সর্বশেষ আপডেট : ১৭ ঘন্টা আগে
রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

তানজানিয়ায় নির্বাচনের পর নিরাপত্তা বাহিনীর বিক্ষোভ দমনে শতাধিক নিহত

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

তানজানিয়ায় সাধারণ নির্বাচনের পর বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে প্রধান বিরোধী দল চাদেমা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দিনের সহিংসতায় অন্তত ৫০০ থেকে ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবারের নির্বাচনের পর টানা তিন দিন ধরে রাজধানী দার এস সালামসহ বিভিন্ন শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এবং সরকার গণতন্ত্রকে ‘দুর্বল’ করে ফেলেছে।

চাদেমার মুখপাত্র এক ফরাসি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “প্রায় ৭০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে।” অন্যদিকে বিবিসিকে এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, অন্তত ৫০০ জনের মৃত্যুর বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। তবে দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতিকে খাটো করে দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন সহিংসতা ঠেকাতে কারফিউয়ের সময়সীমা আরও বাড়িয়েছে।

চাদেমার প্রধান নেতা টুন্ডু লিসু বর্তমানে কারাগারে আছেন। আরেক বিরোধী প্রার্থীকে প্রযুক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এতে প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান ও তার দল চামা চা মাপিনদুজি (সিসিএম)-এর জয়ের সম্ভাবনা বেড়েছে।

শুক্রবার সেনাপ্রধানের সতর্কতা উপেক্ষা করে দার এস সালামে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহুর পোস্টার পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায় বিক্ষোভকারীরা।

তানজানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত বিবিসিকে বলেন, “কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি। নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ও কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “ইন্টারনেট বন্ধের উদ্দেশ্য ছিল ধ্বংসযজ্ঞ রোধ করা এবং প্রাণ বাঁচানো।”

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের জন্য হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা জানা কঠিন হয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলোও তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দার এস সালামের একটি হাসপাতালের সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার থেকেই নিহত ও আহতদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা, শহরের প্রায় সব সরকারি হাসপাতালের মর্গ ভর্তি হয়ে আছে।

চাদেমার এক নেতা দাবি করেছেন, “মানুষের চোখের আড়ালে রাতের অন্ধকারে গণহত্যা চালানো হচ্ছে।” দলের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরিচালক জন কিটোকা বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী আমাদের নেতাদের খুঁজে বের করছে; কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তারা বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করছে।”

জাতিসংঘ তানজানিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীকে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা ও নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষা ও সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল জাঞ্জিবারে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে সিসিএম প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট হোসেইন মুইনি জয়ী হয়েছেন। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, সেখানে ‘বিরাট ভোট জালিয়াতি’ হয়েছে।

ইন্টারনেট বন্ধ ও বিক্ষোভের কারণে ফ্লাইট বিলম্বিত হচ্ছে, ফলে পর্যটকেরা বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন।

শনিবার আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশের কথা থাকলেও প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান ও তার দল সিসিএম-এর জয় প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর সামিয়া দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হন। শুরুতে রাজনৈতিক শিথিলতার জন্য প্রশংসিত হলেও পরবর্তীতে তার সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের দমন, গ্রেপ্তার ও নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে।

এবারের নির্বাচনে দুই প্রধান বিরোধী প্রার্থী টুন্ডু লিসু (রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আটক) এবং লুহাগা ম্পিনা (প্রযুক্তিগত কারণে বাতিল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। অন্য ১৬টি ছোট দল অংশ নিলেও তাদের জনসমর্থন খুবই সীমিত ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: