সর্বশেষ আপডেট : ৭ ঘন্টা আগে
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সব পক্ষের সহযোগিতায় ঘুরে দাঁড়াতে চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা যদি পর্যাপ্ত সহযোগিতা করে, তবে তারা দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। তাদের দাবি, ‘আমাদের দোকান করার সুযোগ দিক। এই স্থান পরিষ্কার করে দোকান করতে দেয়া হোক। এরপর সরকার এটাকে বিল্ডিং বা মার্কেট করুক, এতে আমাদের আপত্তি নেই।’

এক মুহূর্তের আগুন প্রায় নিঃস্ব করে দিয়েছে রাজধানীর বঙ্গবাজার ও আশপাশের বিপণিবিতানগুলোর ব্যবসায়ীদের। তাদের ভাষ্য, মঙ্গলবার ভোরের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে ৫ হাজারের বেশি দোকান। ছাইয়ে মিশে গেছে ঈদ ঘিরে তোলা নতুন পোশাক-আশাক। এতে ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার। অনেক ব্যবসায়ী একেবারে পথে বসে গেছেন।

বুধবার সকালে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বঙ্গবাজার ও আশপাশের মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, আগুন লাগলেও যেসব স্থান পুরোপুরি পোড়েনি, সেখান থেকে মালামাল উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সিঁড়ি দিয়ে নামাতে ঝামেলার কারণে অনেকে ওপর তলা থেকে বস্তায় ভরে নিচে ফেলছেন মালামাল। সেখান থেকে বাকিরা উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে রাখছেন।

কাঠের তৈরি যেসব মার্কেটে আগুন লেগে দোকান পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে, সেসব স্থানে থাকা বিভিন্ন টিন, লোহার অংশসহ আরও সরঞ্জামাদি লোকজন তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও তাদের বাধা দিচ্ছেন না। আশাহত ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগুনে কোটি কোটি টাকা নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো দিয়ে আর কী করব?

তবে এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই আবার উঠে দাঁড়াতে চান ব্যবসায়ীরা। এ জন্য চাইছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সহযোগিতা।

বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং এনেক্সকো টাওয়ারের পরিচালক নাজমুল হুদা বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থা যদি আমাদের দিকে একটু মনোযোগ দেয়, তাহলে আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে উঠতে পারব।’

আগুনে কত ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এখানে কিছু সিটি করপোরেশনের মার্কেট আছে। আবার ব্যক্তিমালিকানার মার্কেট আছে। তাই সব হিসাব করে মোট সংখ্যা বলতে আমাদের একটু সময় লাগবে।’

নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমাদের এই মার্কেট ঘিরে তিনটা গোষ্ঠী। একটি পক্ষ হলো- যারা আমরা ব্যবসা করি, আরেকটা কর্মচারী। তৃতীয়টা হলো পাওনাদার, যারা আমাদের মালামাল দেন, তারাও কিন্তু আজকে ক্ষতির সম্মুখীন। তারা ভাবছেন যে কীভাবে আবার ব্যবসাটা দাঁড়াবে, তারা কীভাবে তাদের পাওনা পাবেন।’

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘ঈদ নিয়ে আমাদের যে আয়োজন সেখানেও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সব বেসামাল হয়ে গেছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, মানবিক বিষয়। আমরা রাত-দিন পরিশ্রম করব। ভুল থাকলে সংশোধন করব।’

বঙ্গবাজার মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে বারবার সাবধান করা হয়েছে। সামনে সতর্ক হবেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা মনে করি না। আমরা মনে করি, একটা ধারাবাহিক অবস্থা এসেছে। সেটা নির্ভরযোগ্য অবস্থা। পূর্বে আমরা মাঠে থেকেছি। এটা একটা ঐতিহ্যবাহী মার্কেট। এটা ভেঙে দিলে আমরা দুই তিন বছরের মধ্যে পুনর্বাসিত হয়ে যেতে চাই। বিলম্ব হলে তো আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না।

বঙ্গবাজার মার্কেটের হকার আবু তাহের বলেন, ‘সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যেন ছেলেমেয়ে নিয়ে একটু খেতে পারে, সরকার যেন তাদের একটু সহযোগিতা করে। সহযোগিতা করলে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। অন্যথায় তারা দুশ্চিন্তায় আরও নিঃস্ব হয়ে যাবে। অনেকে হার্ট অ্যাটাকও করতে পারে।’

এদিকে বঙ্গবাজার-সংলগ্ন এনেক্সকো মার্কেটে বুধবার দুপুর পর্যন্তও আগুন জ্বলছিল। ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার মো. জাহিদ বলেন, এনেক্সকো মার্কেটের পাঁচতলায় এখনো আগুন জ্বলছে। আমরা সেগুলো নির্বাপণের চেষ্টা করছি। আর ব্যবসায়ীদের মালামালগুলো উদ্ধার করছি।

গত মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার অন্যতম বড় পোশাক মার্কেট বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একে একে অর্ধশত ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তাদের সঙ্গে পুলিশ, র‌্যাব, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভয়াবহ এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: