সর্বশেষ আপডেট : ৪৭ মিনিট ৩২ সেকেন্ড আগে
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেটে ব’ন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, বিপৎসীমা’র ওপরে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি

টানা ৮ দিন ধরে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা’র ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট নগরসহ জে’লার ১৩টি উপজে’লায় প্লাবিত হওয়া হাজার হাজার গ্রাম পানিতে থৈ থৈ করছে

সিলেটে ব’ন্যার আট দিন পেরিয়ে গেলেও সার্বিক ব’ন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং ভা’রী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে ভা’রী বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার ভোর থেকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

টানা ৮ দিন ধরে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা’র ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট নগরসহ জে’লার ১৩টি উপজে’লায় প্লাবিত হওয়া হাজার হাজার গ্রাম পানিতে থৈ থৈ করছে। এতে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে, ঘরে মজুত করা খাবারও শেষ হয়ে গেছে। অনেকেই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ ঘরের ভেতরে মাচা বানিয়ে থাকছেন। এমন হাহাকারের মাঝে ব’ন্যাদুর্গত মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বলেও অনেকে অ’ভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ পানিব’ন্দি আছেন।

সিলেট নগরের ব’ন্যাক্রান্তরাও খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছেন বলে অনেকে অ’ভিযোগ করেছেন।

নগরের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া অনেকে বলছেন, তারা প্রয়োজনীয় খাবার সহায়তা পাচ্ছেন না। খাবার সংকটের কারণে তাদের অনেকেই অ’সুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ বরাদ্দ একেবারেই কম। এ অবস্থায় মানবেতর দিন কা’টাচ্ছেন তারা। একইসঙ্গে বিশুদ্ধ পানিও পাচ্ছেন না তারা। বৃষ্টির পানি জমিয়ে খাবার চাহিদা মেটাচ্ছেন। তাদের প্রশ্ন, “এভাবে আর কতদিন চলবে?”

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইদ আহম’দ চৌধুরী জানান, রবিবার পর্যন্ত সিলেটে ভা’রী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। রবিবার দিবাগত রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমে পরের দিন সোম ও মঙ্গলবার আকাশ পরিষ্কার হবে। এরপর ফের বৃষ্টিপাত হতে পারে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা’র ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা’র ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপৎসীমা’র ১.৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ওই পয়েন্টে পানি ছিল ১৩.৮৫ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টের বিপৎসীমা’র ছিল ১২.৭৫ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি বুধবার বেলা তিনটা পর্যন্ত বিপৎসীমা’র ১.৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে বেলা তিনটা পর্যন্ত পানি ছিল ১৭.১৭ সেন্টিমিটার। শেওলা পয়েন্টে ছিল ১৩.৬২ সেন্টিমিটার। সেখানে বিপৎসীমা ১৩.৫ সেন্টিমিটার।

সারি নদীর পানি বিপৎসীমা অ’তিক্রম না করলেও বিপৎসীমা’র কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার বেল ৩টা পর্যন্ত নদীতে পানি ছিল ১১.৪৮ সেন্টিমিটার। ওই নদীর বিপৎসীমা’র ১২.৩৫ সেন্টিমিটার।

জানা গেছে, ভা’রতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ৮ দিনে ২ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখান থেকে নেমে আসা ঢলেই ব’ন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে নগরের কালীঘাট, মহাজনপট্টি এলাকায় দেখা গেছে, সুরমা নদীসংলগ্ন কালীঘাটের খেয়াঘাট এলাকার অন্তত তিন শতাধিক দোকানপাটে পানি ঢুকেছে।

ব্যবসায়ী মো. শাহ’জাহান বলেন, “পানি ঠেকাতে দিনরাত ক’ষ্ট করছি। কিন্তু এরপরও ঠেকাতে পারছি না। বেচা-কেনার কথা বাদ দিলাম। এখন দোকানে থাকা মালগুলো রক্ষা করাই বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হলে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।”

সিলেটে ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধান। বোরোর পর এবার আউশেও আ’ঘাত হানলো ব’ন্যা।

জে’লা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের হিসেবে, চলমান ব’ন্যায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আউশ ধানের বীজতলা এক হাজার ৩০১ হেক্টর, বোরো ধান এক হাজার ৭০৪ হেক্টর এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির এক হাজার ৪ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

 

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: