cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
তিন ফসলি জমির বুকে চেপে বসেছে ইটভাটা। সেখানে জ্বলছে আগুন। আর তাতে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে ক্রমাগত। ইটভাটার ধোঁয়া আর বৃক্ষ নিধনের ফলে বিষাক্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ। এমনই ভয়াল বাস্তবতার মুখোমুখি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট।
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চুনারুঘাট উপজেলায় গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। এসব ভাটার প্রায় সবক’টিই গড়ে তোলা হয়েছে উর্বর ফসলি জমির বুকে। একই সঙ্গে সেখানে ইট তৈরির জন্য কেটে নেওয়া হচ্ছে আশপাশের ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি। এতে উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষিজমি, নিধন হচ্ছে বৃক্ষ, চরমভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে রোগবালাই। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হলেও নির্বিকার প্রশাসন। অভিযান আর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি অঢেল।
হবিগঞ্জ জেলার অন্যতম শস্য-শ্যামল উপজেলা হিসেবে খ্যাত চুনারুঘাট। পর্যটকদের মনকাড়া নৈসর্গিক চুনারুঘাটে রয়েছে সাতছড়ি, কালেঙ্গার মতো বনাঞ্চল, বিস্তীর্ণ চা বাগান। অর্থকরী ফসলের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত এ উপজেলার পরিবেশ এখন ভয়াবহ হুমকির মুখে। এ উপজেলায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের বসবাস। প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে কৃষির ওপর।
এখানে গড়ে ওঠা প্রায় ২৭টি ইটভাটার মধ্যে অধিকাংশের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ইটভাটার কালো ধোঁয়া মানবদেহ ও পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি করছে। ভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত মাটি নেওয়া হচ্ছে ফসলের জমি থেকে। এর ফলে ফসলি জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। সরকারি নিয়মনীতি ও প্রচলিত বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলি জমি ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে এসব ভাটা। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গ্রাম ও বনাঞ্চলের কাঠ। এর ফলে উজাড় হচ্ছে গ্রামের গাছপালাসহ বিভিন্ন বন।
সরকারি নীতিমালায় নিষেধ থাকলেও আবাদি জমি ও বসতবাড়ির কাছেই এসব ইটভাটার অবস্থান। একাধিক মালিক তাদের ইটভাটার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসতবাড়ি, বাগান ও ফসলি জমি থাকার কথা স্বীকার করেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। চলছে কার্যক্রম। অথচ তা দেখার কেউ নেই।
সদর ইউনিয়নের জাজিউতায় শোভা, তিতাস, তরফ নামে তিনটি এবং সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের সুন্দরপুর হেলথ কমপ্লেক্সের অদূরে আবাদি জমির মাঝখানে দুটি ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। এই ইউনিয়নের সুন্দরপুর গ্রামে জনবসতিপূর্ণ ও আবাদি জমির মাঝে ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। গ্রামের লোকজনের বাড়ির পেছনে দি সান ও মিতালি ইটভাটাটি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নির্মাণ করা হয়েছে।
সুন্দরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দি সান ও মিতালি ইটভাটায় নতুন ইট তৈরি করা হচ্ছে। এখানে কয়লা ভাঙানোর মেশিনের ধোঁয়া বের হচ্ছে অনর্গল। জানা গেল, আশপাশের ফসলি জমি লিজ নিয়ে ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা ছায়া বেগম জানান, এই এলাকায় গাছগাছালিতে তেমন ফল ধরে না। ভাটার কারণে সমস্যা লেগেই আছে। আশপাশের আবাদি জমির টপ সয়েল (উর্বর মাটি) কেটে ইটভাটায় আনা হচ্ছে।
গ্রামের কৃষকরা প্রভাবশালী ইটভাটার মালিকদের ভয়ে কথা বলেন না। তারা বলছেন, যাদের ভয়ে খোদ প্রশাসন কাবু, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ভাটার কারণে জমির আবাদ নিয়ে চিন্তায় আছেন তারা। ভয়ে কিছু বলতেও পারছেন।
চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের জাজিউতায় গড়ে তোলা হয়েছে শোভা ব্রিক ফিল্ড। ভাটার উত্তর দিকে অবস্থিত জমির মালিক বলেন, আবাদি জমির মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ করা নাকি বেআইনি। তাহলে এগুলো কোন আইনে চলছে! ইটভাটার মালিক ও পরিচালক কদ্দুছ ও সালাম মিয়া জানান, তাদের সব কাগজ আছে। আইন মেনেই ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। কাগজে কোনো সমস্যা নেই।
এমন স্থানে কীভাবে ইটভাটার অনুমোদন দেওয়া হলো তা জানতে চাইলে হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আখতারুজ্জামান টুকু বলেন, ২৭টির মধ্যে বেশ কয়েকটি ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেয়নি। তাই সেগুলো অবৈধ। এসব ভাটার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভাটার অবস্থান হতে হবে লোকালয় ও এলজিইডির পাকা সড়ক থেকে ন্যূনতম আধা কিলোমিটার দূরে। প্রস্তাবিত জায়গাটি আবাদি কিনা সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগের প্রত্যয়নপত্র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের অনাপত্তি, ট্রেড লাইসেন্স, আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র হাতে পেলে তদন্ত করে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, এসব অনুমোদন আর নথি ছাড়াই অনেক ইটভাটা চলছে; যা প্রমাণ করে ভাটার মালিকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সমঝোতা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তিন ফসলি জমি নষ্ট করে ইটভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে কৃষির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আবাদি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করায় কৃষি বিভাগ থেকে কোনো প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়নি।