরিসীমায় নারীই একাকী দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু গৃহকর্মে নারীর শ্রমকে স্বীকৃতি না দিয়ে তার দায় হিসেবেই চাপিয়ে দেওয়া হয়। পুরুষ শাসিত পারিবারিক প্রশাসনের এটি নির্দয় ও অমানবিক নিষ্পেষণ। যুগ যুগ ধরে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর ওপর এই বৈষম্য তৈরি করে রেখেছে।
বৈষম্যের এই অবকাঠামোকে আরও শক্তিধর করেছে ক্ষমতার অপব্যবহার। এই বৈষম্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু হয় নিজ গৃহ থেকেই। গৃহের সীমাহীন কর্মের প্রায় সিংহভাগই চাপানো হয় নারীর ওপর। এক্ষেত্রে তার মেধা, সামাজিক অবস্থান, শারীরিক বা মানসিক ক্ষমতা, বয়স, শিক্ষা কোনকিছুই বিবেচনা করা হয় না। একাধিক নারীর সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা উঠে এসেছে।
কথা হয় মাস্টার্স পাশ গৃহবধূ নিবেদিতার (ছদ্মনাম) সঙ্গে। তিন সন্তানের জননী তিনি। দেখতে সুন্দরী বলে কিশোরী বয়স থেকেই বিয়ের অনেক প্রস্তাব আসতো বাসায়। অর্নাস প্রথম বর্ষেই বাবা-মা সরকারি উচ্চ পদস্থ পাত্রের হাতে তাকে তুলে দেন। অল্প বয়স হলেও বিয়ের পরই সংসারের হাল ধরেন নিবেদিতা। সেই সঙ্গে পড়াশোনাও ভালভাবেই শেষ করেন। পেটে নয়মাসের জমজ বাচ্চা নিয়ে মাস্টার্স পরীক্ষা দেন এবং ১ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। শুধু উচ্চশিক্ষিত নয়, বহুগুণের অধিকারীও এই নারী। তারপরও তাকে স্বামীর পরিবারে প্রতিনিয়ত নানারকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। পরিবার ও স্বামীর কাছে নিগৃহীত হতে হয়। রাত-দিন পরিবারের জন্য খেটেও কাউকে খুশি করতে পারেন না।
অন্যদিকে, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাদিয়া (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, ”নারীরা পরিবার ও অফিস দুই জায়গায়ই বৈষম্যের শিকার হোন। একজন অফিস ফেরত কর্মকর্তা পুরুষ তার প্রতিদিনের কাজ শেষে ঘরে ফিরে বিশ্রাম নেন এটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে তার প্রশান্তি, বিনোদন এবং খাবারও তৈরি নিশ্চিত থাকে। এটাও চিরায়ত নিয়ম হয়ে গেছে।
পক্ষান্তরে, অফিস ফেরত নারী কর্মকর্তাটি ঘরে ফিরেই সবার দেখভালে সরব এবং সক্রিয় হয়ে উঠেন। তার এক দন্ডও বিশ্রামের সুযোগ মিলে না। ঘরে ঢুকেই তাকে তড়িঘড়ি করে ছুটতে হয় রান্নাঘরে। অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তা হয়েও দিনশেষে তাকে নিখাদ গৃহবধূ হতে হয়, হতেই হবে। হোন না তিনি গর্ভবতী নারী। কিংবা ছয় মাসের বাচ্চা আগলে রাখা রাত জাগা নিদ্রাহীন মা। অথবা আসন্ন প্রসূতি বা রক্তশূন্যতায় ভোগা দুর্বলতম কোনো চাকরিজীবী বা সাধারণ গৃহবধূ। এমন কি গৃহে আগত অতিথিদেরও আপ্যায়ন ও সেবা যত্নের দায়িত্ব তারই।
তিনি আরো বলেন, চাকরিজীবী নারীরা যত যোগ্যতাসম্পন্নই হোন, অফিসে তাদের নানারকম বৈষম্যের শিকার হতে হয়। দেখা যায়, একই পদে কর্মরত পুরুষ সহকর্মীর চেয়ে নারীর বেতন ৫/১০ হাজার টাকা কম হবেই। নারীরা যত ভাল কাজই করুন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের ভাল কাজের মূল্যায়ন হয় না। এমনকি পুরুষ সহকর্মীর কোন ভুল কাজের দায়ও নির্দোষ নারী সহকর্মীর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এটা খুবই দুঃখজনক। এতে নারীরা মানসিক চাপে মনোবল হারিয়ে ফেলেন। তাদের কাজের গতিও কমে যায়। নারীদের প্রতি এমন বৈষম্য ও হীনমনোভাব দূর করা আবশ্যক।
সুইটি আক্তার আরেকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি জানান, একই পদমর্যাদায় কাজ করেও পুরুষ সহকর্মী থেকে সবক্ষেত্রেই সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হতে হয়। অনেক সময় পুরুষ সহকর্মীর চেয়ে বেশি শ্রম দিয়েও নারীরা প্রাপ্ত অধিকার ও সুযোগ পান না। তাদের বঞ্চিত করা হয়। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরি। নারীরা পরিবার ও অফিসে নিগৃহীত হলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
তিনি আরো বলেন, নারীরা এখন চ্যালেঞ্জিং নানা পেশায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। শুধু তাই নয় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তারপরও নারীরা এই কাজ পারবে না, ওই কাজ পারবে না এমন হীন্যমানসিকতা এখনো অনেকের মধ্যে রয়ে গেছে। এমন ধারণা দূর হওয়া প্রয়োজন। পুরুষতন্ত্র শক্তি এবং মেধায় নারীকে খাটো করে দেখছে শুরু থেকেই। এই প্রবণতা মেধাদীপ্ত নারীকেও অবমূল্যায়নের শিকার হতে বাধ্য করছে। অধিকার ও সুযোগ প্রাপ্তিতে নারী ও পুরুষের মধ্যে বিশাল বৈষম্য। এই বৈষম্যমূলক আচরণ দূর করতে হবে।
পরিবার থেকেই অবসান হোক নারী বৈষম্য:
শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত কামরুন্নাহার সুমি বলেন, গৃহকর্মের প্রতিটি আয়োজনে পরিবারের সব সদস্যদের সানন্দ অংশগ্রহণ থাকুক। তাদের অংশগ্রহণে পারিবারিক কর্মপ্রহর যেমন আনন্দঘন হবে, তেমনি নারী সদস্যদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যও তা গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে। নারী নির্যাতনের হারও অনেকাংশে কমে যাবে। পারিবারিক সহিংসতা কমে যাবে এবং সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরো মজবুত হবে।
এসব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন আত্ম-সমালোচনা,আত্মসংশোধন এবং আত্মশুদ্ধির। প্রতিটি শিশুপুত্রের মনেই গেঁথে দিতে হবে পরিবারের সবাই সমান। তাই সব কাজ সবাইকে ভাগ করে করতে হবে।
জীবনের শুরু হতেই কন্যা ও পুত্র সন্তানকে একে অন্যের প্রতি সহযোগী ও সহমর্মী মনোভাব নিয়ে একই সাথে গৃহকর্মে অংশ নেয়া শেখাতে হবে। সমতা রক্ষা ও ভারসম্যের আলোয় আলোকিত গৃহ তথা রাষ্ট্র ও পৃথিবী চাই, যে পরিবার নারী পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের শান্তিপূর্ণ বাসস্থান হবে।
নারী অধিকার–কর্মী ও গবেষকদের মতে, নারীর প্রতি সহিংসতা বড় সমস্যা। যা তাদের অর্জনগুলোকে ঝুঁকিতে ফেলছে। বৈষম্য এবং বৈষম্যের মানসিকতা দূর ও নারীর অবস্থান শক্তিশালী করা না গেলে এ সহিংসতা প্রতিরোধ করা যাবে না।
উচ্চতর শিক্ষা ও দক্ষতা, মানসম্মত জীবিকার সুযোগ, আয় ও সম্পদ, রাজনৈতিক ক্ষমতা- এসব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য কমানো আগামী দিনগুলোতে তাই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। বিশেষ চ্যালেঞ্জ হবে পারিবারিক আইনের সংস্কার এবং সার্বিকভাবে সমাজে বিদ্যমান বৈষম্যের দৃষ্টিভঙ্গি দূর করার কার্যকর কৌশল ঠিক করা।
আবার নারী সমাজের অনেক সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং সমাধান কল্পে অনেক মহান পুরুষদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। খুব ছোট এবং সাধারণ আঙ্গিকে একটি পারিবারিক সমঝোতার মত করেই আন্দোলন শুরু হোক।
সবশেষে বলা যায়, দিনশেষে নারী কোন পুরুষের মা,বোন, স্ত্রী বা কন্যা। তাই প্রতিহিংসা নয়, সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে নারী-পুরুষ একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। বঞ্চিত ও অবহেলিত সব নারী নতুন বছর কর্মক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজের স্বীকৃতি পাবেন এটাই প্রত্যাশা।
নতুন সরকারের কাছে নারীদের প্রত্যাশা, উন্নয়ন ও প্রশাসন কার্যক্রম নারী নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করে প্রণীতধারা অব্যাহত থাকুক। নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নারীর উন্নয়নে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির কার্যক্রমে অব্যাহত থাকুক। গ্রামীণ নারীদের সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং শ্রমে অংশগ্রহণ সুযোগ বৃদ্ধি করা হোক। কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা, কর্মবান্ধব পরিবেশ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হোক।
নারী সমাজের প্রত্যাশা কম, বৈষম্যহীন একটি শোষণমুক্ত সমাজ নারীদের কাম্য।
সূত্র : আমার দেশ