cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
কবিতার কয়েক লাইন কিংবা নিজের মনের একান্ত অনুভূতিগুলো জুড়িয়ে প্রিয়জনদের জন্য বর্ণিল ঈদকার্ড সংগ্রহ। তারপর সেই কার্ড পৌঁছে দেয়ার তাগিদ। বলা যায়, ঈদকার্ডের মাধ্যমে আপনজনদের শুভেচ্ছা কিংবা দাওয়াত জানানোর সেই দিনগুলো আমাদের জীবন থেকে নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ দিনটির খুশি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া, ভাগাভাগি করাই ঈদ। সেই খুশির বার্তা প্রকাশের কিছু মাধ্যমও ছিলো। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান মাধ্যম ঈদকার্ড। একসময় তরুণ-তরুণীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় ছিল ঈদকার্ড বিনিময়ের বিষয়টি। পুরনো কাগজপত্র ঘাটলে এখনো অনেকের ঘরে মিলতে পারে হাতের লেখা কার্ডের দেখা। সেই মানুষগুলো এখন কেন ঈদকার্ড খুঁজেন না, কার্ডের দোকানে ভিড় করেন না, কার্ড ছাড়তে কুরিয়ার সার্ভিস কিংবা পোস্ট অফিসে ছুটে যাবার জন্য তাদের মন আগের মতো ব্যাকুল হয় না? উত্তর একটাই, সময়।
নব্বইয়ের দশককে কার্ডের সোনালী সময় হিসেবে গণ্য করলে ভুল হবে না। পোশাকের চেয়ে কার্ডের মাধ্যমে প্রিয়জনদের ঈদ শুভেচ্ছা, ঈদের দাওয়াত না দিলে কোথায় যেন একটা অপূর্ণতা অনুভব করা হতো। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ-তরুণীদের কাছে কার্ডের গুরুত্ব ছিলো বেশি। অনেক শিক্ষকও কার্ডের মাধ্যমে ছাত্রদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাতেন। মনের মতো, শিল্পসম্মত একটি কার্ডের জন্য যাচাই-বাছাইয়েরও একটা বিষয় ছিলো। তাই অনেকে কাগজ কিনে নিজেই কার্ড বানিয়ে ফেলতেন। রঙিন খামের সেই কার্ড সংগ্রহ করার পর মনের অভিব্যক্তি, উপদেশমূলক জীবনের, স্বপ্নের কথা লিখা হতো পরম যত্নে। অনেকে প্রিয় কবির কবিতার কয়েক লাইন কিংবা নিজের পছন্দের কথাদিয়ে কার্ড সাজাতেন। প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ছোট-ভাইবোন, মা-বাবাকেও কার্ডের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতেন। কার্ড দিয়ে ঈদের সেই শুভেচ্ছার মাধ্যমে একে অন্যের প্রতি বন্ধনের, সৌহার্দ্যরে একটা সম্পর্ক তৈরি হতো।
কার্ডের চাহিদা থাকায় সিলেটে অনেকগুলো দোকানও ছিলো। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য, সবার কাছে সুপরিচিত ছিলো জিন্দাবাজারের আজাদ প্রোডাক্ট্স, আইডিয়াল প্রোডাক্ট্স, নয়াসড়কের আর্চিস গ্যালারী (বর্তমানে কুমারপাড়ায়), হলমার্ক, লামাবাজারের বাগিচা, চৌহাট্টার চলন্তিকাসহ আরো কয়েকটি স্টেশনারি দোকান। কিন্তু সেই সময় এখন আর নেই। বদলে গেছে অনেক কিছু। প্রযুক্তির প্রবাহে কার্ডের ব্যবহার কমে যাওয়ায় সেই দোকানগুলোও কমে গেছে। সিলেটে বন্ধ হয়ে গেছে আইডিয়ালের মতো নামি প্রতিষ্ঠান। যে কয়েকটি টিকে আছে সেগুলোতে কার্ড খুঁজতে আগের মতো মানুষ আসে না। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে দোকান বন্ধ করেছেন, কেউবা কার্ডের পাশাপাশি অন্য ব্যবসা যুক্ত করেছেন।
যত সময় যাচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি। সেই প্রযুক্তির বিকাশের ভিড়ে হাতের লিখা চিঠির মতো হারিয়ে গেছে ঈদকার্ডের সুদিন।
মানুষ এখন ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে দ্বারস্থ হচ্ছেন হুয়াটসঅ্যাপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ই- মেইল অথবা মুঠোফোন বার্তায়।
সিলেটের জিন্দাবাজার সহিরপ্লাজার নিচতলায় রয়েছে আজাদ প্রোডাক্টস। ঈদ কার্ড, বিয়ের কার্ড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাদের নাম ছিলো মুখে মুখে। এ প্রতিষ্ঠানের একজন দায়িত্বশীল শংকুরি কুরি রেবা। আঠারো বছর যাবৎ তিনি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত রয়েছেন। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি জানিয়েছেন, এমনও দিন গেছে, ২০০৯ সালে একদিনে ১ লাখ ১৩ হাজার কার্ড বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন হাতেগুনা কয়েকজন কার্ডের খুঁজে আসেন।
তিনি বলেন, মানুষ এখন লিখতে চায় না, নিজে থেকে কিছু করতে চায় না। প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে। সেই নির্ভরশীলতা নিজের সৃজনশীলতার উপর প্রভাব ফেলে দিয়েছে।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কবি কাসমির রেজা বলেন, একসময় কার্ড ছাড়া যেন ঈদ অপূর্ণ ছিলো। সেই সময় একেবারেই হারিয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুধু প্রকৃতিতে নয়, মানুষের জীবনেও পড়েছে। এর ফলে অনেক কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে। তিনি বলেন, আমরা প্রকৃতি থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছি। ফলে আমাদের সজীব অনুভূতিগুলোও মলিন হচ্ছে।
সিলেট ফটোগ্রাফি সোসাইটির সভাপতি আলোকচিত্রী ফরিদ আহমদ এর সাথে এ প্রসঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘বিবর্তনের কারণে মানুষের জীবনের গভীর আবেগগুলোর রং বদলেছে। অথচ একসময় ঈদকার্ড আমাদের ঐতিহ্যের অংশ ছিলো। এখন মানুষ অস্থিরতার সাথে ঘুরপাক খাচ্ছে। নিজের প্রয়োজনের পেছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হচ্ছে। তবে আমরা চাইলে আমাদের জীবনকে বদলাতেও পারি।’