সর্বশেষ আপডেট : ১৩ ঘন্টা আগে
রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

ছেলের গোয়াল ঘরে মায়ের বসবাস

স্বামী ছেড়ে গেছেন প্রায় ছয় বছর আগে। এরপর দুই ছে’লে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করছিলেন মহেছেনা। ৫/৬ মাস আগে বড় ছে’লে দ্বিতীয় বিয়ে করে চলে যান অন্যত্র। সাথে নিজের করা ঘরটা ভেঙে নিয়ে গেলেও নিজের প্রথম পক্ষের ছে’লেকে রেখে যান মা মহেছেনার কাছে। গৃহহীন মহেছেনার আশ্রয় হয় ছোট ছে’লের গোয়াল ঘরে, গরুর সঙ্গে। এই তীব্র শীতেও দশ বছর বয়সী নাতিসহ গরুর সঙ্গে একই ঘরে বসবাস করছেন ষাটোর্ধ্ব মহেছেনা।

মহেছেনার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজে’লার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে। ওই গ্রামের ই’মান আলীর স্ত্রী’ তিনি। তবে স্বামী চলে যাওয়ার পর অসহায় জীবনযাপন করছেন এই ষাটোর্ধ নারী।

মহেছেনার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গোয়াল ঘরের একদিকে একটি মাঁচান আর একদিকে শোবার বিছানা। মাঝখানের কোনায় গরু রাখার স্থান। গোবর-মূত্রের গন্ধ নিয়ে সেই ঘরেই বসবাস করছেন তিনি। যেন নিজ ভূমিতে পরবাসী মহেছেনা। ছোট ছে’লে বাড়িতে থাকলেও স্বল্প আয়ের কারণে মায়ের জন্য আলাদা ঘর তৈরি করে দেওয়ার ‘সাম’র্থ্য’ নেই তার। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ছে’লের গোয়াল ঘরে আশ্রয় হয়েছে তার।

মহেছেনা বলেন,‘ বড় বেটা প্রথম বউ ছাড়ি দিয়া ফির বিয়া করি অন্যটেই থাকে। নাতিটাক মোর কাছত রাখি গেইছে। ছোট বেটা দিন আনি দিন খায়। মোক ঘর করি দেয় কাই? নাতিটাক নিয়া ছোট বেটার গৈইলত (গোয়ালে) থাকঙ।’

গো-মূত্রের সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যা হয় কিন্তু কী’ করমো বাবা, ঘর করার তো সাম’র্থ্য নাই!’

অন্যের বাড়িতে কাজ করে নিজের ও নাতির খাবার জোগান মহেছেনা। নিজের বয়স কত সেটাও ঠিকমতো বলতে পারেন না। তবে গোয়াল ঘরে থাকা নিয়ে তার ছোট ছে’লের প্রতি তার কোনো অ’ভিযোগ নেই। বরং ছে’লের জন্য অনেকটা সাফাই গাইলেন এই নারী।

‘নাতিসহ যাওয়ার আর জায়গা নাই। মাইনষের বাড়িত কা’মাই করি আনি নাতিসহ খাঙ। ছোট বেটা নিজে চইলবার পায় না মোক কেমন করি দিবে। উয়ারও (ওরও) একটায় ঘর। কাইয়ো ঘরও দেয় না, সাহায্যও করে না।’

মহেছেনা যে বাড়িতে কাজ করেন সেই বাড়ির বড় ছে’লে মা’রুফ আহমেদ মহেছেনা ও তার নাতির জন্য আলাদা ঘর করে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে সেজন্য সমাজের সাম’র্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মা’রুফ আহমেদ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার পর এরই মধ্যে কয়েকজনের সাড়া পেয়েছি। আরও কিছু সহায়তা দরকার। সবার সহায়তা পেলে আগামী মাসেই মহেছেনা ও তার নাতির জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: