cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
তার দুই চোখে আলো নেই। তবুও গ্রামের সবার মোবাইল নম্বর মুখস্থ তার। অন্তত পাঁচ হাজার ব্যক্তির মোবাইল নম্বর মুখস্থ বলতে পারেন তিনি। নাম বললেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে দেন ফ্লেক্সিলোডের টাকা।
আবার কারও কণ্ঠ শুনে, কারও মোবাইল নম্বরের শেষের দুই ডিজিট বললেই ওই ব্যক্তির মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেন জন্মান্ধ মিজানুর রহমান (২২)।
অবিশ্বাস্য প্রতিভাবান মিজানুর রহমানের বাড়ি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল টাঙ্গারিপাড়া গ্রামে। এই গ্রামের কৃষক মনতাজ আলী ও মোমেনা খাতুন দম্পতির সন্তান মিজানুর। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছোট। বড় বোন মরিয়মের বিয়ে হয়েছে। সংসারে মিজানুর ও তার মা-বাবা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও অন্ধ হওয়ায় বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি মিজানুর। অভাবের সংসারে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে সংসারের হাল ধরতে ২০১৭ সালে ফ্লেক্সিলোডের দোকান দেন তিনি। ব্যবসার শুরুতে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হলেও এখন আর সমস্যায় পড়েন না মিজানুর। গত দুই বছরে আত্মবিশ্বাস ও প্রবল স্মরণশক্তির মাধ্যমে গ্রামের পাঁচ হাজার ব্যক্তির মোবাইল নম্বর মুখস্থ করে ফেলেছেন তিনি। এখন গ্রামের যেকোনো ব্যক্তি নাম বললেই তার মোবাইল নম্বরে ফ্লেক্সিলোড, বিকাশ ও রকেট করে রাখা পাঠান মিজানুর।
মিজানুরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের তিন হাজার ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর হুবহু বলতে পারেন মিজানুর। এর বাইরে বাকি দুই হাজার ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর জানেন তিনি। এক্ষেত্রে মোবাইল নম্বরের শেষ দুই ডিজিট বললেই তিনি বুঝতে পারেন ওটা কার নম্বর।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি মিজানুরের দোকানে যে কেউ একবার ফ্লেক্সিলোড অথবা টাকা লেনদেন করলে তার মোবাইল নম্বরটি মুখস্থ করে ফেলেন। এ পর্যন্ত যারা তার দোকানে লেনদেন করেছেন তাদের সবার মোবাইল নম্বর মুখস্থ তার।
মিজানুর রহমান বলেন, ব্যবসার শুরুতে কিছুটা সমস্যা হতো। কিন্তু এখন আর হয় না। চোখে না দেখলেও কোন বাটনে কোন সংখ্যা এটা মোবাইলের ওপর হাত রেখে বলে দিতে পারি। ব্যবহার করতে করতে আমার সব জানা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ফ্লেক্সিলোডের ক্ষেত্রে মোবাইলে কোন বাটন টিপতে হবে, কোন অপশনে গিয়ে টাকা পাঠাতে হবে এসব এখন আমার জন্য সাধারণ বিষয়। ওয়ালটন এবং নকিয়ার অনেক ধরনের মোবাইল ব্যবহার করেছি। এসব ব্যবহারে আমার কোনো সমস্যা হয় না। বিকাশ বা রকেটে টাকা পাঠাতে কোনো সমস্যা নেই আমার। শুধু ইনকামিংয়ের ক্ষেত্রে আমাকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি হট লাইনে কথা বলে নিশ্চিত অথবা অন্য কারও সহযোগিতা নিতে হয়।
মিজানুর রহমান বলেন, দোকান ঘরের ভাড়া নেয় না মালিকপক্ষ। বাজারে প্রায় ৮-১০টি ফ্লেক্সিলোডের দোকান রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ আমার দোকান থেকে মোবাইলে লেনদেন করেন। এতে দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। এই দিয়ে অতিকষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করছি। অর্থ সংকটের কারণে ব্যবসার পুঁজি বৃদ্ধি করতে পারছি না। কেউ যদি আমার দুই চোখের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতেন তাহলে পৃথিবীর আলো দেখতে পারতাম।
রৌমারী উপজেলার টাপুরচর বাজারের ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন, শামীম, সাইফুল ও ফিরোজ জানান, মিজানুরের শ্রবণশক্তি খুবই তীক্ষ্ণ। স্বাভাবিক মানুষের মতোই ফ্লেক্সিলোডের দোকান তার। গ্রাহকের সঙ্গে লেনদেনে কোনো ঝামেলার ঘটনা আমাদের চোখে পড়েনি। ফ্লেক্সিলোড করতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড লাগে তার। মোবাইল নম্বর তার লিখতে হয় না। বাজারের সবাই তার দোকানেই মোবাইলে লেনদেন করে।
মিজানুরের দোকানের মালিক চাঁন মিয়া বলেন, আমি যখন জানতে পারি দরিদ্র পরিবারের অন্ধ ছেলে মিজানুর ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করবেন তখনই তাকে দোকান দিয়েছি। তার কাছ থেকে ভাড়া নেই না। সে যত দিন ব্যবসা করবে ততদিন আমি তার কাছ থেকে ভাড়া নেব না।
মিজানুরের বাবা মনতাজ আলী বলেন, আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে মিজানুর জন্ম থেকেই অন্ধ। অভাবের সংসারে মিজানুরের চিকিৎসার জন্য উলিপুর, রংপুর ও দিনাজপুর চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার চোখের অপারেশন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পারিনি। বর্তমানে ১০ শতক বসতভিটা ছাড়া আমার কিছুই নেই। কেউ যদি ছেলের চিকিৎসা খরচ দেয় আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।
বন্দবেড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবীর হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে আমার পরিষদ থেকে যতটুকু সাহায্য করার দরকার আমি তা করব।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান বলেন, আমি মিজানুরের বিষয়টি জানতে পেরেছি। খোঁজখবর নিয়ে মিজানুরের জন্য সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব। সূত্র: জাগোনিউজ