সর্বশেষ আপডেট : ৪৯ সেকেন্ড আগে
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

ইসমাইল (আ.)-এর কোরবানি: ত্যাগ, ধৈর্য ও আনুগত্যের অনন্য দৃষ্টান্ত

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

আল্লাহর প্রিয় বন্ধু ইবরাহিম (আ.) দীর্ঘকাল নিঃসন্তান ছিলেন। জীবনের একপর্যায়ে তিনি আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন—
‘হে প্রভু! আমাকে একটি নেককার সন্তান দান করুন।’ (সুরা সাফফাত : ১০০)

আল্লাহ তার প্রার্থনা কবুল করেন এবং তাকে ধৈর্যশীল একটি সন্তানের সুসংবাদ দেন। জন্মের পর এই পুত্রের নাম রাখা হয় ইসমাইল—যার অর্থ, ‘আল্লাহ শোনেন’।

কঠিন পরীক্ষার শুরু
ইসমাইল (আ.) জন্মের পরপরই আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশাল পরীক্ষার সম্মুখীন হন। ইবরাহিম (আ.)-কে নির্দেশ দেওয়া হয়, যেন তিনি তার স্ত্রী হাজেরা (আ.) ও নবজাতক পুত্র ইসমাইলকে নির্জন মরুভূমিতে রেখে আসেন। সেই স্থানেই আজকের কাবাঘর অবস্থিত।

পানির খোঁজে মা হাজেরা (আ.) বারবার ছুটে চলেন সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝে। এক সময় ফিরে এসে দেখেন, ছোট্ট ইসমাইলের পায়ের কাছে এক পানির ঝরনা ফুঁটে উঠেছে। এটিই আজকের বিখ্যাত ঝমঝম কূপ।

ত্যাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা
যখন ইসমাইল (আ.) বয়সে বড় হতে লাগলেন, তখন ইবরাহিম (আ.) এক রাতে স্বপ্নে দেখলেন—তিনি পুত্রকে কোরবানি করছেন। পয়গম্বরদের স্বপ্ন ওহির অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ, এটি ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি আদেশ।

তিনি দ্বিধাহীনভাবে আল্লাহর নির্দেশ পালনের সিদ্ধান্ত নেন এবং পুত্রকে জানান—
‘হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি তোমাকে জবাই করছি। তুমি কী মনে কর?’
পুত্র ইসমাইল (আ.) শান্ত ও দৃঢ়ভাবে উত্তর দেন—
‘আব্বাজান! আপনাকে যা আদেশ দেওয়া হয়েছে, তাই করুন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের একজন হিসেবে পাবেন।’ (সুরা সাফফাত : ১০২)

এই উত্তরে ফুটে ওঠে এক অসামান্য আত্মত্যাগ, আদব ও আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা।

কোরবানি ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত
ইবরাহিম (আ.) যখন মিনার প্রান্তরে পুত্রকে কোরবানি করার প্রস্তুতি নেন, তখন ইসমাইল (আ.) বলেন,
‘আমাকে উপুড় করে শুইয়ে দিন এবং চোখ বেঁধে নিন, যেন আমি ভয় না পাই এবং আপনার ভেতর পিতৃস্নেহ না জেগে ওঠে।’

আল্লাহ তাদের এই অনন্য আনুগত্যে সন্তুষ্ট হয়ে বলেন—
‘হে ইবরাহিম! তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে। নিশ্চয়ই এটি ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমরা তার পরিবর্তে জবাইয়ের জন্য পাঠালাম এক মহান জন্তু।’ (সুরা সাফফাত : ১০৩–১০৭)

এই ঘটনার স্মরণে প্রতিটি মুসলমান আজও ঈদুল আজহার দিনে পশু কোরবানি করে থাকেন। আর হজে গেলে হাজীরা শয়তানের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে, যা এই ঘটনার স্মৃতিচিহ্ন বহন করে।

পরিণতি
ইসমাইল (আ.) ১৩৬ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। কিছু বর্ণনায় আছে, তিনি ফিলিস্তিনে ইন্তেকাল করেন; আবার আরব ঐতিহাসিকদের মতে, তিনি কাবাঘরের পাশেই সমাহিত হন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: