সর্বশেষ আপডেট : ১১ ঘন্টা আগে
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

পাখা মেলছে স্বপ্নের মেট্রোরেল

স্বপ্নের মেট্রোরেল এখন পাখা মেলছে। প্রতিদিনই হচ্ছে ট্রায়াল রান। সাত সেট ট্রেন ঢাকায় পৌঁছে গেছে। এক সেট আছে মোংলা সমুদ্রবন্দর। ডিসেম্বরের মধ্যে দশটি ট্রেন সেট ঢাকায় পৌঁছবে। জানুয়ারিতে উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত প্রদর্শনী কেন্দ্রটি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেখানে সাধারণ মানুষ শিখতে পারবেন কীভাবে টিকিট মেশিনে দিয়ে মেট্রোরেলে আরোহণ করতে হয়। প্রথমদিকে ছাত্রছাত্রীদের জন্য এ ট্রায়াল উন্মুক্ত করা হবে। তারপর সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ তা জানতে পারবেন।

মেট্রোরেলের বর্তমান অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি হায়াখাওয়া ইয়োহো মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটি হামাগুড়ি দিচ্ছিল ৬ মাস আগেও। এখন হাঁটতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, মেট্রোরেল ঢাকার মানুষের জীবনকে বদলে দেবে। যানজটে নাকাল মানুষ পাবেন স্বস্তি। ঢাকার প্রথম মেট্রোরেলে (এমআরটি-৬) ব্যয় হচ্ছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এ ট্রেন লাইন উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মিরপুর, আগারগাঁও, শাহবাগ, মতিঝিল হয়ে কমলাপুর গিয়ে শেষ হবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের অধীন প্রকল্পটির অর্থায়নকারী জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকা।

ঢাকায় জাপানি দূতাবাস একদল সাংবাদিককে মেট্রোরেলের অগ্রগতি দেখানোর জন্য দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মেট্রোরেলের ডিপোতে নিয়ে যায়। সেখানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে মেট্রোরেলের বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্তরা কাজের অগ্রগতি অবহিত করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মিরপুর হয়ে আগারগাঁও পর্যন্ত ট্রেন সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তার আগে একাধিক টেস্ট যেমন পারফরম্যান্স টেস্ট, ইন্টিগ্রিটি টেস্ট হবে। তারপর ৫ মাস পর্যন্ত যাত্রী ছাড়া চলবে ট্রেন। এসব পরীক্ষা সফল হলে যাত্রীসহ ট্রেনের চলাচল শুরু হবে। ঢাকার মানুষ সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়।

মেট্রোরেলের ভাড়া এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের স্টেশনে দাঁড়িয়ে এমএএন সিদ্দিক বলেন, ভাড়া জনগণের সামর্থ্যরে মধ্যে থাকবে। মেট্রোরেল থেকে সরকার কোনো লাভ করবে না। এটা পরিচালনার জন্য ব্যয় যা হয় ভাড়ার টাকায় সেই ব্যয় মেটানো হবে।

এমআরটি-৬ শুধু নয়, ঢাকায় একটি সাবওয়েসহ আরও দুটি মেট্রোরেল হচ্ছে। তার মধ্যে মাটির নিচ দিয়ে সাবওয়ের কাজ শুরু হয়েছে। মাটির গুণাগুণ নির্ধারণে এখন চলছে ‘সয়েল টেস্ট’। এমআরটি-১ নামের সাবওয়ে লাইনটি হবে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে। মেট্রোরেলের এই লাইনের একটি শাখা পূর্বাচল পর্যন্ত যাবে। এমআরটি-৫ (নর্থ) নামের আরেকটি মেট্রোরেল হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্করে এমআরটি-৬ এর সঙ্গে ক্রসিংয়ের সৃষ্টি করবে। ফলে এক ট্রেনের যাত্রী নেমে অন্য ট্রেন ধরতে পারবেন। নতুন বাজারে এসে মাটির নিচ দিয়ে গিয়ে এমআরটি-১ এর সঙ্গে ক্রসিং হবে। এমআরটি-৫ (নর্থ) লাইনটি হেমায়েতপুর থেকে ভাটারায় শেষ হবে।

দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রতি সাড়ে তিন মিনিটে চলবে একটি ট্রেন। এটা হলো গড় ফ্রিকোয়েন্সি। অফিস সময়ে ফ্রিকোয়েন্সি বাড়বে। অন্য সময়ে কম থাকবে। বসে ও দাঁড়িয়ে প্রতি ট্রেনে দুই হাজার তিনশ আটজন যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে ট্রেন লাইনটি দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তা কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। মেট্রোরেলের এ লাইনে ১৬টি স্টেশন থাকবে। প্রাথমিকভাবে আগারগাঁও পর্যন্ত নয়টি স্টেশন চালু হবে।

ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, মেট্রোরেল চালু হলে বাংলাদেশে নতুন যুগের সূচনা হবে। কোভিডের কারণে বাধা সত্ত্বেও মেট্রোরেলের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আগামী বছর আমাদের দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। ওই সময়ে বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হবে। কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে।

মেট্রোরেলে ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। যদিও ১১০ মিটার গতিতে চলার সক্ষমতা এ ট্রেনের রয়েছে। ট্রেনের বেশিরভাগ উপাদান যেমন কারবডি, বগি, প্রপালশন সিস্টেম, ট্রেনের তথ্য ব্যবস্থা, পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেম, ডোর অপারেটর, হুইল ও এক্সেল জাপানের। ব্রেক সিস্টেম জার্মানি ও এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিট আনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। ট্রেনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা খুবই উচ্চ। যাত্রীদের নিরাপত্তায় ট্রেনের ভেতরে ও বাইরে সিসিটিভির ব্যবস্থা থাকবে। সিগন্যালিং ব্যবস্থা জাপানের মতোই অত্যাধুনিক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: