সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস বিনির্মাণে ঢাবি শিবিরের ১০ প্রস্তাবনা

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চলমান সংকট সমাধান এবং জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের আলোকে ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস বিনির্মাণে ১০ প্রস্তাবনা নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রশিবির।

আজ সোমবার ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সভাপতি আবু সাদিক কায়েম এই স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ, শিবিরের ঢাবি সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন খান, মিডিয়া সম্পাদক জোবায়ের আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন সংক্রান্ত ছাত্রশিবিরের ১০টি প্রস্তাবনা হলো –

১. চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট যেসকল ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী ফ্যাসিবাদের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছিলেন, প্রত্যক্ষভাবে গণহত্যাকে সমর্থন ও পরোক্ষভাবে গণহত্যার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২. বিগত ফ্যাসিবাদের শাসনামলে হলগুলোতে ছাত্র নির্যাতনের সাথে সম্পৃক্ত হল প্রভোস্ট, হাউস টিউটর এবং প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩. পতিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদের দোসর ও আইকনদের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে সকল স্থাপনা, সড়ক, সেন্টার, বৃত্তি-সম্মাননা, চেয়ার ও ফলকের নামকরণ করা হয়েছে, তা অবিলম্বে পরিবর্তন করে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের নামে নামকরণ করতে হবে। শহীদ আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধ, শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত, শহীদ ওয়াসিম, শহীদ আলী রায়হান, শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, শহীদ নাইমা, শহীদ সুমাইয়াসহ সকল শহীদেরা আমাদের জাতীয় বীর ও প্রেরণার বাতিঘর। জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে ভাস্বর রাখতে এবং ফ্যাসিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে শহীদদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের নামে স্থাপনা, সড়ক, ফলক, সেন্টার, বৃত্তি-সম্মাননা ইত্যাদি স্থাপন করতে হবে।

৪. চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বিশেষায়িত সেন্টার ও সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে হবে। যেখানে অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ইতিহাস, গুরুত্বপূর্ণ ছবি, সাহিত্য, ম্যাগাজিন, প্রকাশনা, পত্রিকা ও চিত্রকর্ম ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকবে।

৫. জুলাই গণহত্যা বিষয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করতে হবে এবং পর্যাপ্ত গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের নির্মম ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ১৭ জুলাই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ মুক্তকরণ এবং যৌথবাহিনীর নৃশংস হামলার ভয়াবহতা স্মরণ করে ‘১৭ই জুলাই’-কে ‘ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

৭. সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের হাতে শহীদ আবুবকর হত্যার সুষ্ঠু (পুনঃ) বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, সার্টিফিকেট বাতিল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

৮. গত ১৬ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামবিদ্বেষসহ নানাবিধ নিপীড়ন ও বৈষম্যের ঘটনায় ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করতে হবে। এই আমলে আওয়ামী লীগ ও তার ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার সকল শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৯. ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি, বিগত ১৬ বছরের নিপীড়ন, সন্ত্রাস ও জুলাই গণহত্যার দায়ে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।

১০. বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভ্যন্তরে প্রকাশিত সকল দুর্নীতির তথ্য শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‌‘স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তৈরি করা হয় ফ্যাসিবাদী মনস্তত্ত্ব উৎপাদন ও অপশাসন কায়েমের ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত করে চলেছে শিক্ষার্থী নিপীড়ন। গেস্টরুম-গণরুমের করাল থাবা অসংখ্য শিক্ষার্থীর স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করেছে। ফ্যাসিবাদের ঠিকাদাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে কৃত্রিম সংকট জিইয়ে রেখে ক্যাম্পাসে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল। একই সঙ্গে নানান কৌশলে বরাদ্দকৃত অর্থের অপব্যয় ও লুটপাট চালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে তথাকথিত উন্নয়নের ভাগাড়ে পরিণত করেছিল।’

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এতে আরও বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস পরিণত হয়েছিল ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে। দলীয় রাজনীতি ও পদলেহন ছাড়া ক্যাম্পাসের সমস্যা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ অতীতে দেখা যায়নি। তাই ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে একটি ‘বৈষম্যহীন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। মৌলিক সংকট চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে এই ক্যাম্পাস সত্যিকার অর্থেই শিক্ষার্থীদের প্রাণের ঠিকানা হয়ে উঠবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: