সর্বশেষ আপডেট : ৭ ঘন্টা আগে
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

কারাগারে আয়েশেই আছে রিজেন্টের শাহেদ, ক্যাসিনোর সম্রাট ও শামীমের মতো আসামীরা

সর্দি-কাশি নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্ণফুলী সেলে গত ১৪ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে পড়েন অর্থপাচার মামলায় বন্দি আলোচিত ঠিকাদার ও যুবলীগের সাবেক নেতা জিকে শামীম (গোলাম কিবরিয়া শামীম)। অ্যাম্বুলেন্সে করে পরদিন তাকে নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকে স্থাপিত করোনা ওয়ার্ডে।

কারা সূত্র জানিয়েছে- নিউরো, ডায়াবেটিস ও রক্তচাপজনিত সমস্যার পাশাপাশি নতুন স্ট্রেইনের করোনায় আক্রান্ত হলেও ফুসফুস ভালো আছে শামীমের। এখন পুরোপুরি সুস্থ তিনি। হাসপাতাল কেবিনে তার সঙ্গে রয়েছেন কারাবন্দি যুবলীগের আরেক বহিষ্কৃত নেতা ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুভাষ কুমার ঘোষ গতকাল সোমবার জানান, গত তিন দিন আগে জিকে শামীমের করোনা টেস্টে নেগেটিভ ফল এসেছে। বিধি অনুযায়ী তাকে কারাগারে আনা হবে।

প্রভাব বিস্তার করে হাজার হাজার কোটি টাকায় সরকারি স্থাপনা নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ এই ঠিকাদারকে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাতের হাড়ের সমস্যা দেখিয়ে ওই বছরের ৫ এপ্রিল বিএসএমএমইউতে ভর্তি হন শামীম। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, বড় ধরনের জটিলতা না থাকলেও সেখানে কয়েক মাস শামীম অবস্থান করেছিলেন।

উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট, চিকিৎসার নামে প্রতারণাসহ নানা অপরাধে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মো. শাহেদ ওরফে শাহেদ করিমের ঠাঁই হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী সেলে। টেলিভিশন টকশোতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং প্রভাবশালীদের সঙ্গে সেলফি তুলে তাদের নাম ভাঙিয়ে বহুরৈখিক প্রতারণার অধিকারী শাহেদ কারাগারে বেশ আয়েশেই আছেন।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্ণফুলী সেলে রয়েছেন র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির। জানা গেছে, কারাগারে বেশ জামাই আদরেই আছেন তিনি। তার সঙ্গে অল্পদিনেই সখ্যতা গড়ে উঠেছে শাহেদ করিমের। শাহেদ ও মনির সুযোগ পেলেই একসঙ্গে গল্প করেন।

করোনা পরিস্থিতি বা অন্য কারণে শাহেদ করিমের পরিবার-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কেউ কারাগারে তেমন যোগাযোগ নেই। তবে করোনাকালে কারা কর্তৃপক্ষের চালু করা টেলিযোগাযোগের বাইরেও বিশেষভাবে সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন গোল্ডেন মনির। সিআইডি বলেছে, গোল্ডেন মনিরের ১২৯টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৭৯১ কোটি ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৩ টাকা পাওয়া গেছে। এসব অর্থের কোনো বৈধ উৎস নেই। এ ছাড়া তিনি সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্রের সঙ্গে যোগসাজশে যৌথ ও একক নামে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে অনেক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি গড়েছেন। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।

২০১৯ সালের মাঝামাঝি র‌্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর যে কয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে আয়েশী জীবন ছিল যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাটের। রাজনৈতিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-তদবির-দখলদারিত্ব, ক্যাসিনো ক্লাবগুলোর অন্যতম নিয়ন্ত্রক হিসেবে সম্রাট গ্রেপ্তারের পরই চিকিৎসা সুবিধার নামে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন হাসপাতালে। বর্তমানেও তিনি বিএসএমএমইউর প্রিজন্স ওয়ার্ডে রয়েছেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার সম্রাটকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে নেওয়ার দুদিন পর বুকে ব্যথার জন্য ভর্তি করা হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে। তবে সমালোচনার মুখে একই বছরের ২৯ অক্টোবর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর ঢাকার জজ আদালত দুদকের মামলায় সম্রাটকে ছয় দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। কিন্তু ২৪ নভেম্বর রিমান্ডে নেওয়ার আগের দিন ‘বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট’ নিয়ে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে ভর্তি হন তিনি। একই সময়ে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন জিকে শামীমও। ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর সম্রাটকে কেরানীগঞ্জ কারাগারের সূর্যমুখী সেলে রাখা হয়।

জানা গেছে, সম্রাট ও শামীম বর্তমানে কেবিনে শুয়ে-বসে পরস্পর গল্প করে সময় কাটান। চিকিৎসা শেষে তাদের কারাগারে ফেরত না পাঠানোয় কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিএসএমএমইউকে পাঁচ দফা চিঠি দেওয়া হয়। পরে সম্রাটকে স্থানান্তর করা হয় কাশিমপুর কারাগারে। এরপর তাকে আবারও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হয়ে নেওয়া হয় হাসপাতাল, সেখান থেকে কাশিমপুর কারাগারে। সেখান থেকে আবারও সম্রাট ঠাঁই নিয়েছেন হাসপাতালে। এভাবে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে আছেন সম্রাট। প্রতিবারই তার পাশে থাকেন জিকে শামীম।

হাসপাতালে সম্রাটের অনুসারী, পরিবারের সদস্যসহ নানা মানুষের যাতায়াত রয়েছে। অবৈধ অস্ত্র, বন্যপ্রাণী আইন, অর্থপাচারসহ কয়েকটি মামলা সম্রাটের বিরুদ্ধে চলমান রয়েছে।

ফকিরাপুলের ইয়াংমেন্স ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অর্থবিত্ত গড়া মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হন ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর। অবৈধ অস্ত্র, বৈদেশিক মুদ্রা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার খালেদ বর্তমানে কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগারে রয়েছেন।

২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাল টাকাসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া এবং তার সহযোগীরা। বর্তমানে পাপিয়া আছেন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে। গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে র‌্যাব পাপিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেলেও তিনি হঠাৎ ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়েন। তবে পরে রিমান্ড কার্যকরসহ কারাগারে এখন পুরোপুরি সুস্থ পাপিয়া।

মহিলা কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, করোনাকালে দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে আসা জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সার্জন ডা. সাবরিনা একই কারাগারে রয়েছেন। তবে পাপিয়া ও ডা. সাবরিনার মধ্যে তেমন ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সূত্র : আমাদের সময়

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: