সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

লাউয়াছড়ায় কেউ মানে না ২০ কিলোমিটার গতি

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

গাড়ির চাকার গতির সঙ্গে বন্যপ্রাণীর জীবন জড়িত। নিয়ন্ত্রণহীন হলেই বন্যপ্রাণীরা চাকায় পিষ্ট হয়ে মুহূর্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।আর এ বিষয়টি যে নতুন হচ্ছে না তা নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে এ মৃত্যুর ভয়াবহ খেলা। গভীর উদ্বেগজনক ও বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণের স্বার্থে এটি নিয়ন্ত্রণের দাবি রাখে।

এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেই বিগত দু’ বছর আগে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ একটি ব্যতিক্রমী কার্যক্রম হাতে নিয়েছিল। এর ফলে কিছুদিন উপকার পেয়েছিল স্থানীয় বন বিভাগ।

ধীরে ধীরে তা আবার আগের অবস্থায় পৌঁছে যায়। আর বর্তমানে পুরো কার্যক্রম একেবারেই ভেস্তে গেছে। বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব ও এ বিষয়ে নানান তথ্য দ্বারা প্রশিক্ষিত চালকরাই এই রোডে তার নিজ নিজ গাড়িটি নিয়ন্ত্রণক্রমে চলানোর নীতিগত দাবি রাখেন।

সিলেট বিভাগের চিরসবুজ পাহাড়ি বন মৌলভীবাজারে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। এখানেই ২০২২ সালে ৩ মার্চ বন্যপ্রাণী রক্ষায় এ উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া সড়ক পথে সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতি নির্ধারণ করছিল বন বিভাগ। সেদিন বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ (ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল) সড়কে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুরোধে এই গতি নির্ধারণ করেন।

তৎকালীন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেট এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বিপন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষা করি, প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসি’ এ প্রতিপাদ্য বিষয়ে আমরা লাউয়াছড়ার ভেতরে একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করি। লাউয়াছড়া বনের ভেতরে চলে যাওয়া সড়কে যদি ২০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলাচল করে তবে বন্যপ্রাণীরা রক্ষা পাবে। বনের উভয় পাশে দুটি চেকপোস্ট বসবে, যাতে বনের ভেতর গাড়ি প্রবেশ করলে তার গতি নিয়ন্ত্রিত থাকে।

লাউয়াছড়ায় এক হাজার ২০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে লাউয়াছড়া পার্কের ভেতর আড়াই হাজারেরও অধিক প্রজাতির পাখি যার মধ্যে একাধিক প্রাণীর অস্তিত্ব দেশের অন্যান্য বনে প্রায় বিলুপ্ত। চার প্রজাতির উভচর, ছয় প্রজাতির সরীসৃপ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ আর ২৪৬ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

এছাড়াও মহাবিপন্ন উল্লুক, চমশা হনুমান, লজ্জাবতী বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরিণ, সিংহ ও বানরসহ অর্ধশত প্রজাতির জীবজন্তু রয়েছে। বনের ভেতরে প্রবেশ করলে মাঝে মাঝে চোখে পড়ে খাটাশ, বনমোরগ, উল্লুক, মেছোবাঘ, বনবিড়ালসহ বিভিন্ন জীবজন্তু আর উদ্যানের বিশাল বিশাল বৃক্ষরাজি, জীবজন্তুর হুংকার, ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ, বানরের লাফালাফি আর গাছের ওপরে বসে থাকা উল্লুকের ডাকাডাকি।

লাউয়াছড়া বন দিয়ে যাতায়াতকারী কোনো যানবাহনের চালকই এই গতি মানছেন না। এ প্রসঙ্গে জানাতে চাওয়া হলে লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, আসলে এখন তো কোনো চালকই সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানোর ব্যাপারটি মানছেন না। ফলে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এখানকার চলাচলকারী বন্যপ্রাণীরা।

সিলেট বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা এই রোডে চলাচলকারী চালকদের নিয়ে আগামীতে সচেতনতামূলক কোনো সভা করার চেষ্টা করবো। সিএনজিচালিত অটোরিকশাই এই রোডে বেশি চলাচল করে। রাস্তায় গতিনিয়ন্ত্রক স্থাপনসহ আরও কি কি পদ্ধতিতে গাড়ির চাকায় বন্যপ্রাণীদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধ করা যায় সে বিষয়েও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: