সর্বশেষ আপডেট : ৯ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

দুপুরে প্রথম সন্তানের জন্ম, রাতে ডেঙ্গুতে মারা গেলেন মা

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

প্রথম মা হতে চলেছেন। এ নিয়ে কতই না উচ্ছ্বাস, কতই না উত্তেজনা শান্তা সূত্রধরের। ধীরে ধীরে সময়টাও এগিয়ে আসছিল। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে শঙ্কার মেঘ দেখা দেয়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এই প্রসূতির শারীরিক জটিলতা বেড়েই চলছিল। অবশেষে গতকাল সোমবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। মেয়ের মুখ দেখে ওই দিন রাতেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন শান্তা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন শান্তা। একই হাসপাতালে ওই দিন বিকেলে মারা যান আরেক নারী শাকিলা আকতার (২৬)। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া শান্তা নগরের লাভ লেন এলাকার বাসিন্দা। শাকিলার বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে।

শান্তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ৭ সেপ্টেম্বর। ডেঙ্গু থাকায় চিকিৎসক এবং স্বজন সবাই দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলেন। গতকাল সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। এর পরপরই তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই রাত ১০টা ৫০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।

এর আগে বেলা দুইটার দিকে শান্তা সন্তানের জন্ম দেন। মেয়ে হওয়ায় খুশিও ছিলেন শান্তা। প্রথম বাবা হওয়ার আনন্দে ভাইকে মিষ্টি নিয়ে আসতে বলেন শান্তার স্বামী সাগর দাশ। সাগরের মামাতো ভাই আকাশ দে বলেন, ‘বাচ্চা হওয়ার পর আমাকে ফোন করে দাদা মিষ্টি নিয়ে যেতে বলেন। পরে আমি হাসপাতালে গিয়ে বউদির সঙ্গে কথা বলি। তিনি তখন ওয়ার্ডে ছিলেন। তখনো কথা বলছিলেন। সন্ধ্যা থেকে তাঁর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। একপর্যায়ে তাঁকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানেই রাতে মারা যান।’

শান্তার নবজাতক কন্যাটি এখন সুস্থ আছে। তবে বুকের দুধের জন্য কান্নাকাটি করছে। মায়ের অনুপস্থিতিতে এই সন্তানকে কীভাবে বড় করবেন, তা নিয়ে চিন্তিত স্বজনেরা। আকাশ বলেন, এক স্বজনের বুকের দুধ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক কান্নাকাটি করছে মেয়েটি।

অন্যদিকে চার দিন ধরে ডেঙ্গুর সঙ্গে যুদ্ধ করে গতকাল শাকিলা আকতার মারা যান। মৃত্যুর আগে খুব করে সন্তানদের দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। বিশেষ করে দেড় বছরের দুধের শিশু মিমকে।

কিন্তু সন্তানেরা ছিল গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। সাত দিন ধরে শাকিলা আকতার জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। বাড়িতেই আক্রান্ত হন। তিন দিন আগে চকরিয়ায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শাকিলাকে গতকাল সকালে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

শাকিলার বোন মারুফা বলেন, ‘বোনের পেটে পানি জমে গিয়েছিল। চকরিয়ায় পারেনি। তাই চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানেই মারা যায় সে। তার বাচ্চাগুলো এখনো খুব ছোট। ছোট দুটি বাচ্চা বুঝতে পারছে না মা নেই। বড়টা কিছুটা বোঝে।’

শাকিলার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে আট বছরের মোস্তাকিম মাদ্রাসায় পড়ে। মেজ ছেলে মুনতাকিমের চার বছর বয়স। দুধের শিশুটিকে নিয়েই এখন স্বজনদের যত চিন্তা। সন্তানেরা এখন বাবা সাইফুলের কাছে রয়েছে। সাইফুল একটি আসবাবের দোকানে কাজ করেন। শাকিলার ভাই ইসমাইল বলেন, ছোট মেয়েটি বুকের দুধের জন্য কান্নাকাটি করছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: