cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
১৯৮১ সালের মে মাসের কথা। রাজীব গান্ধী আমেঠি থেকে লোকসভার উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন। নিজের নির্বাচনী এলাকায় ঘুরছিলেন তিনি। কয়েক ঘণ্টা পর তাকে লখনউ থেকে দিল্লির বিমান ধরতে হবে। কিন্তু তখনই খবর এল যে ২০ কিলোমিটার দূরে তিলোইতে ৩০-৪০টি বস্তিতে আগুন লেগে গেছে। লখনউ যাওয়ার পরিবর্তে তিনি তিলোইয়ের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে ছিলেন।
সেখানে তিনি পুড়ে যাওয়া বস্তিতে বসবাসরত মানুষকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। তখনই পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা সঞ্জয় সিং তার কানে ফিসফিস করে বললেন, স্যার, আপনি আপনার ফ্লাইট মিস করবেন।
কিন্তু রাজীব গান্ধী মানুষের সঙ্গে কথা চালিয়ে যেতে থাকেন। সবার সঙ্গে কথা শেষ হওয়ার পরে তিনি হাসিমুখে সঞ্জয় সিংকে জিজ্ঞেস করলেন, এখান থেকে লখনউ পৌঁছতে কতক্ষণ লাগবে?
দ্য লোটাস ইয়ার্স – পলিটিকাল লাইফ ইন ইন্ডিয়া ইন দ্য টাইম অফ রাজীব গান্ধী’র লেখক অশ্বিনী ভাটনগর ব্যাখ্যা করেছেন, কমপক্ষে দুই ঘণ্টা, সঞ্জয় সিং উত্তর দিয়েছিলেন। কিন্তু আপনি যদি স্টিয়ারিং হাতে নেন, আমরা এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাব।
গাড়িতে বসেই রাজীব গান্ধী বললেন, ওখানে খবর পাঠিয়ে দিন যে আমরা এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে আমৌসি বিমানবন্দরে পৌঁছে যাব। রাজীব গান্ধীর গাড়ি যেন মহাকাশ যানের মতো চলতে শুরু করল। নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজীব গান্ধী বিমানবন্দরে পৌঁছিয়ে গিয়েছিলেন।
পাইলট ছিলেন রাজীব গান্ধী
দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর শখ ছিল যে রাজীব গান্ধীর, সেই তিনিই কিন্তু অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে বিমান চালাতেন। প্রথমে তিনি ডাকোটা চালাতেন কিন্তু পরে বোয়িং চালাতে শুরু করেন।
যখনই তিনি পাইলটের আসনে থাকতেন, ককপিট থেকে শুধুমাত্র নিজের নামটুকুই বলে যাত্রীদের অভিবাদন জানাতেন। ফ্লাইটের সময় তার পুরো নাম প্রকাশ না করার জন্য তার ক্যাপ্টেনদেরও নির্দেশ দেওয়া ছিল। তখনকার দিনে তিনি পাইলট হিসেবে বেতন পেতেন পাঁচ হাজার টাকা, যা সেই সময়ে বেশ ভালো বেতন হিসেবেই বিবেচিত হতো।
রাজীব-সোনিয়া প্রেম
রাজীব গান্ধী যখন কেমব্রিজে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ট্রাইপোস কোর্স করতে যান, তখন, ১৯৬৫ সালে সোনিয়ার সঙ্গে তার দেখা হয়। ইতালিতে জন্মগ্রহণকারী সোনিয়ার সঙ্গে বলতে গেলে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যান রাজীব গান্ধী। তারা দুজনেই একটি গ্রিক রেস্তোরায় যেতেন।
অশ্বিনী ভাটনগর লিখেছেন, রাজীব রেস্তোরাঁর মালিক চার্লস অ্যান্টনিকে সোনিয়ার পাশের টেবিলে বসার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য খুব করে ধরেছিলেন। একজন প্রকৃত গ্রিক ব্যবসায়ীর মতো চার্লস এজন্য তার কাছে দ্বিগুণ অর্থ আদায় করেছিলেন।
পরে তিনি রাজীব গান্ধীর উপর সিমি গারেওয়ালের একটি সিনেমায় বলেছিলেন যে আমি এর আগে কাউকে এত গভীর প্রেমে পড়তে দেখিনি। রাজীব যখন কেমব্রিজে পড়াশোনা করছেন, তখন তিনি নিজের খরচ চালানোর জন্য আইসক্রিম বিক্রি করতেন আর সাইকেলে চেপে সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। যদিও তার একটি পুরানো ভক্সওয়াগেন গাড়ি ছিল যার পেট্রোলের খরচ তার বন্ধুরা মিলে ভাগ করে নিতেন।
সোনিয়ার জন্য কবিতা
বিখ্যাত সাংবাদিক রশিদ কিদওয়াই সোনিয়া গান্ধীর জীবনী-গ্রন্থে কেমব্রিজে থাকাকালীন রাজীব গান্ধী ও সোনিয়ার দেখা করার কাহিনিগুলো উল্লেখ করেছেন। রশিদ কিদওয়াই লিখছেন, ভার্সিটি রেস্তোরাঁয় প্রতিদিনই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জমায়েত হত। তারা সবাই বিয়ার খেত। তাদের মধ্যে রাজীবই একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিয়ার স্পর্শও করতেন না। সে কারণেই সোনিয়ার নজর পড়েছিল লম্বা, কালো চোখ আর লোভনীয় হাসি দেয়া একটি নিষ্পাপ ছেলের দিকে।
দুদিক থেকেই সমান আকর্ষণ ছিল। প্রথমে রাজীব একটি রুমালে তার সৌন্দর্যের উপর একটি কবিতা লিখে ওয়েটারের মাধ্যমে সোনিয়ার কাছে পাঠিয়েছিলেন। সোনিয়া সেটা পেয়ে একটু অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলেন কিন্তু রাজীবের এক জার্মান বন্ধু, যিনি আবার সোনিয়াকেও চিনতেন, তিনি বার্তাবাহকের ভূমিকা পালন করেছিলেন, লিখেছেন রশিদ কিদওয়াই।
তিনি আরও লিখেছেন, মজার বিষয় হল রাজীব শেষ পর্যন্ত সোনিয়াকে বলেননি যে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে। অনেক দিন পর একটি পত্রিকায় ইন্দিরা গান্ধীর ছবি প্রকাশিত হয়। তখন রাজীব গান্ধী সোনিয়াকে বলেছিলেন যে ওটা তার মায়ের ছবি।
সেই সময়ে কেমব্রিজে অধ্যয়নরত একজন ভারতীয় ছাত্র তাকে বলেছিলেন যে ইন্দিরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তখনই সোনিয়া প্রথমবারের মতো টের পেলেন যে তিনি কত গুরুত্বপূর্ণ একজনের সঙ্গে প্রেম করছেন।
রাজীব-অমিতাভ বন্ধুত্ব
রাজীব গান্ধীর যখন চার বছর বয়স, তখন থেকেই তার সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের বন্ধুত্ব। অমিতাভ যখন মুম্বাইতে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য লড়াই করছেন তখন একবার রাজীব গান্ধী মুম্বাই গিয়েছিলেন তার সঙ্গে দেখা করতে। অমিতাভ বচ্চন তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন কৌতুক অভিনেতা মেহমুদের কাছে।
রশিদ কিদওয়াই লিখেছেন, তখন মেহমুদের ক্যাম্পোজ (ঘুমের ওষুধ) খাওয়ার অভ্যাস ছিল এবং তিনি সবসময় একটা ঘোরের মধ্যে থাকতেন। অমিতাভ তাকে রাজীবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু নেশা ঘোরে তিনি বুঝতে পারেননি যে তিনি কার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন।
তিনি পাঁচ হাজার টাকা বার করে নিজের ভাই আনোয়ারকে বললেন রাজীবকে সেটা দিতে। আনোয়ার জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি ওকে টাকা দিচ্ছেন কেন? মেহমুদ বলেন, যে ব্যক্তি অমিতাভের সঙ্গে এসেছে সে ওর থেকেও ফর্সা আর স্মার্ট। একদিন ও নিশ্চয়ই একজন আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে উঠবে। তাই আমার পরের ছবিতে সই করার অগ্রিম হিসাবে এই পাঁচ হাজার টাকা দিচ্ছি।
আনোয়ার জোরে হেসে উঠে রাজীবকে আবার পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললেন যে তিনি স্টার-ফার নন, তিনি ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে। মেহমুদ সঙ্গে সঙ্গে তার পাঁচ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে রাজীবের কাছে ক্ষমা চাইলেন। কিন্তু রাজীব ভবিষ্যতে একজন তারকাই হয়ে উঠবেন, চলচ্চিত্র তারকা নন, রাজনীতির তারকা, লিখেছেন কিদওয়াই।
মায়ের হত্যার খবর
বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধীকে সাহায্য করতে রাজনীতিতে আসেন রাজীব গান্ধী। কিন্তু কিছুদিন পরেই দেহরক্ষীদের হাতে খুন হতে হয় ইন্দিরা গান্ধীকে। রাজীব গান্ধী তখন পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন। বিমান বাহিনীর যে বিমানে রাজীব গান্ধী দিল্লিতে ফিরেছিলেন, তার সঙ্গে সেই বিমানেই ছিলেন শীলা দীক্ষিত, যিনি পরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
শীলা দীক্ষিত বিবিসিকে বলেন, বিমানটি আকাশে ওড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজীব ককপিটে পাইলটের কাছে যান। সেখান থেকে ফিরে তিনি আমাদের বিমানের পিছনের দিকে ডেকে নিয়ে জানান যে ইন্দিরাজি আর নেই। তারপর তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত?
প্রণব মুখার্জি উত্তর দিয়েছিলেন যে সবথেকে সিনিয়র মন্ত্রীকেই তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ বাক্য পাঠ করানোর একটি রীতি আগে থেকেই আছে, পরে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আমার শ্বশুর উমাশঙ্কর দীক্ষিত বলেছিলেন যে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বানানোর ঝুঁকি না নিয়ে রাজীবকেই প্রধানমন্ত্রী করা হবে।
প্রণব মুখার্জির পরামর্শ
আমি শীলা দীক্ষিতকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে সবথেকে সিনিয়র মন্ত্রীকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী করার যে পরামর্শ মুখার্জি দিয়েছিলেন, সেটাই কি পরে তার বিপক্ষে চলে গিয়েছিল?
শীলা দীক্ষিতের উত্তর ছিল, হ্যাঁ, সে তো একটু গিয়েইছিল, কারণ যখন রাজীব জিতে এলেন, তখন তিনি প্রণবকে তার মন্ত্রিসভায় নেননি, যেখানে তিনি ইন্দিরার মন্ত্রীসভায় দুই নম্বর মন্ত্রী ছিলেন। কিছু দিন পর প্রণব দলও ছেড়ে দিয়েছিলেন। সবথেকে সিনিয়র মন্ত্রী তো তিনিই ছিলেন।
তবে আমি মনে করি না যে তিনি (প্রণব মুখার্জি) নিজের প্রার্থিতা শক্তিশালী করার জন্য ওই কথাগুলি বলেছিলেন। তিনি শুধুমাত্র পুরানো উদাহরণ তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠী সম্পূর্ণ অন্যভাবে বিষয়টিকে রাজীবের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন,বলেছিলেন শীলা দীক্ষিত।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে উদ্ধার
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাজীব গান্ধী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক কাজ করেছেন। দলত্যাগ বিরোধী আইন, ১৮ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার এবং ভারতকে একটি আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত করার ক্ষেত্রে রাজীব গান্ধীর একটি বড় ভূমিকা ছিল।
অশ্বিনী ভাটনগর বলছেন, তিনি শপথ নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে হোক, দূষণের ক্ষেত্রে হোক বা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সাফসুতরো করার ক্ষেত্রে অথবা কংগ্রেসের শতবর্ষ উদযাপনে তার দেয়া বক্তৃতা। এইসব কাজের জন্য সব মানুষের মধ্যে একটা ভালো-লাগা আর বিস্ময়ের মিশ্রণ ঘটিত অনুভূতি তৈরি হত।
এখন সবাই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা বলে, রাজীব ১৯৮৮ সালে চার হাজার কিলোমিটার দূরে মালদ্বীপে আঘাত হেনেছিলেন, দশ ঘণ্টার নোটিসে আগ্রা থেকে তিন হাজার সৈন্যকে বিমানে করে উঠিয়ে আনা হয়েছিল। সেখানে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়েছিল এবং তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তারা (ভারতীয় সেনা) যে শুধু (প্রেসিডেন্টকে) ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনে তাই নয়, যারা তার বিরোধিতা করেছিল, তাদের গ্রেপ্তার করায় তারা, লিখেছেন অশ্বিনী ভাটনগর।
গভীর রাত পর্যন্ত জাগতেন রাজীব
রাজীব গান্ধী খুব ভোরে উঠে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতেন। একবার তিনি হায়দ্রাবাদ গিয়েছিলেন একটি সভায় যোগ দিতে। সেই সময় অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এনটি রামা রাও।
ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ, যিনি রাজীবকে ঘনিষ্ঠভাবে জানতেন এবং পরে প্রধান তথ্য কমিশনার এবং সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন, তার স্মরণে আছে, এনটি রামা রাওয়ের সঙ্গে তেলেগু-গঙ্গায় বৈঠক হচ্ছিল। রামা রাও খুব তাড়াতাড়ি, আটটা নাগাদ ঘুমোতে যেতেন, যাতে তিনি ভোর তিনটের সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারেন। এই বৈঠকটা রাত ১০টার দিকে নির্ধারিত ছিল।
ওই প্রকল্পটি নিয়ে এনটিআর এবং ভারত সরকারের মধ্যে বড়সড় মতপার্থক্য ছিল। বৈঠকে এনটিআরের চোখ ঘুমে বন্ধ হয়ে আসছিল। রাজীব যখনই তাকে জিজ্ঞাসা করতেন, এ বিষয়ে আপনার মতামত কী, এনটিআর চোখ বুজেই বলে দিতেন, আমি একমত নই, এই বলে আবারও ঘুমিয়ে পড়তেন, বলেছেন হাবিবুল্লাহ।
তার কথায়, মিটিং শেষ হয় রাত ১১টার দিকে। তারপর রাও সাহেব খুব বিনয়ের সঙ্গে রাজীব গান্ধীকে বললেন, স্যার, এই বৈঠকের জন্য এত রাত পর্যন্ত জেগে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। রাজীব বলল, আরে, এটা তো কোনও রাতই না, ঘুমোতে যাওয়ার আগে আমার অনেক কাজ আছে; কথাটা বলেই রাজভবনের সিঁড়ি দিয়ে তাড়াতাড়ি নিজের শোওয়ার ঘরের দিকে চলে গেলেন।
রাজীব গান্ধী ১৯৮৫ সালের এক গভীর রাতে স্বরাষ্ট্র সচিব রাম প্রধানকে ফোন করেন। তখন প্রধান গভীর ঘুমের মধ্যে। তার স্ত্রী ফোন তুললেন। রাজীব গান্ধী বললেন, প্রধান সাহেব কি ঘুমোচ্ছেন? আমি রাজীব গান্ধী বলছি সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রী তাকে জাগিয়ে তোলেন। রাজীব গান্ধী জিজ্ঞাসা করেন, আপনি আমার বাড়ি থেকে কতদূরে থাকেন?
প্রধান জানান, তিনি পাণ্ডারা রোডে থাকেন। রাজীব গান্ধী বলেন, আমি আপনার কাছে আমার গাড়ি পাঠাচ্ছি। আপনি যত তাড়াতাড়ি পারে এখানে চলে আসুন। সেই সময় পাঞ্জাবের রাজ্যপাল সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় রাজীব গান্ধীর কাছে কিছু প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন।
যেহেতু রামা রায় সেরাতেই চণ্ডীগড়ে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন, তাই রাজীব গান্ধী সেই রাতেই স্বরাষ্ট্র সচিবকে ডেকে পাঠান। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে পরামর্শ চলতে থাকে। রাত দুটোয় সবাই যখন বেরিয়ে যাচ্ছেন, রাজীব গান্ধী রাম প্রধানকে তার গাড়িতে বসতে বলেন। মি. প্রধান ভেবেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী তাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে চান।
কিন্তু গেট থেকে গাড়ি বের করার পর রাজীব গান্ধী হঠাৎ বাঁ দিকে মোড় নিয়ে প্রধানকে জিজ্ঞাসা করলেন, পাণ্ডারা রোড কোন দিকে সেটা জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেছি।
এতক্ষণে প্রধান বুঝতে পেরেছিল রাজীব গান্ধী কী করতে চাইছেন। তিনি গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে বললেন, স্যার, আপনি যদি গাড়ি না ফেরান, তাহলে আমি চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দেব। প্রধান তাকে মনে করিয়ে দেন যে তিনি তাকে কথা দিয়েছিলেন যে তিনি এই ধরনের ঝুঁকি নেবেন না। অনেক কষ্টে রাজীব গান্ধী গাড়ি থামালেন এবং স্বরাষ্ট্রসচিব অন্য গাড়িতে না ওঠা পর্যন্ত সেখানেই অপেক্ষা করে রইলেন।
বোফর্স কাণ্ডে নাম আসা
সম্ভবত রাজীব গান্ধীর প্রথম ভুল পদক্ষেপ ছিল শাহ বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরেও সংসদে একটি নতুন আইন নিয়ে আসা। বোফর্সের দালালি মামলায় তার নাম প্রকাশ্যে আসার পর তার ভাবমূর্তি এতটাই কলঙ্কিত হয়েছিল যে তিনি ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে হেরে যান।
অশ্বিনী ভাটনগর বলছেন, মিথ্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল বোফর্স দিয়ে। সেই নির্বাচনে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং একটি বিশাল মিথ্যা কথা বলেছিলেন। একটি নির্বাচনী সমাবেশে তিনি তার কুর্তার পকেট থেকে একটি কাগজ বের করে খুব নাটকীয়ভাবে দেখিয়ে বলেছিলেন, এতে রাজীব গান্ধীর সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নম্বর রয়েছে যেখানে বোফর্স থেকে প্রাপ্ত কমিশন জমা করা হয়েছে। তিনি ভান করেছিলেন যেন তিনি সেটি পড়তে যাচ্ছেন কিন্তু তারপর তিনি থেমে যান।
সে সময়, ভারতের জনগণের মধ্যে তার (বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের) বিশ্বাসযোগ্যতা এত বেশি ছিল যে লোকেরা বিশ্বাস করেছিল যে তিনি যা বলছিলেন তা সঠিক। ফলস্বরূপ বোফর্স তো সাইডলাইনে চলে গেল আর রাজীব গান্ধী ‘চোর হ্যায়’ স্লোগান প্রতিটি রাস্তায় ধ্বনিত হতে শুরু করল। এখনও কেউ জানে না সত্য ঘটনাটা কী, বোফর্সে কী বেরিয়ে এসেছিল! লিখেছেন ভাটনগর।
আদালত সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আজ পর্যন্ত এটা প্রমাণিত হয়নি যে কত টাকা দেয়া হয়েছিল এবং কাকে দেয়া হয়েছিল বা আদৌ দেয়া হয়েছিল কি না। ভিপি সিং যে ত্রুটিপূর্ণ কামান আমদানি করার অভিযোগ এনেছিলেন, সেটা তো খারিজ হয়েই যায় কার্গিল যুদ্ধে। কার্গিল জয়ে বোফর্স কামান একটা বড় ভূমিকা রেখেছিল।