সর্বশেষ আপডেট : ৬ ঘন্টা আগে
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

বৃষ্টির আশায় দুই ব্যাঙের বিয়ে!

শুক্রবার রাত, ঘড়িতে তখন ৮টা বেজে ৩০ মিনিট। দিনাজপুর জেলা শহরের রাজাবাটী হিরবাগান এলাকায় গিয়ে দেখা গেল আলপনায় সাজানো হয়েছে একটি ছায়ামণ্ডপ।

আছে ঘট আর তার উপরে বসানো হয়েছে একটি ডাব। ধান-দুর্বা সাজিয়ে রাখা হয়েছে একটি কুলার মধ্যে। তার ঠিক পাশেই চালুনে জ্বলছে প্রদীপ, একদিকে রান্না করা হচ্ছে বরযাত্রীদের খাওয়ার।

অন্যদিকে বাজছে ঢাক, কাসর আর শঙ্খ। এই সব আয়োজন দুটো ব্যাঙকে ঘিরে। বৃষ্টি কামনায় এখানে ঘটা করে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছেন হিরাবাগানবাসী। আয়োজকরা জানিয়়েছেন, বৃষ্টি কামনায় বরুণ দেবকে সন্তুষ্ট করতে তাদের এই আয়োজন।

দিনাজপুর জেলাসহ আশে পাশের অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে গত ১৫ থেকে ১৬ দিন ধরে একটি মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। নেই বৃষ্টিপাত, প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে এই এলাকার জনপদ। ফলে একদিকে যেমন জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে কৃষি কাজে ঘটছে ব্যাঘাত। এমন সংকটাপূর্ণ পরিস্থিতি কাটাতে লোকাচার মেনে হিরাবাগানবাসী এই বিয়ের আয়োজন করেন। আয়োজকদের বিশ্বাস, এমন বিয়ে দিলেই বরুন দেব সন্তুষ্ট হবেন। আর ধরীত্রিতে বর্ষণ করবেন বৃষ্টি।

রাজবাটী হিরাবাগানের রক্ষা কালী মন্দির প্রাঙ্গণে ব্যাঙ দুটোর বিয়ে দেওয়া হয়। আয়োজনকে ঘিরে কোনো প্রকার ত্রুটি রাখেননি আয়োজকরা। বিয়েতে গিয়ে দেখায় যায়, গায়ে হলুদের দৃশ্য। ছিল সাতপাকে বাঁধা , মালা বদল, শুভদৃষ্টিসহ সিঁদুর দান। বাদ যায়নি পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণ কিংবা ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ প্রদান।

যুগ যুগ ধরে চলে আসা লোকসংস্কৃতির অংশ এই বিয়ের মেয়ে ব্যাঙ মতির মা ছিলেন আল্পনা মহন্ত আর ছেলে ব্যাঙ ভানুর মা ছিলেন সুমনা সরকার। আর এই আয়োজনের মূল ছিলেন ছায়া অধিকারী। বিয়ের মন্ত্রপাঠসহ শুভ কাজ করেন পুরোহিদ নারায়ন চন্দ্র ঝাঁ। আয়োজকরা বলছেন, অনাবৃষ্টির কারণে সর্বপ্রথম এমন বিয়ের আয়োজন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতা শ্রী বিষ্ণুর অবতার ভগবান রামচন্দ্র। আর তাই সনাতনরীতি মেনেই এখানে ব্যাঙ দুটির বিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পুরোহিত নারায়ন চন্দ্র ঝাঁ বলেন, এই বিয়ে অনেক দিন ধরেই হয়ে আসছে। রামচন্দ্র দিয়েছিলেন এই বিয়ে। আমাদের বিশ্বাস লোকাচার, দেশাচার মেনে এই বিয়ে দেওয়া হলে যেন বৃষ্টি হয়।

বিয়ের মূল আয়োজক ছায়া অধিকারী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি নেই। মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুল ও উদ্ভিদও সমস্যায় পড়েছে। একটু বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে হা হয়ে আছেন সবাই। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি এমন খরায় ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়, তাই এমন আয়োজন। এর আগেও এমন বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। বিয়ে দেওয়ার পর বৃষ্টিপাতও হয়েছিল। আমাদের বিশ্বাস এবারও তেমনই হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: