cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
সদ্য নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। এতে ২৪ বছর বয়সী ফাহমি (ছদ্মনাম) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তবে গত আগস্টের শুরুর দিক থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
ফলিত রসায়নের স্নাতকের শিক্ষার্থী ফাহমি আলজাজিরাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি এখানে কর্তৃত্বের কণ্ঠস্বর ছিলাম। এখন আমি ফেরারির মতো ছুটছি, যার সামনে কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’
ফাহমির গল্পে তার মতো হাজারো শিক্ষার্থীর বর্তমান অবস্থার প্রতিফলন আছে। এসব শিক্ষার্থী আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা একসময় বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে শক্তিশালী অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু রাতারাতি তাদের অবস্থান ধসে গেছে। ক্যাম্পাসের সাবেক ক্ষমতাশালী, রাজপথে আওয়ামী লীগের পেশিশক্তি হিসেবে পরিচিত এসব ছাত্র এখন উচ্ছেদ, প্রতিশোধ, এমনকি কারাবাসের মুখোমুখি। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণবিদ্রোহ দমনচেষ্টা এবং তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য তাদের আজ এই দশা।
ফাহমি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। আর শেখ হাসিনা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে লৌহমুষ্টি দিয়ে দেশ শাসন করেছে। আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মুখে এই সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান। এর মধ্যে গত বুধবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করে। সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ১৫ বছরে সহিংসতা, হয়রানি ও নিজেদের স্বার্থে জনসম্পদ ব্যবহারসহ গুরুতর অসদাচরণের ইতিহাস রয়েছে ছাত্রলীগের। ফাহমি আলজাজিরাকে দাবি করেন, হাসিনাবিরোধী বিক্ষোভকালে জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের প্রাণঘাতী দমন–পীড়নে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমার বোনেরা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল। আমিও মনে করতাম, দাবি সঠিক। কিন্তু আমি দলীয় বাধ্যবাধকতায় আটকা পড়েছিলাম।’
সরকারি চাকরিতে বিতর্কিত কোটাব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির জেরে গত জুলাইয়ে প্রাণঘাতী এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, এই কোটাব্যবস্থা শাসক দলের সমর্থকদের সুবিধা দেয়। পরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কোটাব্যবস্থা বাতিল করেন। তবে অচিরেই বিক্ষোভ বাড়তে বাড়তে হাসিনার ‘স্বৈরাচারী’ শাসন উৎখাতের ডাকে রূপান্তরিত হয়। এই সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তাক্ত অধ্যায়গুলোর মধ্যে একটি। কারণ, নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের মারধর করে। তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছোড়ে। তিন সপ্তাহে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। হাজারো মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৫ আগস্ট প্রতিবাদী বাংলাদেশিরা শেখ হাসিনার বাসভবন, সংসদ ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোয় হামলা চালান। ৭৭ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নেন।
হাসিনার পতনের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য সহিংসতার ইতি হয়নি। রাষ্ট্রীয় নৃশংসতার সাবেক অপরাধীরা নতুন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ছাত্রসহ আওয়ামী লীগের শত শত সদস্য ও রাজনীতিবিদেরা হামলা বা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। অনেকে আত্মগোপনে চলে যান। কিংবা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আটক হন।
ফাহমি বলেন, হাসিনাবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ঢাকা থেকে ১৭৩ কিলোমিটার দূরে নোয়াখালী জেলায় তার পরিবারের বাড়ি ও কোল্ডস্টোরেজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে। আমি কোথায় আছি, তা না জানালে তাঁরা আমার ছোট ভাইকে হাওয়া করে দেবে বলে হুমকি দেন। এখন পর্যন্ত তারা তেমন কিছু করেননি। যদিও তার ছোট ভাই যে মাদ্রাসায় পড়ে, সেখানে সে পীড়নের শিকার হয়েছে।
ছাত্রলীগে সম্পৃক্ততার কথা ফাহমি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ভালো ছাত্র ছিলাম। রাজনীতি নিয়ে আমি খুব কমই চিন্তা করতাম। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হল রাজনীতি এড়ানো যায় না। আপনি হয় যোগ দিয়েছেন, নয় তো আপনি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।
দুই বছর আগে ফাহমির বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর তার মা, দুই অবিবাহিত বোন ও ছোট ভাইয়ের দায়িত্ব তার ওপর এসে পড়ে। তিনি স্বীকার করেন, ছাত্রলীগের একজন নেতা হওয়াটা তার একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রতি তার আনুগত্যের আরেক অর্থ হলো, পরিবারের প্রয়োজনে তিনি সব সময় পাশে থাকতে পারেননি।
২০২২ সালে বাবা মারা যাওয়ার মাত্র এক দিন পর ১৫ আগস্ট ছিল হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি নোয়াখালীতে তার শোকাহত পরিবার রেখে ঢাকায় আসেন। ফাহমি আক্ষেপ করে বলেন, পেছনে ফিরে তাকালে আমি দেখতে পাই যে আমি আমার পরিবারকে সমর্থন করার চেয়ে দলকে অগ্রাধিকার দিয়েছি।
এখন যখন ফাহমির আগের নেত্রী হাসিনা ভারতে নিরাপদে আছেন, তখন তিনি ক্রমাগত সহিংসতা বা গ্রেপ্তারের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে একসময় তিনি যে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি ছাত্র, তারা তাকে পরিত্যাগ করেছে।
তিনি তিক্তস্বরে বলেন, আমি যে সালাম দিতাম এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিনিয়োগ করেছিলাম আমাদের নেতাদের জন্য এবং দলীয় সমাবেশের আয়োজনে, এখন তা অর্থহীন মনে হচ্ছে।
ফাহমি আরও বলেন, দল আমাদের তার রাজনৈতিক ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। কিন্তু যখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তখন কোনো সুরক্ষা দেয়নি। হঠাৎ সরকার পতন হলো। ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোটা আমার পক্ষে সেই সন্ধ্যায় সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল। তারপরও দলের শীর্ষ নেতারা বা ছাত্রলীগের নেতারা কেউই আমার খোঁজ নেননি।
ফাহমির শেষ বর্ষের পরীক্ষা চলছে। তিনি ক্লাসে যোগ দিতে পারেননি। কিংবা তার ডিগ্রি শেষ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমি সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে চেয়েছিলাম এবং জাতির সেবা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ক্যাম্পাসে পা রাখলে নানা গোলমেলে অভিযোগে আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। কিংবা আরও খারাপ কিছু- আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হতে পারে। ফাহমি একাই এমন পরিস্থিতিতে পড়েননি। আওয়ামী লীগের আনুমানিক হিসাবমতে, সারা দেশে দলসংশ্লিষ্ট অন্তত ৫০ হাজার ছাত্র এখন অচল হয়ে আছেন। তারা তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেত্রী শাহরিন আরিয়ানা। পরিবার বলেছে, ১৮ অক্টোবর তাকে ‘ভুয়া’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা দিতে গিয়ে শাহরিন আটক হন। একই দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রলীগ নেতা সৈকত রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, আগের মামলায় উভয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবির সমর্থনে নথি সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর মাহবুবর রহমান আলজাজিরাকে বলেন, ছাত্রলীগের কোনো নেতার সঙ্গে পরীক্ষায় বসতে রাজি হননি অন্য শিক্ষার্থীরা। কোনো ধরনের ‘মব জাস্টিস’ এড়াতে এ দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল, অন্যথায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ছাত্রলীগের আধিপত্যের সময় ক্যাম্পাসে যে সহিংসতা ছিল সাধারণ ঘটনা, নতুন বাংলাদেশে তার পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়। সহিংসতার সম্মুখীন না হয়ে সব শিক্ষার্থী যাতে স্নাতক করতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত চলছে। কোনো শিক্ষার্থী দোষী বলে প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এসে আরও দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার হন। তারা হলেন- ফিন্যান্সের ছাত্র আবুল হাসান সাইদী ও নৃবিজ্ঞানের ছাত্র কাজী শিহাব উদ্দিন তৈমুর। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। সে অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে। রাজধানীর উপকণ্ঠে অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আর ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে নিহত হন আরেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। এই সরকার ২৩ অক্টোবর এক গেজেটে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (২০০৯) ছাত্রলীগকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করে। পরিহাসের বিষয় হলো, ২০০৯ সালে হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই আইনটি পাস করা হয়। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃত্বে দেশব্যাপী বিক্ষোভের পর এই সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বর্তমানে ভারতে আছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যে নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি, সে জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি আলজাজিরাকে বলেন, এই সরকার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দাবি করছে। অথচ তারা হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে তাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার আলজাজিরাকে বলেন, নিয়মিত একাডেমিক কার্যক্রমে যোগদানের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই স্বাধীন, যদি না তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধমূলক অভিযোগ থাকে।