সর্বশেষ আপডেট : ১০ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

‘কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলে জামাইকে নিয়ে আসব’ – দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী

পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ডাবল মার্ডারসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি সাজ্জাদকে ‘কাঁড়ি কাঁড়ি’ টাকা দিয়ে জেল থেকে নিয়ে আসবেন বলে ভিডিওতে জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঢাকার একটি শপিং সেন্টার থেকে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তামান্না বলেন, ‘আমার জামাই গতকাল রাতে অ্যারেস্ট হইছে। এটা নিয়ে এত হাই হুল্লাস (হা হুতাশ) করার কিছু নাই। মামলা যখন আছে, অ্যারেস্ট হবে। এগুলো নিয়ে এত টেনশন করা, দুঃখ প্রকাশ করা, কান্নাকাটি করার কিছু নাই। আপনারা যারা ভাবতেছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হইছে আর কোনোদিন বের হতে পারবে না, ওদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যারা এই ঘটনা ঘটাইছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না; মাথায় রাইখো। এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমার কাছে আসবে। তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা। আমার জামাই সাজ্জাদের যারা সাপোর্টার আছো সবাই দোয়া করবা, যাতে ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করাই ফেলতে পারি। ঠিক আছে, ধন্যবাদ।’

এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৬ মার্চ) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজ উদ্দিন।

তিনি বলেন, চান্দগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় সাজ্জাদের ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নগরীর চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়ায় সংঘটিত তাহসিন হত্যা মামলার আসামি ছোট সাজ্জাদ। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে একদল যুবক প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে তাহসিনকে। এলাকার আধিপত্য নিয়ে দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী- সারোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা ও ছোট সাজ্জাদের বিরোধে তাহসিন খুন হন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাহসিন ছিলেন বাবলার অনুসারী।

‘বুড়ির নাতি’ নামে পরিচিত সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।

গত ২৮ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। এরপর ৩০ জানুয়ারি সাজ্জাদকে ধরতে তথ্যদানকারী কিংবা সহায়তাকারীকে নগদ অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ফেসবুক লাইভে সাজ্জাদ বলেন, ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে নগরের অক্সিজেনে ধরে এনে পেটাব। প্রয়োজনে মরে যাব। কিন্তু হার মানব না। ওসিকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুকে ল্যাংটা করে পেটাবো’। এ ছাড়া পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ আমার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়। পরে এ ঘটনায় জিডি করেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান।

সর্বশেষ গত বছরের ৫ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন মোড়ে ছোট সাজ্জাদকে ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় সে। সেদিন পুলিশের দুই সদস্যসহ মোট চারজন গুলিবিদ্ধ হন।

অপরাধজগতে পা রেখে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সাজ্জাদ। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের এক তরুণ নেতার আশ্রয়ে চলে যান সাজ্জাদ। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অনেক অভিযোগ আছে। হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে তার নামে। গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসেই তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

সাজ্জাদের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুরে। তার বাবার নাম মো. জামাল উদ্দিন।

জানা গেছে, গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরের চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া জাগরনী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে মাইক্রোবাস থেকে নেমে স্থানীয় ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীনকে (২৭) গুলি করে হত্যা করে সাজ্জাদ বাহিনী। তারও আগে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকায় শটগান হাতে সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও দুজন গুলি করতে করতে একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর ওই ভবন মালিকের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

এছাড়া গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার (৩২) ও মোহাম্মদ আনিস (৩৮) নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরেই এ খুন হয়। চাঞ্চল্যকর এই ডাবল মার্ডারের ঘটনার দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: