সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

জমি লিখে না দেওয়ায় মায়ের হাত ভেঙে দিলো ব্যাংকার ছেলে

বসতবাড়ির জমি লিখে না দেওয়ায় ৮০ বছর বয়সী মাকে মা’রধর করে দুই হাত ভেঙে দিয়েছেন ব্যাংক কর্মক’র্তা ছে’লে ও তার স্ত্রী’। নি’র্যা’তনের শিকার নারীকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতা’লে ভর্তি করা হয়েছে। তার হাত, পা ও মা’থাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আ’ঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আ’ঘাতের যন্ত্র’ণা নিয়ে হাসপাতা’লের বেডে কাতরাচ্ছেন। এই ঘটনায় অ’ভিযু’ক্ত ছে’লে রাজীব আলী ডনকে বৃহস্পতিবার (৫ মে) গ্রে’প্তার করে আ’দালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পু’লিশ।

রাজীব আলী ডন ন্যাশনাল ব্যাংক নীলফামা’রী জে’লার সৈয়দপুর শাখার সিনিয়র কর্মক’র্তা হিসেবে কর্ম’রত আছেন। তার স্ত্রী’ খালেদা বেগম গৃহিণী।

ঈদের দিন মঙ্গলবার (৩ মে) রাত ৮টার সময় দিনাজপুর শহরের বড়বন্দর নতুন পাড়া মহল্লার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে। নি’র্যা’তনের শিকার মা রেজিয়া খাতুন প্রাই’মা’রি স্কুলের সাবেক শিক্ষক ছিলেন। তিনি বড়বন্দর নতুন পাড়া মহল্লার মৃ’ত বাহার আলীর স্ত্রী’। তার স্বামীও দিনাজপুর জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

মা’মলা, ভুক্তভোগী ও স্বজনদের দেওয়া তথ্যের মাধ্যমে জানা গেছে, রেজিয়া বেগমের দুই ছে’লে দুই মে’য়ের মধ্যে বড় ছে’লে মা’রা গেছেন। স্বামীও গত হয়েছেন অনেক আগে। মে’য়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ছে’লে রাজীব আলী ডন ব্যাংক কর্মক’র্তা। ছোট ছে’লে ও বড় ছে’লের রেখে যাওয়া এক সন্তানকে নিয়ে বড়বন্দর নতুন পাড়ায় বসবাস করেন তিনি। বেশ কিছুদিন থেকেই ছে’লে মায়ের কাছে বসতবাড়ির ১৬ শতাংশ জমি লিখে নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মা তাতে রাজি হচ্ছিলেন না। একসময়ে ছে’লের জেদাজেদি ও নি’র্যা’তনের কারণে তিন শতাংশ জমি লিখে দেন। কিন্তু সম্পূর্ণ জমিই লিখে নেওয়ার জেদ ছাড়েননি। বাকি জমি লিখে না দেওয়ায় নি’র্যা’তন আরও বেড়ে যায়। গত ১৯ রমজান মাকে নি’র্যা’তন করেন। সেদিন পরিবারের লোকজন ও পু’লিশের সমঝোতায় ছাড় পান তিনি।

ঈদের দিন রাত ৮টার সময় ছে’লে ও তার স্ত্রী’ মিলে রেজিয়া বেগমকে বাকি জমি লিখে দিতে চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তারা অমানবিক নি’র্যা’তন করেন। চলাফেরার সাহায্যে ব্যবহার করা লা’ঠি কেড়ে নিয়ে সেই লা’ঠি ও লোহার রড দিয়ে মা’রধর করেন এবং লাথি মে’রে মেঝেতে ফেলে দেন। হাত, পা, পিঠ, পেটসহ শরীরের সমস্ত স্থানেই আ’ঘাত করা হয়। নি’র্যা’তন সইতে না পেরে একপর্যায়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আবারও বাইর থেকে বাড়িতে এনে নি’র্যা’তন অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে তিনি কা’ন্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় বড় ছে’লের সন্তান (নাতি) লিমান ফুফুদেরকে খবর দেয়। তারা ও এলাকাবাসী এসে বৃদ্ধাকে উ’দ্ধার করে হাসপাতা’লে ভর্তি করেন। নি’র্যা’তনের ফলে দুই হাত ভেঙে গেছে। মা’থায় আ’ঘাত পেয়েছেন, হাতে ও পায়ে ক্ষত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে খবর পেয়ে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতা’লে গিয়ে দেখা যায়, অ’পারেশন থিয়েটারের সামনে দুই হাতে প্লাস্টার করার জন্য দুই মে’য়েকে নিয়ে অ’পেক্ষা করছেন রেজিয়া বেগম। তার দুই হাত ফোলা। বাহুতে আ’ঘাতের পর কালো দাগ পড়েছে। পায়েও রয়েছে একই দাগ। তার পিঠে শক্ত কিছুর আ’ঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঠিকভাবে হাঁটতে পারছেন না। তাকে যখন হাসপাতা’লের অ’পারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় তখন দুই জনের কাঁধে ভর দিয়ে অনেক ক’ষ্টে চলতে হচ্ছে।

ছোট মে’য়ে জনতা ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র কর্মক’র্তা মোছা. সামসি জাহান বকুল বলেন, ‘এর আগেও মাকে মা’রধর করেছে ভাই। এবারে মা’রধর করে হাত-পা ভেঙে দিয়ে নিজেই মায়ের বি’রুদ্ধে থা’নায় মা’মলা করতে গিয়েছিল। এ সময় পু’লিশ তাকে গ্রে’প্তার করে। আমি এই ঘটনায় একটি মা’মলা করেছি। আমি চাই, যাতে তার দৃষ্টান্তমূলক শা’স্তি হয়।’

আরেক মে’য়ে আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘আমা’র বাবা শিক্ষক, মা’ও শিক্ষক ছিলেন। ভাইবোন সবাই শিক্ষিত। বাবা-মা আমাদের শিক্ষিত করেছেন। সেই পরিবারে মাকে মা’রধর করা হয়েছে, এটি মেনে নেওয়ার মতো না। আম’রা চাই, তার এমন শা’স্তি হোক যাতে করে আর কোনও ছে’লে তার মাকে মা’রধর না করে।’

অ’পারেশন থিয়েটারের সামনে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রেজিয়া বেগম বলেন, ‘বার বার ছে’লেকে বলছিলাম, বাবা আমি তোমা’র মা, আমাকে মা’রিস না। আমি বংশের সবচেয়ে বড় সন্তান। তোর বাবা কিংবা আমা’র বাবা ও পরিবারের কোনও লোকজন আমা’র গায়ে কখনও হাত তোলেনি। কিন্তু আমা’র ছে’লে কোনও কথা না শুনেই আমাকে মা’রধর করে। ছে’লের নি’র্যা’তনে আমি হাসপাতা’লে। আর যে ছে’লেকে আদর-যত্ন করে মানুষ করেছি সেই ছে’লে জে’লে। আমি দেশের প্রচলিত আইনে এই ঘটনায় ছে’লের বিচার চাই। যাতে কোনও মা ছে’লের দ্বারা নি’র্যা’তনের শিকার না হয়।’

দিনাজপুর কোতোয়ালি থা’নার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘ওই ছে’লে থা’নায় এসেছিল, মায়ের বি’রুদ্ধে মা’মলা দিতে। কিন্তু পু’লিশ মাকে মা’রধরের বিষয়টি জানার পর তাকে আ’ট’ক করে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে মা’মলা দিলে ওই মা’মলায় আ’সামি করে আ’দালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি ত’দন্ত করে আ’দালতে চার্জশিট দেওয়া হবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: