cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
বাংলাদেশের যাদের নুলস্তা আসে, নুলস্তা আসার পরে যখন সে সিরিয়ালের জন্য জমা দিতে যায় তখন সে সিরিয়ালটা পায় না। আমি নিজেও আমার এক ভাইয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সিরিয়াল নিয়েছি -মাশফিকুর রহমান মুকুল, ভুক্তভোগী
ইতালির ভিসাপ্রক্রিয়ার প্রাথমিক স্তর হলো নুলস্তা বা ওয়ার্ক পারমিট। সংশ্লিষ্ট কম্পানি থেকে নুলস্তার কপি হাতে পাওয়ার পর ভিসা পেতে ভিএফএসে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয় কর্মীদের। তবে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কৌশলে দালালদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে ভিএফএস। এই সুযোগে কর্মীপ্রতি ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা চলে যাচ্ছে দালালের পকেটে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ১৩ মে রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর সার্কেলে নাফি টাওয়ারে অবস্থিত ভিএফএস গ্লোবালের কার্যালয়ে সরেজমিনে গেলে কথা হয় অনেক ভুক্তভোগীর সঙ্গে। সন্ধান মেলে অগণিত দালালেরও। ছদ্মবেশে ভিসাপ্রত্যাশী কিংবা ভিসাপ্রত্যাশী কর্মীর স্বজন পরিচয়ে আলাপ এগিয়ে নিতেই আসে লাখ টাকার টোপ।
দালালকে বলতে শোনা যায়, এক লাখ টাকায় রাতারাতি দেওয়া যায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট। এর জন্য ওটিপি বা কোনো বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয় না। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে রয়েছে। এদিকে ব্যক্তিগতভাবে অনলাইনে আবেদন করলে ওটিপি আসতে সময় লাগে ৯ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা।
তবে দালালের মাধ্যমে করলে কোনো ওটিপির প্রয়োজন হয় না। হাতে আসা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন দালাল ওটিপি ছাড়াই এক থেকে ৪০০ জনের জন্য স্লটের তারিখ নিতে পারে।
ইতালির ভাষা প্রশিক্ষক মাশফিকুর রহমান মুকুল নিজেও একজন ভুক্তভোগী। কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমি ইতালিতে যেতে ইচ্ছুকদের ভাষা শিখাই। আমাদের এখান থেকে প্রচুর ক্লায়েন্ট ভাষা শিখেছে তবে মূল সমস্যাটা হচ্ছে, বাংলাদেশের যাদের নুলস্তা আসে, নুলস্তা আসার পরে যখন সে সিরিয়ালের জন্য জমা দিতে যায় তখন সে সিরিয়ালটা পায় না।
আমি নিজেও আমার এক ভাইয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সিরিয়াল নিয়েছি।’
অন্যদিকে দালালের ছদ্মবেশ ধারণ করে কথা হয় দালালদের সর্দার রাব্বির সঙ্গে। তিনি নানা কথার ভিড়ে বলেন, ‘আমরা এক লাখ টাকার নিচে কাজই করি না। ডেট নেই তো ভাই। মানুষ ডেটের লাইগা হাহাকার করতাছে। এখন যদি কই দুই লাখ, ডেট আছে কালকে দৌড়ে জমা দিব ফাইল।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভাই যত যারে কইবেন ঘুরে ফিরে কাজ আসবে আমাদের কাছেই। মূল হচ্ছি আমরা। হ্যারে, পাসপোর্ট দিবেন, পাসপোর্ট দেখবেন আমার কাছে। ভাই যা চাইবেন তা, কাজের পরে টাকা। বাটপারি-চিটারি পছন্দ করি না। ভিএফএসের লগে অফিস। কোটি টাকা লইয়া বইসা আছি শুধু ডেটের লাইগা। আমরা যদি চাই আজকে ১০০টা ফাইল জমা দিমু, ১০০টা জমা দিতে পারব। এক কোটি টাকা দিব ভিএফএসের ভেতরে। বুচ্ছেননি ভাই, আমরা টাকার বস্তা লইয়া বইয়া রইছি। আমরা ব্যবসা করি, কোনো চুরি করি না।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২২ সাল থেকে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহজলভ্য হলেও ২০২৩ সালের শুরুর দিকে এখানে ঢুকে পড়ে কালোবাজারি। অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য ভিএফএস এবং দালালদের যোগসাজশে একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়। এর ফলে ভিসাপ্রত্যাশীরা নিজে চেষ্টা করে কোনোভাবেই ওয়েবসাইটে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারেন না। ভিএফএসের নোটিশ মোতাবেক প্রতি মাসের ২৫ তারিখ পরবর্তী মাসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রদান করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ৯টায় অনলাইনে স্লট ওপেন করলে প্রথম ৩ মিনিটে তিন হাজার অ্যাপয়েন্টমেন্ট শেষ হয়ে যায়, যা কি না রীতিমতো আলাদীনের দৈত্যের মতো কাজ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালি যাওয়ার নুলস্তা পান সিলেটের হবিগঞ্জের বাসিন্দা হৃদয় ইসলাম খান। কিন্তু তিন মাস পার হয়ে গেলেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাননি হৃদয়। হন্যে হয়ে ঘুরছেন অনেকের দ্বারে। কিন্তু কোনো কিনারা হয়নি। হৃদয় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের চেষ্টা করে যাচ্ছি। যখন থেকে স্লট ওপেন হয়েছে, তখন থেকেই অ্যাপয়েন্টমেন্টের চেষ্টা করছি। এরপর ৩১ মার্চ মেইলও করেছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না। নুলস্তার মেয়াদ আছে আর তিন মাস। মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়েছি।’
কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নুলস্তা পেলেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছি। নুলস্তা পেতে অনেক টাকা খরচ করেছি। অথচ পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে পারছি না। নুলস্তার মেয়াদও চার মাস পার হয়ে গেছে। ভিএফএস কর্মকর্তাদের কাছে গেলে তাঁরা পাত্তাই দিচ্ছেন না।’
একই কথা বলেন আরেক ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভিএফএস শুধু একটা কথাই বলে, দূতাবাসে যান। কিন্তু আমরা তো দূতাবাসকে চিনি না। আমরা পাসপোর্ট জমা দিয়েছি ভিএফএসে। তারাই এর জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য। আমাদের দূতাবাসে ঢোকার কোনো উপায়ও নেই।’
অ্যাপয়েন্টমেন্টের অব্যবস্থাপনার কারণে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের দায় ভিএফএস গ্লোবাল এড়াতে পারবে না বলে জানান ইতালির মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট ইমাম হোসাইন রতন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, অ্যাপয়েন্টমেন্টের ব্যাপারটা তো ইতালি দূতাবাস মেন্টেন করে না। যদিও ভিএফএস গ্লোবাল দূতাবাসের কথা বলে। দূতাবাস তো বলে না যে তোমরা রাতে ৫ মিনিটের জন্য স্লট ওপেন কর বা অমুক সময়ে বন্ধ রাখ। এই অব্যবস্থাপনার দায়টা ভিএফএস গ্লোবালের এড়ানোর আসলে কোনো উপায় নেই।
এ ধরনের দুর্ভোগ যারাই ঘটাক না কেন তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলে জানান ব্র্যাক অভিবাসন প্রগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ইতালির শ্রমবাজার আমাদের জন্য একটি বড় শ্রমবাজার। কিন্তু আমরা দেখছি এই ভিসাটা পেতে একটি দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় জালিয়াতির খবরও আমরা শুনতে পাচ্ছি। এর ফলে আমাদের কর্মীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই দুর্ভোগটা যাতে কমে এবং না থাকে সে জন্য প্রথমে আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্টের ঝামেলা কমাতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিএফএস গ্লোবালের বাংলাদেশ প্রধান শান্তনু ভট্টাচার্য বলেন, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ই-মেইল সিস্টেমে করা হয়েছে। যাঁরা ওয়ার্ক ভিসার ই-মেইল পাঠিয়েছেন তাঁদের পর্যায়ক্রমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। যেমন—ই-মেইল আসছে তেমনভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট সবাইকে দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় চার হাজারের বেশি মেইল চলে গেছে।’
ভেতরেও দালালদের আনাগোনা
ভিএফএস গ্লোবালের ভেতরে সাধারণ মানুষ ঢুকতে না পারলেও বসে থাকে দালালচক্র। কালের কণ্ঠ’র হাতে আসা ভিডিওতে এই চিত্র দেখা গেছে। ভিডিওতে দুজন দালালকে দেখা গেছে। একজনের নাম দুলাল। আরেকজনের নাম রবিন। এই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রবিন ভিএফএস গ্লোবালের ভেতরে অবাধে চলাচল করছে এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছে। এই রবিনের সঙ্গে ভিএফএসের ভেতরে কর্মচারী বাপ্পির ফোনালাপও এসেছে কালের কণ্ঠ’র হাতে। ফোনালাপে রবিন বাপ্পিকে বলছে, ‘তারিখ পাওয়ার আগে অগ্রিম দুই হাজার টাকা দিতে হবে। তারিখ পাওয়ার পর আরো আট হাজার টাকা দিতে হবে।’
বাপ্পির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ তৈরি না হলেও প্রতিবেদকের রবিনের সঙ্গে কথা হয়। রবিনের সঙ্গে দেখা করার জন্য ফোন দিলে ফোন ধরে রবিন বলেন, ‘আমি তো আজ ব্যস্ত আছি, সম্ভব না। আমি দেখি শুক্রবার ফ্রি থাকব। শুক্রবার দেখা করেন।’ তখন তাঁর সঙ্গে ওই সময় দেখা করতে সময় চাইলে তিনি বলেন, ‘পরে জানাতে পারব। এখন তো একটু কাজে ব্যস্ত থাকি।’
এর পরদিন দেখা করতে চাইলে রবিন বলেন, ‘এখন সম্ভব না, এখন আমি তো আরেক জায়গায় যাব। অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য দেখা করার প্রয়োজন নেই। আপনি আমার ওয়াটসঅ্যাপে পাসপোর্ট ও নুলুস্তার কপি পাঠিয়ে দিন। আমি দূতাবাসে মেইল করে দিলে আপনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে যাবেন। বেশি সময় লাগবে না।’
তার পরও তাঁর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করলে পরদিনের কথা বলে তিনি বলেন, ‘তাহলে কাল আমি পল্টন বা ভিএফএসের সামনে আসতে বলব। কাল আমার দূতাবাসে কাজ আছে, তো দেখে বলব। কিন্তু সময় বলেন না। বলেন আমি সকালে ফোন দিয়ে জানিয়ে দেব। এর পরের দিন থেকে আর রবিনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।’