cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
প্রুশিয়ার সেনা অফিসার কার্ল ফন ক্লাউজাউইট্জ তার ‘অন ওয়ার’ বা ‘যুদ্ধ নিয়ে’ লিখেছিলেন, যে এলাকায় যুদ্ধ হচ্ছে, সেখানকার নদী, জঙ্গল, পর্বত আর অন্যান্য ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যগুলি শুধু যে ‘শত্রুর এগিয়ে আসা’য় বাধা দেয়, তা নয়। ওইসব ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যগুলো সবার ‘নজর এড়িয়ে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ারও সুযোগ’ করে দেয়। তার ওই কথাগুলো ইরানের সেনাবাহিনী একেবারে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অন ওয়ার’ বা ‘যুদ্ধ নিয়ে’ লেখাগুলো মেনেই ইরানের সেনাবাহিনী দেশের মাঝে থাকা খাড়া পাহাড়গুলো ব্যবহার করে সেগুলোর নিচ দিয়ে একাধিক সুড়ঙ্গের একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এই ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিসাইল সিটি’ বা ‘ক্ষেপণাস্ত্রের শহর’। নানা আকার আর ক্ষমতার ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করে রাখা হয় ওই সব সুড়ঙ্গ শহরে। তবে শুধু মজুদ নয় বরং ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করাও হয় সেখানে। ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি আটকাতে যখন ইসরায়েল ইরানের ওপরে বোমা হামলা শুরু করল, তার বেশ কয়েক মাস আগেই এরকমই একটি নতুন ‘মিসাইল সিটি’র কথা জানিয়েছিলেন ইরানের সামরিক নেতৃত্ব।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক দশক ধরে রকেট মজুত করার যে ভূগর্ভস্থ ঘাঁটিগুলি তৈরি করা হয়েছে, সেগুলিকে ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর বা আইআরজিসি-ই ‘মিসাইল সিটি’ নাম দিয়েছে। দীর্ঘ আর গভীর সুড়ঙ্গগুলি একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। সারা দেশেই মাটির নিচে ছড়িয়ে আছে এইসব ঘাঁটিগুলো। বিবিসির ফার্সি বিভাগের ফারজাদ সেফিকারান কয়েক মাস আগেই ব্যাখ্যা করেছিলেন যে পাহাড়ি এলাকাতেও ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্যালিস্টিক আর ক্রুজ মিসাইল সহ অন্যান্য কৌশলগত অস্ত্র, যেমন ড্রোন আর বিমানপ্রতিরোধী ব্যবস্থাপনা এই সব মিসাইল সিটির গভীরে মজুত করা হয়, যাতে প্রয়োজন মতো সেগুলো ছোঁড়া যায়। ফেব্রুয়ারি মাসে আইআরজিসি-র জারি করা একটি ‘টাইম ল্যাপ্স’ ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল প্রায় এক ডজন ট্রাক সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাকগুলির ট্রেলারে চাপানো রয়েছে রকেট লঞ্চার। এর পরের দৃশ্যপট বদলে যায়। দেখানো হয় একটি সমুদ্রতীর। সেখানে দাঁড়ানো একটি ট্রাক থেকে একটা ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হল সমুদ্রে- এমনটাই ছিল পরবর্তী ছবি। ইরানের সামরিক কমান্ডাররা স্পষ্ট ভাবেই বলেছেন যে ‘মিসাইল সিটি’গুলি শুধুই রকেট মজুত রাখার স্থাপনা নয়। এগুলির কয়েকটিতে রকেট উৎপাদনও করা হয়।
তবে এইসব মিসাইল সিটি ঠিক কোথায় অবস্থিত, আর কতগুলিই বা এ ধরনের ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি আছে, সেই সংখ্যা জানা যায় না। তবে আইআরজিসি-র বিমান বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ্ সাম্প্রতিকতম মিসাইল সিটির তথ্য দেওয়ার সময়ে নিশ্চিত করেছিলেন যে, এরকম ‘বহু’ স্থাপনা আছে। আয়াতোল্লাহর শাসনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বোমা হামলার গোঁড়ার দিকে যে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ইরানি সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন, আলি হাজিজাদেহ্ তাদের অন্যতম।
মৃত্যুর আগে জেনারেল হাজিজাদেহ্ সাম্প্রতিকতম ‘মিসাইল সিটি’র যে ভিডিওটি উপস্থাপন করেছিলেন, সেখানেই স্পষ্ট করে তিনি বলেছিলেন, ওই ঘাঁটিটি মাটির ৫০০ মিটার গভীরে নির্মিত হয়েছে আর তার ওপরে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্তরের কংক্রিটের ঢালাই করা ছাদ। ইরানের সামরিক কর্মকর্তারা এই সব ভূগর্ভস্থ ‘মিসাইল সিটি’গুলি তৈরিই করেছেন ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সম্ভাব্য হামলা থেকে যাতে রক্ষা করা যায়।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক ‘ফাউন্ডেশন ফর দ্য ডিফেন্স অফ ডেমক্র্যাসি’র ইরান বিভাগের পরিচালক বেহনাম বেন তেলেব্লু বিবিসি ওয়ার্ল্ড টিভিকে বলেন, উপগ্রহের নজর এড়িয়ে যাতে ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করা আর নিক্ষেপ করা যায়, সেজন্যই ইরান এই স্থাপনাগুলি বানিয়েছে।
প্রাক্তন ইউএস মেরিন ও লন্ডন-ভিত্তিক বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা গ্রে ডাইনামিকস-এর বিশ্লেষক মাইকেল এলমার ২০২১ সালে প্রকাশিত তার এক লেখায় জানিয়েছিলেন যে, ইরানের ওই দাবিগুলি যদি সত্যি হয়, তাহলে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে থাকা সবথেকে শক্তিশালী বোমা ফেলেও ওই ইরানি ঘাঁটি ধ্বংস করতে বেগ পেতে হবে।
তার ব্যাখ্যা, ‘তবে রকেট উৎক্ষেপণের জন্য পাহাড় ফুটো করে ইরানিরা যে ‘লঞ্চিং বে’ বানিয়েছে, মার্কিনীরা যদি সেখানেও বোমা ফেলতে পারে, তাহলেই ওই ঘাঁটিগুলি অকেজো হয়ে পড়বে। তবে বেন তেলেব্লু বলছেন যে, ওই ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মূল সমস্যা হবে ওগুলি আগে তাদের খুঁজে বার করতে হবে।
বিবিসি মুন্ডোকে তিনি বলেছেন, ওগুলি আগে চিহ্নিত করতে হবে। এখনও পর্যন্ত এটা অজানা যে ওই ঘাঁটিগুলি কোথায় রয়েছে।
মার্কিন থিংক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বা সিএসআইএসের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রকল্পের গবেষক প্যাট্রিশিয়া ব্যাজিল্জিকও একই মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ লক্ষ্যবস্তুগুলি কঠিন, তবে সেগুলোতে আক্রমণ চালানো যাবে না এমনটা নয়।
বিবিসি মুন্ডোকে তিনি বলেন, ইসরায়েলের শক্তিশালী বোমারু জেট বিমান যদি এই ‘মিসাইল সিটি’গুলিতে যদি হামলা চালাতে পারে, তাহলে ইরানের মজুত অস্ত্রভাণ্ডারে আরও আঘাত করা হবে। তবে ইরান যে শুধুই তার ক্ষেপণাস্ত্র মজুত ভাণ্ডার মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছে, তা নয়। তাদের কিছু যুদ্ধ বিমান, এমনকি কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজও তারা ভূগর্ভস্থ জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে।
অন্যদিকে, প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এইসব ভূগর্ভস্থ স্থাপনার যে ছবিগুলি তেহরান প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে খেইবার শেকান, হজ কাসেম, এমাদ, সেজ্জিল, কদর-এইচ আর পাভেহ্ ক্রুজ মিসাইলের ছবি দেখা গেছে। ইরান দাবি করে, এইসব রকেট দিয়ে তারা দুই হাজার কিলোমিটার দূরের দেশেও হামলা চালাতে সক্ষম। অর্থাৎ এই রকেটগুলি ইসরায়েল, সৌদি আরব, ভারত, রাশিয়া আর চিনে হামলা চালাতে পারবে। ইরান যখন ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ইসরায়েলের ওপরে হামলা চালিয়েছিল, তখন এমাদ ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছিল। ইসরায়েলের মধ্যভাগে অবস্থিত নাভাতিম বিমান ঘাঁটি ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক হামলায় সেজ্জিল মিসাইলও ছুঁড়েছে ইরান, কিন্তু সেগুলি ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিতে পেরেছে বলে জানিয়েছে ইউএস ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার বা আইএসডব্লিউ। ইরানি অস্ত্র বিজ্ঞানীরা নব্বইয়ের দশকে ১৮ মিটার লম্বা, দুই ধাপ বিশিষ্ট সেজ্জিল ব্যালিস্টিক মিসাইলটি তৈরি করেছিলেন। এটি দুই হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকেও নিশানা করতে পারে। এখন সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার দেখে একটা বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে যে সম্ভবত ইসরায়েলি আক্রমণ সামলাতে সমস্যা হচ্ছে বলেই দেশের অনেকটা অভ্যন্তর থেকে ইরানকে মিসাইল হামলা চালাতে হচ্ছে।