সর্বশেষ আপডেট : ৮ মিনিট ১৪ সেকেন্ড আগে
বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

ঝাড়-ফুঁকের নামে আফ্রিকায় নারীদের যৌন হেনস্তা

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
আফ্রিকার অনেক দেশ আর্থ-সামজিক দিক থেকে পিছিয়ে আছে। এসব দেশে জীবনযাত্রার মান তেমন উন্নত নয়। তারা মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। এসব দেশে এখনো অনেকে চিকিৎসার জন্য কবিরাজের কাছে যাচ্ছেন।

আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে চিকিৎসার নামে ‘আধ্যাত্মিক কবিরাজরা’ নারীদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও শোষণ করছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

তদন্তে দেখা গেছে, আফ্রিকার কয়েকটি দেশে জ্বিন তাড়ানোর নামে ঝাড়-ফুঁক করিয়ে থাকে এমন কিছু পুরুষ। ‘আধ্যাত্মিক কবিরাজ’ সেজে নারীদের ওপর যৌন অত্যাচার ও শোষণ চালাচ্ছে।

আরব মুসলিম বিশ্বের কিছু দেশে ‘আধ্যাত্মিক চিকিৎসা’ নামে পরিচিত একধরনের ঝাড়-ফুঁক বেশ জনপ্রিয়। এই কবিরাজদের কাছে যারা যান তাদের বেশির ভাগই নারী। এই নারীরা বিশ্বাস করেন, এধরনের ঝাড়-ফুঁকের মাধ্যমে খারাপ জ্বিনের অশুভ প্রভাব দূর করে নানা সমস্যার সমাধান, রোগের চিকিৎসা ইত্যাদি করা সম্ভব।

আফ্রিকার দুটি দেশ মরক্কো ও সুদানে এধরনের ঝাড়-ফুঁক বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এ দুটি দেশে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ৮৫ জন নারীর জবানবন্দী সংগ্রহ করেছে বিবিসি। এই নারীরা মোট ৬৫ জন ‘কবিরাজের’ নাম উল্লেখ করেছেন, এবং তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে ধর্ষণ পর্যন্ত নানা অভিযোগ এনেছেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন এনজিও, আদালত, আইনজীবী এবং অন্য নারীদের সাথে কথা বলা হয়েছে। যৌন অত্যাচারের গল্পগুলো সংগ্রহ করে যাচাই করা হয়েছে।

এছাড়া বিবিসির প্রতিবেদক তদন্তের স্বার্থে রোগী সেজে এ রকম কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। বিবিসির সংবাদিক জানিয়েছেন, তার শরীরে অশোভনভাবে হাত দেয়া হলে তিনি ওই স্থান ছেড়ে পালিয়ে যান। এসব ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হতো বদ জ্বিনের ভয় দেখিয়ে। বলা হতো, এই তথ্য ফাঁস করে দিলে বদ জ্বিন লেলিয়ে দিয়ে ক্ষতিসাধন করবেন। এর ফলে পুলিশ ও আদালত তো দূরের কথা অনেকে তার পরিবারের সদস্যদেরও জানাননি।

সুদানে বিবিসি ৫০ জন নারীর সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের মধ্যে তিনজনই বিশেষ একজন আধ্যাত্মিক নেতার কথা বলেছেনন। তার নাম শেখ ইব্রাহিম। একজন নারী বলেছেন, ‘তাকে শেখ ইব্রাহিম যৌন মিলন করতে বাধ্য করেছেন।’

আলাফ নামে আরেক নারী বলেছেন, ‘শেখ ইব্রাহিম তার সঙ্গে যৌন মিলন করতে চাইলে তিনি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।’ তিনি বলেন, ‘তার নিজেকে ক্ষমতাহীন মনে হয়েছিল। শেখরা যে এসব বলে বা করে এটা অনেক লোক বিশ্বাস করে না। আমি সাক্ষী কোথায় পাবো? ওই ঘরে আমি তার সামনে ছিলাম তা তো আর কেউ দেখেনি।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে ছদ্মবেশে এক সাংবাদিক শেখ ইব্রাহিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি ‘সন্তান হচ্ছে না এমন এক নারী’ পরিচয়ে শেখ ইব্রাহিমের কাছে গিয়েছিলেন। শেখ ইব্রাহিম তাকে মাহায়া নামে এক বোতল উপশমকারী পানি তৈরি করে দিয়েছেন।

ওই সাংবাদিক বলেছেন, ‘আমি যখন ইব্রাহিমের ঘরে প্রবেশ করলাম তখন আমার খুব কাছ ঘেঁষে বসলেন শেখ ইব্রাহিম। আমার পেটের ওপর হাত রাখলেন। আমি হাত সরাতে বললে তিনি তার হাত কাপড়ের ওপর দিয়ে যৌনাঙ্গের ওপর রাখলেন।’

বিবিসি তাদের সব সাক্ষ্যপ্রমাণ মরক্কো ও সুদান কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়েছিল। তবে দেশ দুটি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নারাজ।

সুদানের ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিবার ও সমাজ বিভাগের প্রধান ড. আলা আবু জেইদ বলেছেন, ‘দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য এটি এখন অগ্রাধিকারের মধ্যে নেই।’

মরক্কোর ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী আহমেদ তৌফিক বলেন, ‘এসব বিষয়ে আইনগতভাবে হস্তক্ষেপ করা কঠিন। সমাধান হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষা ও তার প্রচার।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: