cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
এশিয়ার অন্যতম বড় এবং নামকরা ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতাল, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের চিকিৎসা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির। যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্ব থেকে ধনী রোগীরা তাদের কাছে আসে অস্ত্রোপচারের জন্য। প্রতি বছর ১২০০টির বেশি কিডনি প্রতিস্থাপনে সহায়তা করে হাসপাতালটি। তবে এসবের আড়ালে দরিদ্রদের কিডনি কিনে ধনীদের কাছে বিক্রি করে হাসপাতালটি।
সম্প্রতি ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এ ভয়ংকর তথ্য।
ঐ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চিকিৎসা সেবার আড়ালে কিডনি ব্যবসার বৈশ্বিক চক্রে জড়িয়ে গেছে অ্যাপোলো হাসপাতাল। মিয়ানমারের দরিদ্র তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি বিক্রি করতে প্রলুব্ধ করছে হাসপাতালটি। তাদের থেকে কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ ক্রয় করত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি হাসপাতাল গ্রুপটি। এরপর তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা ধনী রোগীদের কাছে উচ্চমূল্যে অঙ্গ বিক্রি করত হাসপাতালটি।
টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, কিডনি বেচাকেনার পুরো প্রক্রিয়াটিতে অনেকগুলো ধাপে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়। পরিচয় সম্পর্কিত নথি জাল করা হয়। দাতাকে রোগীর আত্মীয় হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য পারিবারিক ছবি মঞ্চায়িত করা হয়। যেখানে ভারত এবং মিয়ানমারের আইন অনুসারে, একজন রোগী স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে অঙ্গ নিতে পারেন না।
এই চক্রের একজন এজেন্ট টেলিগ্রাফের প্রতিবেদককে বলেছেন, এটি বড় ব্যবসা। এর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দুই দেশের সরকারের মধ্যে এ সংক্রান্ত বাধাগুলো অপসারণে যোগসাজশে কাজ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব সময় সরকারকে মিথ্যা তথ্য দেয়।
তবে অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা তথ্য দেখে তারা হতবাক হয়েছেন। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করবেন বলেও জানিয়েছেন তারা। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো বেআইনি কার্যকলাপের জন্য আমাদের ইচ্ছাকৃত জটিলতা বা গোপন অনুমোদনের কোনো সুযোগ নেই।
রোগী এবং এজেন্টরা কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার পরিচালনাকারী হিসেবে পদ্মশ্রী সম্মাননা পাওয়া ভারতের শীর্ষস্থানীয় সার্জন ডা. সন্দীপ গুলেরিয়া নাম বলেছেন।
তবে ডা. সন্দীপ বলেছেন, টেলিগ্রাফ যেসব তথ্য অনুসন্ধানে পেয়েছে তা তিনি ঘুণাক্ষরেও জানতেন না। তা ছাড়া এসব দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, একটি আন্তর্জাতিক অঙ্গ প্রতিস্থাপন চক্রের সঙ্গে তার নাম যুক্ত করাটা ‘আপত্তিকর এবং হাস্যকর’।
অথচ ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য ডেকান হেরাল্ডে ২০১৬ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপোলোর দিল্লি হাসপাতালের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি কিডনি কেলেঙ্কারির ঘটনায় ডা. সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে। ওই প্রতিবেদনকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এই সম্মানিত চিকিৎসক।
টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ‘কিডনির বিনিময়ে নগদ টাকা’ এই চক্র সম্পর্কে তারা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জানতে পারে। যখন দাও সো সোয়ে নামে ৫৮ বছর বয়সী এক রোগী কিডনির জন্য ৮০ লাখ মিয়ানমার কিয়াত বা প্রায় ৩৯ হাজার ডলার খরচ করেন। দিল্লিতে অ্যাপোলোর ফ্ল্যাগশিপ হাসপাতাল ইন্দ্রপ্রস্থ হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, তার কিডনি দাতা ছিলেন সম্পূর্ণ অপরিচিত।
দাও সো সোয়ে টেলিগ্রাফকে বলেন, আমি জানি যে, মিয়ানমার এবং ভারতের আইনে অপরিচিত ব্যক্তির অঙ্গ দান করার অনুমতি নেই। কিন্তু যেহেতু আমরা মিয়ানমারে আছি, তাই এজেন্ট আমাদের আত্মীয় বলে ভুয়া গল্প বলতে শিখিয়েছিল।
ডা. হটেট হটেট মিন্ট ওয়াই টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানী প্রতিবেদককে এমন গল্পই বলেছেন। তার বিজনেস কার্ডে অনুয়ায়ী, তিনি মিয়ানমারে অ্যাপোলো অফিসের জন্য কাজ করেন। আত্মীয়দের মধ্যে অঙ্গ দাতা পাওয়া না গেলে রোগীর লোকজন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই প্রতিবেদক পরিচয় গোপন রেখে তার সঙ্গে আলাপ করেছিলেন।
ফিয়ো খান্ট হেইন নামে অ্যাপোলোর সঙ্গে যুক্ত আরেক ব্যক্তি বলেছেন, মিয়ানমারে ৮০ শতাংশ কিডনি প্রতিস্থাপন হয় অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে নিয়ে। বাকি মাত্র ২০ শতাংশ দাতা থাকেন আত্মীয়। তিনি বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করতে আগ্রহী মানুষ খুঁজে বের করেন। এরা সবাই দরিদ্র। এই এজেন্টদের অনেকে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে এভাবে দরিদ্র কিডনি দাতা খুঁজে দেয়ার কাজ করছে। তারা একটি কিডনির জন্য প্রায় ৪ হাজার ডলার চার্জ করে।
যুক্তরাজ্যের সেন্ট মেরি ইউনিভার্সিটির চিকিৎসা নীতিশাস্ত্রের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং অঙ্গপাচার বিশেষজ্ঞ ডা. ট্রেভর স্ট্যামারস টেলিগ্রাফকে বলেন, আমরা হাজার হাজার অঙ্গ পাচারের কথা বলছি। এটি বিশাল বৈশ্বিক বাণিজ্য।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) কিডনি বিশেষজ্ঞরা টেলিগ্রাফকে বলেন, অপরিচিতদের দান করা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে ভ্রমণকারী রোগী এখানেও রয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ। তারা ব্রিটেন থেকে বিদেশে যাচ্ছেন। ফিরে আসছেন নতুন কিডনি নিয়ে। বলা হয় আত্মীয় বা এমন কারও কাছ থেকে নিয়েছেন। কিন্তু এটি যাচাই করা কঠিন।
টেলিগ্রাফ এনএইচএসের উপাত্ত থেকে জানায়, ২০১০ সাল থেকে এনএইচএসের অন্তত ১৫৮ জন রোগী অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। পরিসংখ্যান অনুসারে, এই অপারেশনগুলোর বেশির ভাগই (২৫ শতাংশ) ভারতে সম্পন্ন হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অবৈধ বাণিজ্য সেসব দেশেই হচ্ছে যেসব দেশে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা শিল্প বিকাশমান। এর মধ্যে ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতাল অন্যতম প্রধান।
এর আগে কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সে সময় দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ হাসপাতালের দুই কর্মকর্তাকে ২০১৬ সালে এজেন্ট এবং দাতাদের একটি চক্রের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনো তদন্ত চলমান। সে সময় অ্যাপোলো বলেছিল, রোগী এবং হাসপাতালের সঙ্গে প্রতারণা করতে সুপরিকল্পিতভাবে একটি চক্র এই কাজ করেছিল।
টেলিগ্রাফের আন্ডারকভার রিপোর্টারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি কথোপকথনে মিয়ানমারের এজেন্ট এবং অ্যাপোলো কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে অপরিচিত ব্যক্তির কিডনি পাওয়ার কৌশল ফুটে উঠেছে।
টেলিগ্রাফ প্রতিবেদকের কাছে পুরো প্রক্রিয়ার বর্ণনায় মিয়ানমারে অ্যাপোলোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও এজেন্টরা বলেন, রোগী এবং কিডনি দাতাকে আত্মীয় প্রমাণ করার জন্য বংশলতিকা, পরিবারের নথি, বিয়ের প্রশংসাপত্র এবং ছবি জাল করা হয়। ভারতে যাওয়ার আগে উভয় পক্ষকে এক জায়গায় করে গ্রুপ ছবি তোলা হয়। ছবিগুলো পুরোনো দেখাতে সেগুলো প্রিন্ট করার পর দুমড়ে মুচড়ে রেখে দেয়া হয়। এরপর তাদের একসঙ্গে কিছুদিন বসবাস করতে বলা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সুচারুভাবে সম্পন্ন করার পর নথিপত্রগুলো হাসপাতালের অনুমোদন কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিটি ধাপে আলাদা খরচ রয়েছে। একটি বংশলতিকা তৈরির জন্য ৪০০ ডলার, বিমান ভাড়া প্রতি ধাপে ২৫০ ডলার এবং মেডিকেল বোর্ডের জন্য নিবন্ধন খরচ ২০০ ডলার। অ্যাপোলো হাসপাতালের নথি অনুযায়ীই একজন রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপনে মোট খরচ হয় ২১ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি। তবে কিডনি দাতাকে দেয়া খরচের হিসাব এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।
অ্যাপোলোর মিয়ানমার অপারেশনের প্রধান ডা. থেট উ টেলিগ্রাফ প্রতিবেদককে জানান, রোগী তার অঙ্গ দাতাকে নিজের পছন্দ মতো বাছাই করতে পারেন। সবকিছু চুড়ান্ত হলে তারপরই অর্থ লেনদেন হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৭০ বা ৮০ লাখ মিয়ানমার কিয়াতে চুক্তি হয়। যা মার্কিন মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ ডলার। আর বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ টাকার বেশি পান একজন কিডনি দাতা। অগ্রিম নগদ টাকা দেয়া হয়। এরপর দাতাকে কিডনি প্রতিস্থাপন অনুমোদন কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের জন্য ভারতে পাঠানো হয়। এই কমিটিতে অ্যাপোলো হাসপাতালের কর্মকর্তা এবং সরকার নিযুক্ত সদস্যরা থাকেন।এই চক্রে জড়িত এজেন্টদের একজনের মতে, বোর্ডটি শুধু নামেই! বোর্ডের সদস্যরা কিছু ভাসা ভাসা প্রশ্ন করেন। অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ যদিও এটি অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের বহু মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপন করছেন। কিডনি ব্যবসার এই চক্র মিয়ানমারের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মানুষের দারিদ্র্যকে পুঁজি করে অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এই পটভূমিতে অ্যাপোলোর সঙ্গে যুক্ত একটি কিডনি পাচার চক্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এই দরিদ্র জনগোষ্ঠী। কিডনি বিক্রি করা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে এর প্রমাণও পেয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।
দ্য টেলিগ্রাফ মন্তব্যের জন্য মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দিল্লির মিয়ানমার দূতাবাস এবং ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।