cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সরকারি খাস খতিয়ানে ১৩৭ দশমিক ৫০ একর জায়গায় শাহ আরেফিন টিলার অবস্থান। কথিত আছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর অন্যতম সফরসঙ্গী হজরত শাহ আরেফিন (রহ.) খাসিয়া পাহাড় এলাকা পরিভ্রমণকালে পাহাড়-টিলার চূড়ায় বিশ্রাম নিতেন। শাহ আরেফিনের একটি ‘আসন’ (বিশ্রামের স্থান) হিসেবে পরিচিতি থেকে ওই টিলার নামকরণ হয়েছে শাহ আরেফিন টিলা। লালচে, বাদামি ও আঠালো মাটির এ টিলার নিচে রয়েছে বড় বড় পাথরখণ্ড। এসব পাথর উত্তোলন করতেই চলছে ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয় লোকজন জানান, শাহ আরেফিন টিলা হিসেবে পরিচিতি পেলেও এখানে মতিয়া টিলা নামের আরেকটি টিলা ছিল। ২০০০ সালের দিকে এসব টিলায় পাথরখেকোদের প্রথম নজর পড়ে। এরপরই প্রকাশ্যে চলতে থাকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের দিকে এখানে পাথর উত্তোলনে অবৈধ ‘বোমা মেশিনের’ (পাথর ভাঙার কল) ব্যবহার শুরু হয়। গত আড়াই দশকে পাথর ও মাটি সাবাড় করে নেওয়ায় একসময়ের অনিন্দ্যসুন্দর টিলা দুটি এখন অনেকটা ‘কঙ্কাল’ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
সিলেটের পরিবেশকর্মীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে পাথরখেকো চক্রটি দিনের পর দিন শাহ আরেফিন টিলা ও আশপাশের এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি করে ও বোমা মেশিন চালিয়ে অবৈধভাবে পাথর ও মাটি উত্তোলন করে আসছে। অবশ্য কয়েক বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে সেখানে পাথর উত্তোলন অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এখন আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর টানা তিন মাস এখানে প্রশাসনের নজরদারি কম ছিল। সেই সুযোগে ব্যাপক হারে পাথর ও মাটি লুটপাট হয়। এ সময়টাতে দিন-রাত সমানতালে কোটি টাকার পাথর ও মাটি লুটপাট করে নেওয়া হয়েছে। এখনো চক্রটি রাতের অন্ধকারে পাথর উত্তোলন করছে বলে পরিবেশকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
তবে শাহ আরেফিন টিলা থেকে কী পরিমাণ পাথর লুট হয়েছে কিংবা কারা এ লুটপাটে জড়িত, এমন কোনো তালিকা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নেই। শাহ আরেফিন টিলায় ৫ আগস্টের পর লুটপাটের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নির্ধারণে তারা কোনো জরিপ বা তালিকাও করেনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদা আখতার গণমাধ্যমকে বলেন, শাহ আরেফিন টিলা এখন শুধু একটি নাম। এটিকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। তবে এখনো টিলার যতটুকু অবশিষ্ট আছে, তা রক্ষা করতে প্রশাসনকে তৎপর হওয়া প্রয়োজন।
বেলা জানিয়েছে, নির্বিচার পাথর উত্তোলনের কারণে গর্ত ধসে ২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত শাহ আরেফিন টিলায় ৩৮ জন শ্রমিক মারা গেছেন। আহত হন আরও কয়েক শ শ্রমিক।
২০ ডিসেম্বর দুপুরে শাহ আরেফিন টিলা এলাকায় দেখা যায়, পুরো টিলা এলাকাটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। স্থানে স্থানে সুগভীর গর্ত। সেসব গর্তে পাথর তোলার চিহ্ন স্পষ্ট। বেশ কিছু গর্তে জমে আছে পানি। সাতটি গর্তের পাশে ‘লিস্টার মেশিন’ (পানি উত্তোলনের যন্ত্র) বসিয়ে কিছু শ্রমিক পানি উত্তোলনের কাজ করছেন। চারটি ট্রাক্টর দিয়ে সরানো হচ্ছে টিলা কাটা মাটি। এ ছাড়া টিলা এলাকায় আরও ১৫ থেকে ২০টি লিস্টার মেশিন বন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবিদা সুলতানা শাহ (সদ্য বদলি হয়েছেন) ৫ আগস্ট থেকে নির্বিচার পাথর লুটপাটের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি ২৩ ডিসেম্বর প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির কারণে বর্তমানে পাথর লুটপাট পুরোপুরি বন্ধ আছে। পাথর চুরি ঠেকাতে ৮ ডিসেম্বর শাহ আরেফিন টিলায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। পুলিশের ২০ জন সদস্য ৯ ডিসেম্বর থেকে সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে ২০ ডিসেম্বর সরেজমিনে বেলা একটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত শাহ আরেফিন টিলায় অবস্থান নিয়ে কোনো পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। এ সময়টাতে কিছু শ্রমিককে লিস্টার মেশিন দিয়ে গর্তের পানি শুকিয়ে পাথর উত্তোলনের কাজ করতে দেখা গেছে। এ সময় কিছু শ্রমিককে টিলার মাটি ট্রাক্টরে তুলতেও দেখা গেছে।
৫ আগস্টের পর শাহ আরেফিন টিলা এলাকায় কত টাকার পাথর লুট হয়েছে, এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে পরিবেশবাদী সংগঠন ও পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত কয়েকটি সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি ট্রাক্টর ও ট্রলি এখান থেকে পাথর নিয়ে যায়। মূলত আড়ালে থাকা স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রমিকেরা এসব পাথর উত্তোলন করেন। পাথর তোলা শেষে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই ব্যবসায়ীদের কাছে উত্তোলন করা পাথর বিক্রি করে থাকেন বলে স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন।
পাথর উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত একজন জানান, লিস্টার মেশিন দিয়ে পানি সেচে গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করেন শ্রমিকেরা। গর্তে চাপা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি জেনেও টাকার জন্য শ্রমিকেরা এ কাজ করেন। পরে উত্তোলন করা পাথর বড় বড় ট্রাক্টর আর ট্রলি দিয়ে টিলা এলাকা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাথর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, পুলিশ ক্যাম্প বসানোর পর নির্বিচার পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়েছে। তবে রাতের অন্ধকারে পুলিশকে ম্যানেজ করে এখনো পাথর ও মাটি উত্তোলন চলছে। এ জন্য ট্রাক্টর ও ট্রলিতে থাকা পাথরের পরিমাণ অনুযায়ী গড়ে ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়।
তবে পুলিশের ম্যানেজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ। তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, ৭ ডিসেম্বর শাহ আরেফিন টিলায় উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাথর তোলার দায়ে চারজনকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি কয়েকটি মেশিন জব্দ ও অবৈধ পাথর ভাঙার মেশিনমালিকদের চার লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির শুরুতে শাহ আরেফিন টিলায় কিছুদিন পাথর লুট হয়েছে। তবে এখন প্রশাসন নজরদারি বাড়ানোয় পাথর তোলা পুরোপুরি বন্ধ আছে। কেউ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাথর তুলছে কি না, সেটাও নিয়মিত তদারক করা হবে।