সর্বশেষ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

মেয়র আরিফকে নিয়ে যে জল্পনা

ওয়েছ খছরু: অনেকটা গা ছাড়া ভাব। যেন ঝিমিয়ে পড়ছেন। আগের মতো উদ্যমও নেই। দ্বিতীয় মেয়াদে শেষ বাজেট বক্তৃতায়ও ইঙ্গিত মিললো কিছুটা। বললেন, ‘সম্ভবত এটাই আমা’র শেষ বাজেট।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের দু’বারের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপি’র এই কেন্দ্রীয় নেতা সিলেটে মেয়র হয়েই নজর কেড়েছিলেন সবার। স্রোতের বিপরীতে তিনি ছিলেন নিজ দলের কাছে একমাত্র শান্ত্ব্ত্বনা। দীর্ঘ ১০ বছরের সিলেট নগর পিতার শাসন তার শেষ হতে চলেছে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে পারে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সীমানা জটিলতায় প্রশাসক বসতে পারেন নগর মসনদে।

সেটি হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আরিফকে চেয়ার ছেড়ে দিতে হতে পারে। আর নির্বাচন হলে আরিফ সিলেট নগরে আর নির্বাচন নাও করতে পারেন- এমন গুঞ্জন ডালপালা মেলছে। ঘনিষ্ঠজনেরাও জানিয়েছেন, আর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন নাও করতে পারেন আরিফ। এবার গতিবিধি তেমন ভালো না। কয়েক সপ্তাহ আগের জলাবদ্ধতা তাকে ভাবিয়ে তুলেছে।

এই জলাবদ্ধতা নিয়ে এত কাজ করার পরও বিতর্ক। সবার ক্ষোভে বিদ্ধ হন মেয়র আরিফ। এতে নিজেও কিছুটা চিন্তিত। এরপর থেকেই পিছুটান। তবে- নতুন স্বপ্নে বিভোর তিনি। এবার হতে চান সংসদ সদস্য। সেটির প্রক্রিয়াও বেশ খানিকটা এগিয়ে রেখেছেন তিনি। সিলেটের একটি আসনের দিকেও নজর দিয়েছেন। সেখানেও বাগানবাড়ি বানানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে যাতায়াতও বেড়েছে ওই এলাকায়। সিলেট-৪ আসনের দিকে চোখ আরিফের। এ আসনটি ছিল বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিমের।

তিনি মা’রা গেছেন। এডভোকেট শামসুজ্জামান জামানও নেই বিএনপিতে। পদত্যাগ করেছেন দল থেকে। দিলদার সেলিমের মৃ’ত্যুর আগে থেকেই তিনি ওই আসন চষে বেড়াচ্ছিলেন। অনেক আগে থেকেই এ আসনের বিএনপি’র নেতাদের সঙ্গে তার সর্ম্পক ছিল। এখনো আছে। অবস্থানও আছে জামানের। কিন্তু জামান দল থেকে পদত্যাগ করার পরপরই আরিফ সেখানে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। এখন আর সে খবর গো’পন নেই। প্রায় সবাই জানেন।

গত সোমবার মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশনের নতুন অর্থ বছরের বাজেট পেশ করেন। নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে এবারের বাজেট বক্তৃতায় ছিল ভিন্ন সুর। আকার ইঙ্গিতে অনেক কিছুই জানালেন আরিফ। তবে- তার বাজেটে ছিল শেষ বার্তা। বাজেট ঘোষণাকালে মূল্যবান সময় ব্যয় করে উপস্থিত হওয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর অন্ত ছিল না। জানালেন, ‘আপনারা আমা’র কাছের মানুষ, আমা’র প্রিয়জন।

বলতে দ্বিধা নেই, মানুষ হিসেবে আমা’র অনেক সীমাবদ্ধতা, ভুলত্রুটি আছে, থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সীমাবদ্ধতা, ভুলত্রুটিকে গঠনমূলকভাবে তুলে ধরে প্রকৃতপক্ষে আমাকে প্রতিনিয়ত সঠিক পথে চলার প্রেরণা যুগিয়েছেন।’ আর বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই মেয়র আরিফ জানান, ‘চলতি অর্থ বছরের বাজেট সম্ভবত আমা’র দ্বিতীয় মেয়াদে সর্বশেষ বাজেট। এই মঞ্চে বসে চলমান মেয়াদের বাজেট পেশ করতে গিয়ে আমা’র জীবনে অনেক ঘটনা মনে পড়ছে। সেসব ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না।

সংক্ষেপে শুধু এটুকুই বলবো, যখনই যতটুকু সুযোগ পেয়েছি, সিলেটের উন্নয়নে মনপ্রা’ণ সঁপে দিয়ে আপসহীনভাবে কাজ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে সিলেটের উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে আমি আমা’র জীবনের অনেক চড়াই-উতরাই দেখেছি। অনেক ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হয়েছি। একটা সময় শুধু আমি না, ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের কারণে আমা’র বৃদ্ধ মা, স্ত্রী’-সন্তানসহ পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে অবর্ণনীয় যন্ত্র’ণা সইতে হয়েছে।

ষড়যন্ত্রকারীদের মিথ্যার পগাড় দেখে সেসব দিনগুলোতে হতবাক হয়েছি, মুষড়ে পড়েছি, কিন্তু ভেঙে পড়িনি, ধৈর্য হারাইনি। কারণ বিবেকের কাছে আমি সবসময় পরিষ্কার ছিলাম। বিশ্বা’স করি সত্যের জয় একদিন হবে, হয়েছেও তাই। এছাড়া জীবনে যে ভালোবাসা সিলেটবাসীর কাছ থেকে পেয়েছি তা আমা’র জীবন চলার পথে পাথেয় হয়ে থাকবে উল্লেখ করে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটবাসীর এই ভালোবাসা, সম্মান নিয়েই যেন আমি শেষ নিঃশ্বাষ ত্যাগ করতে পারি, আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে এটাই প্রার্থনা।’

বাজেট বক্তৃতায় তিনি সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী, ম’রহু’ম এম সাইফুর রহমানকে স্ম’রণ করেন। বলেন, ‘বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী, সিলেটবাসীর অহংকার, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী, ম’রহু’ম এম সাইফুর রহমানের কাছে আমি চিরঋণী। ম’রহু’ম এম সাইফুর রহমান উন্নয়নের প্রশ্নে ছিলেন আপসহীন। তার সেই আদর্শকে ধারণ করেই রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে সিলেট মহানগরীর উন্নয়নে সবসময় কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও করবো।’ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী।

এখন তিনি সিলেট বিএনপির একাংশের শীর্ষ নেতাও। সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে গিয়ে তাকে প্রতিবারই দু’বার করে ল’ড়াই করতে হয়েছে। একটি হচ্ছে- দলের ভেতরে সম’র্থন কিংবা মনোনয়ন পাওয়ার ল’ড়াই। আর অ’পরটি হচ্ছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে ল’ড়াই। গতবার সিটি নির্বাচনে থিতু হয়ে বসেছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম।

আরিফের জয়ের অন্যতম বাধা ছিলেন সেলিম। সেই সেলিমকে কৌশলে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দেন আরিফুল হক চৌধুরী। আর ২০১৩ সালে প্রথমবার নির্বাচনের সময় তিনি দলের অ’পর প্রার্থীদের সঙ্গে দলীয় ফোরামে ল’ড়াই করেছিলেন। সেখানে সম’র্থন এসেছিল তার পক্ষেই।

আর প্রথমবার মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই তিনি সিলেটের জনপ্রিয় নেতা কা’ম’রানকে পরাজিত করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কা’ম’রানের সঙ্গে তার ভোট সমান সমান হয়। পরে স্থগিত হওয়া কেন্দ্রের নির্বাচনে ভোটযু’দ্ধে তিনি জয়লাভ করেন। সৌজন্যে: মানবজমিন

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: