cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
মিলন কান্তি দাস: সাহিত্য হলো মন,চিন্তা ও বিবেককে সুস্থ পরিচালনার এক অনন্য মাধ্যম।সাহিত্য মানুষের অন্তরাত্মায় শায়িত দর্শনগুলিকে সভ্য সমাজের সামনে এনে দাড় করায়। মনের ভিতরের মৌলিক চিন্তাধারাকেও জন সমাজের সামনে তুলে ধরে।একজন মানুষের চারিত্রিক গুন ও বৈশিষ্ট্য আবিষ্কারের অনন্য মাধ্যম সাহিত্য। সাহিত্যের মাধ্যমে আমরা একজন মানুষ আবিষ্কার করতে পারি।আমরা আবিষ্কার করতে পারি তার চিন্তাবোধ,মেধা ও মননের তেজস্ক্রিয়তাকে।
প্রজনন ভূমি এই বঙ্গদেশ।শত শত কবি,সাহিত্যিক,গবেষক,নাট্যকার, গীতিকার,সুরকারের অবিরাম সৃষ্টিতে সমৃদ্ধ আমাদের এই বঙ্গ সাহিত্য।যুগে যুগে বাংলা সাহিত্যে সংযোজন হয়েছে নব নব সৃষ্টির।শত সহস্র সাহিত্যিকগনের অমর সকল সৃষ্টিতে বাংলা সাহিত্য আজ সুসমৃদ্ধ।
বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের সিলেট অঞ্চল সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে না গেলেও বিগত বিংশ শতাব্দী হতে সিলেট অঞ্চলে সাহিত্যের চর্চা অব্যাহত রয়েছে।বর্তমানে একবিংশ শতকের তৃতীয় দশকের প্রারম্ভে সিলেট অঞ্চলে সাহিত্যচর্চায় ইতিবাচক ধারা পরিলক্ষিত হয়। একবিংশ শতকের এই দশকে বৃহত্তর সিলেট জুড়ে শত শত সাহিত্যপ্রেমী সাহিত্যচর্চায় আত্ম নিয়োজিত রয়েছেন।সিলেটের সাহিত্যাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করতে তাদের শ্রম ও সাধনা তৃপ্তির আসনে জায়গা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।
বর্তমানে সিলেট অঞ্চলে যে বা যারা সাহিত্য চর্চায় আত্ম নিয়োজিত রয়েছেন, তাদের মধ্যে অনন্য একজন ব্যক্তিত্ব যাঁর নাম মোশতাক চৌধুরী। তিনি পেশায় একজন ব্যাংকার ; একটি প্রাইভেট ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হলেও তার দেহ মন প্রাণের একটি বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে সাহিত্যের প্রেমাঙ্গন। মোশতাক চৌধুরী তার পরিচয়ের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে নিয়েছেন দুর থেকে বহুদুরে। তিনি একাধারে একজন ব্যাংকার,একজন সাহিত্যিক,একজন গবেষক,একজন শেকড় সন্ধানী লেখক।পাশাপাশা সামাজিক ও শিক্ষার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে রয়েছে তার অবাধ বিচরন।তার নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনা হাজী আব্দুল হক চৌধুরী- মস্তফা খাতুন ট্রাস্ট পরিচালনা করে আসছেন বিগত এক দশক ধরে।তিনি এই ট্রাস্টের মাধ্যমে কানাইঘাট উপজেলার দরিদ্র মেধাবী অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর মধ্যে শিক্ষা উপকরন সহ বৃত্তি বিতরন করে আসছেন।এছাড়া তিনি জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদ,জৈন্তিয়া ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষন পরিষদ,গ্রীন প্লান সিলেট সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব প্রদান করে চলেছেন।
নিচে তার বর্নাঢ্য জীবন নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করছি-
জন্ম ও শৈশব
১৯৬৭ সালের ১ লা মার্চ গুনী ব্যাক্তিত্ব মোশতাক চৌধুরীর জন্ম তার নানাবাড়ি কানাইঘাট উপজেলার শাহপুর গ্রামের খলাবাড়ি’ তে। তার পৈতৃক নিবাস একই উপজেলার ধনমাইরমাটি গ্রামে। তার পিতা আলহাজ্ব আব্দুল হক চৌধুরী একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ও মাতা মস্তফা খাতুন চৌধুরী একজন সুযোগ্য গৃহিনী। তার দাদা হাজি কুরমান আলী চৌধুরী ছিলেন ব্রিটিশ পিরিয়ডের সহকারী সেটেলম্যান্ট অফিসার। নানা মৌলবী মকররম আলী (দেওবন্দী) ছিলেন সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক স্বনামধন্য শিক্ষক। পিতা ও নানার দুটি পরিবারই সম্ভান্ত ও যথাযথ ধর্মীয় অনুশাসনের চর্চায় নিয়োজিত।
শৈশব হতেই মোশতাক চৌধুরী ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও চৌকষ ।গ্রামের শিশুদের সাথে খেলাধুলায় অগ্রভাগে থাকতেন।সেই স্মৃতিময় শৈশব থেকেই তার নেতৃত্ব গুন বিকশিত হয়ে আসছে, যা অদ্যবধি চলছে।
শিক্ষা জীবন
লন্তিরমাটি সরকারি বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের পর মোশতাক চৌধুরী ১৯৭৮ সালে সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ ভর্তি হন। তখন তার সহপাঠী ছিলেন বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের সহকারি এটর্নী জেনারেল হুমায়ুন কবির বাবুল ও বর্তমান আমেরিকা প্রবাসী ফারুক উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।১৯৭৯ সালে তিনি কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীতে ভর্তি হন।মাঝে শারীরীক অসুস্থতাজনিত কারনে দীর্ঘদিন তার লেখাপড়া থেমে যায়।১৯৮২ সালে তিনি পুনরায় সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ঐ বছরের বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে চমক সৃষ্টি করেন।তখন আকষ্মিকভাবে সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে সাময়িক সময়ের জন্য ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর কার্যক্রম বোর্ড উর্ধতন বন্ধ ঘোষনা করা হয়।তাই তিনি আবার চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হন। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার কলেজ হতে এইচএসসি এবং সিলেট এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রী কৃতিত্বের সাথে অর্জন করেন।
জ্ঞান পিপাসু মোশতাক চৌধুরী থেমে নেই।নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতে লাগলো তার আরও শ্রম, আরও অধ্যাবসায়। মোশতাক চৌধুরী একে একে অর্জন করতে লাগলেন নতুন ডিগ্রী।তিনি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি হতে এম,বি,এ,সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হতে এল,এল,বি,জালালাবাদ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডি এইচ,এম,এস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ছাত্র হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন। তাই সর্বশেষ ২০২০ সালে তিনি মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হতে সাংবাদিকতায় বিশেষ ডিপ্লোমা অর্জন করেন।
রাজনৈতিক জীবন
ব্যাক্তি ও কর্মজীবনে একজন আপাদমস্তক সফল ব্যাক্তিত্ব মোশতাক চৌধুরীর রয়েছে একটি সাফল্যগাথা রাজনৈতিক অতীত। উচ্চ মাধ্যমিকে বিয়ানীবাজার কলেজে ভর্তি হবার পরপরই তিনি পারিপার্শ্বিক কারণে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।সে সময় তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মেধার দরুন তাকে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
পরবর্তীতে সিলেটের সুপ্রাচীন বিদ্যাপীঠ এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।তখন দেশজুড়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন প্রবল। তখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বেগবান করতে সারা দেশের মতো সিলেট জেলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক গঠিত হয় এবং মোশতাক চৌধুরী সেই আহবায়ক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি সিলেট জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
মোশতাক চৌধুরী তার নিজ উপজেলার রাজনীতিতেও একসময় সক্রিয় ছিলেন। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৯২ সালে কানাইঘাট উপজেলার ৩নং দীঘিরপাড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
কর্মজীবনে প্রবেশের পর থেকে তিনি রাজনীতি থেকে দুরে রয়েছেন। এখন কর্ম ও পারিবারিক জীবনের অবসরের ফাঁকে ফাঁকে সময়টা তিনি সমাজ ও জনসেবা এবং সাহিত্য কর্মের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করছেন।
সমাজসেবা,সামাজিক আন্দোলন ও সামাজিক সংগঠনে সম্পৃক্ততা
সেই দুরন্ত কৈশোর থেকেই মোশতাক চৌধুরী সমাজ সম্পৃক্ত একজন মানুষ। মাধ্যমিক পর্যায়ে অধ্যয়নকালীন সময় হতেই সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন।নিজেকে সম্পৃক্ত করে নেন দেশ ও দশের সাথে।মাধ্যমিক পর্যায়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে তিনি তৎকালীন সময়ের কানাইঘাটের জনপ্রিয় সামাজিক সংগঠন কানাইঘাট ছাত্রকল্যান পরিষদের চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় শাখার সাধারন সম্পাদক হিসাবে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। কানাইঘাট ছাত্রকল্যান পরিষদের নেতৃত্বে তখন কানাইঘাটে প্রথম একটি কলেজ প্রতিষ্টার দাবী উঠে। সেই সময় কানাইঘাট কলেজ বাস্তবায়ন পরিষদ নামে কানাইঘাট টিডিসি হলে ছাত্রকল্যান পরিষদের উদ্যোগে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তিনি সেই কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং কানাইঘাট কলেজ প্রতিষ্টার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।অনেক বাধা বিপত্তি প্রতিকূলতা পেরিয়ে ১৯৯০ সালে কানাইঘাট কলেজ প্রতিষ্টিত হয়।ইতিমধ্যে এই কলেজটি সরকারিকরন হয়েছে।এই কলেজটি প্রতিষ্টার মধ্য দিয়ে কানাইঘাট আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়। সেই থেকে শিক্ষার ক্ষেত্রে কানাইঘাটকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।একের পর এক প্রতিষ্টিত হতে থাকে স্কুল কলেজ। কিন্তুু সব প্রতিষ্টার পিছনে রয়েছে কানাইঘাট কলেজ প্রতিষ্টা ও কানাইঘাট কলেজ প্রতিষ্টার আন্দোলন।সেই আন্দোলনে অনেকের সাথে তিনিও অগ্রভাগে ছিলেন।
১৯৯৩ সালে জকিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারে ইছামতি কলেজ প্রতিষ্টানর উদ্যোগ গ্রহন করেন স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী নেতৃবৃন্দ। ইছামতী কলেজ প্রতিষ্টার লক্ষ্যে একটি কলেজ বাস্তবায়ন পরিষদ গঠন করা হয়। তিনি সেই কমিটিরও একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন।
বর্তমানে মোশতাক চৌধুরী কর্মজীবনে এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকের একটি শাখার গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করলেও সমাজ উন্নয়নমূলক ও সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে তার প্রচেষ্টা থেমে নেই।তিনি জড়িত আছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে।তার সাথে সাথে তিনি নিজেও প্রতিষ্টা করেছেন বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক সংগঠন। সমাজ ও শিক্ষার উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তিনি ২০১২ সালে তার ব্যাক্তিগত উদ্যোগ ও নিজস্ব অর্থায়নে তার পিতা মাতার নামে প্রতিষ্টা করেন হাজী আব্দুল হক চৌধুরী-মোস্তফা খাতুন ট্রাস্ট।বিগত এক দশক থেকে এই সংগঠনটি কানাইঘাট উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বিতরনের পাশাপাশি শিক্ষা উপকরন বিতরন করে আসছে। ২০১৮ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও এই ট্রাস্টের সেবামূলক কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
এছাড়া তিনি গ্রীন প্ল্যান সিলেট নামক পরিবেশ বান্ধব সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্টালগ্ন থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।ইতিমধ্যে এই সংগঠনের উদ্যোগে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে ফলজ ও ঔষধি বৃক্ষ চারা রূপন করা হয়েছে।পরিবেশ রক্ষার দাবী জানিয়ে সংগঠনটির ব্যানারে ইতিমধ্যে মানববন্ধন, সভা,সেমিনার সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। সংগঠনটির পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রম সচেতন মহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে-যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি জৈন্তিয়া ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষন পরিষদের প্রতিষ্টালগ্ন থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।এই সংগঠনটি প্রাচীন জৈন্তা রাজ্যের গৌরবময় ইতিহাস,ঐতিহ্য,ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।এ লক্ষ্যে সংগঠনটি গবেষনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এছাড়াও তিনি জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদের সহসভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা আহবায়ক কমিটির আহায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
তিনি সিলেট আসাম ফ্রেন্ডস সোসাইটিরও আহবায়কের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।এই সংগঠনটি মূলত বিভক্ত আসামের জনসাধারনের মধ্যে বন্ধুত্ব রক্ষার সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও তিনি নিজস্ব উদ্যোগে সম্প্রতি এমসি পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্টা করেছেন।মূলত স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ জনসাধারনকে সাহিত্য সচেতন করে তোলার জন্য তিনি এই লাইব্রেরী প্রতিষ্টা করেন।তার এই স্বপ্নের লাইব্রেরীকে নিয়ে ভবিষ্যতে তার বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে।
মোশতাক চৌধুরী ১৯৯৭ সাল হতে ব্যাংক অফিসার্স ক্লাবের একজন আজীবন সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি উক্ত ক্লাবের সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্টান মূলক প্রতিষ্টানে সহযোগী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন এবং সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সাহিত্য সংগঠনের উপদেষ্টা হিসাবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
কর্মজীবন
কর্মজীবনেও একজন সফল মানুষ মোশতাক চৌধুরী। ১৯৯২-সালে তিনি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সীমান্তিক এর কানাইঘাট উপজেলা ম্যানেজার হিসাবে প্রথম কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।সেখানেও বরাবরের মতো সফলতা ও কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।
১৯৯৫ সালে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকে একজন অফিসার হিসাবে যোগদান করেন।২০০৬-সালে সেই চাকুরী হতে তিনি পদত্যাগ করেন এবং ২০০৭ সালের ১৪- জানুয়ারি ওয়ান ব্যাংক লিঃ এ সিনিয়র অফিসার হিসাবে যোগদান করেন এবং সিলেটের শেরপুর শাখায় ব্রাঞ্চ সার্ভিস ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।সেই থেকে অদ্যবধি ওয়ান ব্যাংকের একজন সুদক্ষ কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।বর্তমানে তিনি ওয়ান ব্যাংক,ইসলামপুর শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও ব্রাঞ্চ সার্ভিস ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাহিত্য জীবন
কৈশোরের প্রারম্ভেই মোশতাক চৌধুরীর সাহিত্য প্রেম জেগে উঠে। নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় পত্র পত্রিকায় কবিতা লিখা শুরু করেন।কলেজ ছাত্র থাকাকালীন সময়ে পত্রিকায় কলাম লিখা শুরু করেন। ছাত্রজীবনে প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস থেকেই তার মনে সাহিত্য প্রেমের সৃষ্টি হয়।সেই সাহিত্য প্রেম তীলে তীলে বেড়ে উঠে আজ তিনি একজন শেকড় সন্ধানী লেখক ও গবেষক।ইতিমধ্যে তার গবেষনাধর্মী ৩ টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।গ্রন্থগুলো বাংলাদেশ ও আসামে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। তার প্রকাশিত ৩ টি গ্রন্থ হলো-
১) কাছাড়ের ইতিহাস ঐতিহ্য ও নান্দনিকতা,
২) জৈন্তা রাজ্যের ইতিবৃত্ত,
৩) মরমি কবি ইব্রাহিম তশ্না জীবন ও গান।
এছাড়া প্রকাশ হবার অপেক্ষায় রয়েছে আরও ৪ টি গবে্ষনাধর্মী গ্রন্থ।গ্রন্থগুলো হলো-
১) সিলটি কথ্য ভাষার অভিধান,
২) বাংলা ভাষায় রক্তের দাগ,
৩) জীবন স্রোত (আত্মজীবনী মূলক গ্রন্হ)
৪) সিলেটের ২১ রত্ন
এছাড়াও সাহিত্য নিয়ে তার বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে
। তিনি তার প্রতিষ্টিত পাঠাগারটিও বৃহৎ পরিসরে সাজাতে চান।তিনি সাহিত্যের সাথে সংশ্লিষ্ট তরুনদেরও সম্মানিত করার মনোভাব সুদৃঢভাবে পোষন করেন।
সিলেটের বর্তমান সাহিত্য অনুরাগী কবি, লেখক,ছড়াকার,গল্পকার,গীতিকার ও নাট্যকারদের সাথে রয়েছে তার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক।তিনি তাদের সাথে সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেন।যেখানেই সাহিত্য আড্ডা,সাহিত্য বিষয়ক সেমিনার বা সাহিত্যের উপর আলোচনা চলে,মোশতাক চৌধুরী সেখানে শত ব্যাস্ততার মাঝেও উপস্থিত হন। তিনি কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এর একজন আজীবন সদস্য।
ভ্রমন জীবন
ব্যাংকার,সাহিত্যিক ও গবেষক মোশতাক চৌধুরীর মধ্যে আমরা ভ্রমন পিপাসু একজন মোশতাক চৌধুরীও দেখতে পাই। শত ব্যস্ততার মাঝে সময় ও সুযোগ পেলেই ছুটে যান শহর হতে গ্রাম,গ্রাম হতে হাওড়,খাল,বিল,ঝরনা প্রভৃতিতে।মাঝে মাঝে ছুটে যান দেশের বাইরে। ছুটে যান বিখ্যাত ব্যাক্তির জন্মস্থান, জন্মভিটায়।সাহিত্য ও গবেষনার প্রয়োজনে ছুটে যান প্রাচীন,পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক স্থানে।
প্রাচীন জৈন্তা রাজ্য নিয়ে গবেষনা করতে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন জৈন্তা অঞ্চলের গ্রাম হতে গ্রাম,পাড়া হতে পাড়া,মহল্লা হতে মহল্লা।এই অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও সংস্কৃতি নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন সকল ব্যাস্ততার ফাঁকে ফাঁকে।
ইতিমধ্যে প্রাচীন অবিভক্ত আসামের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে গবেষনা করতে বিভক্ত আসামের দুইটি জনপদের মানুষের কাছে বারবার ছুটে চলেছেন। সীমান্ত পেরিয়ে বারবার গিয়েছেন করিমগঞ্জ,শিলচর,,বদরপুর ও কলকাতায় ।শুধুমাত্র এই অঞ্চলের মানুষের প্রতি হৃদয়ের টান থেকেই নিজের শ্রমের অর্থ ব্যয় করে তার এই নিরন্তর ছুটে চলা।
কখনো গিয়েছেন মরমী কবি হাছন রাজ,কখনো গিয়েছেন ধামাইল গীতির প্রবর্তক রাধা রমন দত্ত,কখনো গিয়েছেন বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম এর বাড়ি।এসব ভ্রমন থেকে গবেষনা কর্মে সংযোজন করেছেন অনেক অজানা তথ্য।
শুক্র ও শনিবার তার সাপ্তাহিক ছুটি।এই ছুটির দিনে সময় ও সুযোগ পেলেই ছুটে যান নতুন কোন স্থানে।কখনো হাওড় বিলাসে ছুটে যান সিলেটের হাকালুকি,সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ায়। কখনো সমুদ্র বিলাসে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে যান কক্মবাজার,সেন্টমার্টিন, মহেশখালীতে।
আর নিজ জন্মস্থান কানাইঘাটে নিয়মিত আসা তো তার প্রাত্যহিক রুটিনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছে।কানাইঘাটের গ্রামে গ্রামে ছুটে চলেন।নিয়মিত খোজ নেন এলাকার মানুষের।
পারিবারিক জীবন
তিনি কানাইঘাট পৌরসভার বিষ্ণুপুর বড়বাড়ীর বাসিন্দা ও কানাইঘাট উপজেলা ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত নাজির মরহুম আলহাজ্ব তৌহিদ বখ্ত চৌধুরী ও নার্গিস বেগম চৌধুরী’র সুযোগ্য কন্যা জাহানারা বেগম চৌধুরী হেনা’র সাথে শুভ বিবাহে আবদ্ধ হন এবং বর্তমানে প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছেন।
বর্তমানে তিনি ২ সন্তানের জনক। একমাত্র মেয়ে নাইমা চৌধুরী মৌরী, পড়ছেন ইন্টারমিডিয়েটে বিজনেস স্টাডিজ নিয়ে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে। একমাত্র ছেলে কামরান রাজা চৌধুরী রাফি পড়ছেন ৯ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে ।
আগামীর স্বপ্ন ও পরিকল্পনা
মোশতাক চৌধুরী সবসময় একজন স্বপ্নবাজ মানুষ।অনন্য ব্যাক্তিত্ব নিয়ে চলা মোশতাক চৌধুরী তার স্বপ্নকে বাস্তবিক রূপ দান ও বিনির্মানে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শৈশব হতে অদ্যবধি। যেকোন স্বপ্নকে বাস্তবিক রূপ দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত যেন তার ঘুম নেই।বরং স্বপ্নকে বাস্তবিক রূপ দিয়েই তিনি ঘুমোতে যান।
২০০৩ সালে তিনি সিলেট নগরীর শাহপরান সংলগ্ন বাহুবল গ্লীনল্যান্ড আবাসিক এলাকায় তৈরী করেন তার স্বপ্ন কুটির “কানাইঘাট হাউস”।জন্মস্থান কানাইঘাটের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই তার বাসভবনের এমন নামকরন বলে জানা যায়।এই কানাইঘাট হাউসে বসেই গুনী ব্যাক্তিত্ব মোশতাক চৌধুরী সদা সৃষ্টিশীল কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন।এখানে বসেই আসে নতুন নতুন স্বপ্নের বীজ বুননের চিন্তা।এখানে থেকেই আসে সাহিত্য ও গবেষনার সকল সৃষ্টিশীল ভাবনা। অবসর সময়ে বাসায় বাগানও করেন।একজন আপাদমস্তক বৃক্ষপ্রেমী মানুষ মোশতাক চৌধুরী।ফলজ বনায়ন নিয়ে তার বৃহৎ স্বপ্ন ও পরিকল্পনা।
শত কর্ম ব্যস্থতার মাঝেও ছুটে চলেন শহর হতে গ্রাম।আবার গ্রাম হতে শহর।জননী, জন্মভূমি ও জন্মস্থানের প্রতি নিবিড় টান হতেই তার এই ছুটে চলা।গ্রামের বাড়িতে নিয়মিত যান বৃদ্ধ বাবা মায়ের সেবা করতে এবং গ্রামের মানুষের খোজ খবর নিতে।
জন্মস্থান কানাইঘাট উপজেলাকে নিয়ে রয়েছে তার হিমালয়সম স্বপ্ন।একটি আধুনিক, সুন্দর ও পরিকল্পিত কানাইঘাট বিনির্মানে তিনি কাজ করে যেতে চান । ভবিষ্যতে কানাইঘাট উপজেলার জনগণের সেবক হওয়ার মানচিত্রও রয়েছে তাঁর মাথায়। এজন্য তিনি এঁকে যাচ্ছেন আধুনিক কানাইঘাটের মহাপরিকল্পনা বা মাষ্টারপ্ল্যান। কানাইঘাটের সাহিত্যাঙ্গনের ভিতকে আরও শক্তিশালী দেখাও তার স্বপ্ন।আর এই স্বপ্নসমূহ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন দিন হতে দিন নিরলসভাবে।
পরিশেষে বলা যায়, একজন সাহিত্য গবেষকের যে সকল মানবীয় গুন থাকা আবশ্যক,মোশতাক চৌধুরী’র মধ্যে তাদের প্রতিটির উপস্থিতি রয়েছে।একজন গবেষক যেমন পরিশ্রমী তিনিও তার ব্যাতিক্রম নন।একজন গবেষক যেমন শেকড় সন্ধানী তিনি সেক্ষেত্রেও শতভাগ।একজন সাহিত্যিক মানুষের জীবন,সুখ,দুঃখ সম্পর্কে অনন্য জ্ঞানের অধিকারী থাকেন, তিনি সেক্ষেত্রেও অনন্য ও অসাধারন।একজন সাহিত্যিক গবেষককে মাটির মানুষ হতে হয়। তিনিও শতভাগ একজন মাটির মানুষ। মাটির মতো নরম তার মন।মাটির মতো বিনম্র তার চিত্ত।সহজেই যেকোন মানুষের সাথে মিশে যান।মোশতাক চৌধুরী যার সাথে মিশেন,সে ই তার বন্ধু হয়ে যায়।একজন প্রকৃত গবেষক সাহিত্যিকের এরকম গুন থাকা প্রয়োজন।
মোশতাক চৌধুরী দেশ,জাতি ও বিশেষ অঞ্চলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।সাহিত্যে অন্তপ্রাণ মোশতাক চৌধুরী আমাদেরকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।আমাদেরও উচিত মোশতাক চৌধুরীর মতো একজন শেকড়প্রেমী শেকড় সন্ধানী গবেষককে মূল্যায়িত করা। তাঁর মতো মাটি ও মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট গবেষক সাহিত্যিককে সম্মানিত করলে দেশ, জাতি ও সমাজের উৎকর্ষতা বাড়ে।বেড়ে যায় সভ্য সমাজের দিকে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার মানদন্ড।
লেখক পরিচিতিঃ মিলন কান্তি দাস
শিক্ষক,কবি ও কলামিস্ট
সিলেট।
মোবাইলঃ ০১৭১৬২৩৫৭৬৭