cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
করো’নাভাই’রাস কেড়ে নিয়েছে স্বামীকে। তারও আগে করো’নাকালেই গেছে দুজনের চাকরিও। চাকরি হা’রানোর পর স্বামী মতিউর রহমান (২৯) ভাড়ায় ইজিবাইক চালাতেন। কিন্তু দেড় মাসের মা’থায় করো’নাভাই’রাসে আ’ক্রান্ত হয়ে মা’রা যান তিনি।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন স্কুলশিক্ষক মায়িশা ফারাহ্ (২৪)। পাঁচ ও আড়াই বছর বয়সী দুই শি’শুকন্যা এবং বৃদ্ধ মা–বাবাকে নিয়ে দিশেহারা তিনি। অবুঝ শি’শুসন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে ফুটপাতে মানুষের কাছে হাত পেতেছেন। চেয়েচিন্তে কোনোরকমে বেঁচে থাকার ল’ড়াই করেছেন। সবার খাবার জোটাতে শিক্ষকতার পেশা খুইয়ে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নিয়েছেন।
করো’নায় স্বামীর সঙ্গে চাকরি হারিয়ে নিঃস্ব মায়িশা ফারাহ্ বৃদ্ধ মা–বাবা আর অবুঝ সন্তানদের নিয়ে থাকেন বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায়। মাস শেষে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ বাড়িভাড়া দিতে হয় প্রায় সাত হাজার টাকা। এর বাইরে সংসার খরচ ছাড়াও সন্তানের দুধ, মা–বাবার ওষুধ কেনার টাকা জোগাতে হয় তাঁকে।
মায়িশা ফারাহ্ বগুড়া শহরের খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আকবরিয়া লিমিটেডে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ শুরু করেছেন। গত ২৮ জুলাই সকালে শহরের আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেলের সামনেই কথা হয় তাঁর সঙ্গে। করো’নায় স্বামী, পেশা হা’রানো ছাড়াও বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও সংকটের গল্প শোনান তিনি।
মায়িশা ফারাহ্ জানান তাঁর জন্মপরিচয় অজানা। শৈশবে আশ্রয় হয়েছিল ঢাকার ইস’লামপুরে মাদার তেরেসা অরফানেজ পরিচালিত শি’শুসদনে (এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠান)। সেখান থেকে ১৯৯৬ সালে নিঃসন্তান দম্পতি রুস্তম আলী ও নেকনূর খাতুন দত্তক নেন মায়িশাকে। রুস্তম আলী জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজে’লা সদরের বাসিন্দা। নেকনূর খাতুন বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। সেই সুবাদে বগুড়া শহরে বসবাস মায়িশার।
মায়িশা ফারাহ্র ভাষ্যমতে, অনাথ আশ্রমের শি’শুকে দত্তক নেওয়ায় পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন বাবা। মায়ের শিক্ষকতার উপার্জনেই সংসার চলত। ভাড়া বাসায় বড় হয়েছেন। মা অবসর নেওয়ার পর সংসারে আর্থিক অসচ্ছলতা প্রকট হয়। অভাব–অনটনের মধ্যেই ২০১৩ সালে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৫ সালে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে একই কলেজে স্নাতকে ভর্তি হন। ২০১৮ সালে স্নাতকও হন তিনি।
স্নাতক শ্রেণিতে পড়ার সময় এক বান্ধবীর মাধ্যমে নাটোরের সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মতিউর রহমানের সঙ্গে পরিচয় হয়। মতিউরের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজে’লা সদরে। তাঁর বাবা মোজাফফর রহমান রানীনগর শের–ই–বাংলা কলেজের শিক্ষক ছিলেন।
পরিচয় থেকে প্রে’ম, পরে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু অনাথ আশ্রম থেকে দত্তক নেওয়া মে’য়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হননি মতিউর রহমানের মা–বাবা। ২০১৬ সালে মা-বাবার অমতেই তিনি বিয়ে করেন মায়িশাকে। বিয়ের পর বগুড়ায় মা-বাবার ভাড়া বাসাতেই মায়িশা স্বামীকে নিয়ে থাকতেন। বিয়ের এক বছরের মা’থায় কন্যা সুহিতার (৫) জন্ম হয়। আড়াই বছর পর দ্বিতীয় মে’য়ে ছেহেরিশের জন্ম হয়। সংসারে বৃদ্ধ মা–বাবা আর সন্তানের ভরণপোষণের খরচ চালাতে মতিউর রংপুরে একটি বেসরকারি বিমা কোম্পানিতে অফিস সহকারী পদে চাকরি নেন। বেতন ছিল মাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।
মায়িশা ফারাহ্র জীবনের গল্প এগিয়ে চলে। তিনি বলেন, ‘স্বামীর একার উপার্জনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এ কারণে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকার ম’রিয়ম কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতায় যোগ দিই। সম্মানী পেতাম ২ হাজার ২০০ টাকা। স্কুল শেষে পাঁচ-ছয়টি শি’শুকে পড়াতাম। এতে আরও হাজার তিনেক টাকা আয় হতো। স্বামী আর আমা’র উপার্জনে ভালোই চলছিল। কিন্তু করো’না সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিল।’
গত বছর মা’র্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলে শিক্ষকতার চাকরি হারাতে হয় মায়িশাকে। টিউশনিও বন্ধ হয়ে যায়। ওদিকে করো’নার কারণে জনবল ছাঁটাই করায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে চাকরি হারান স্বামী মতিউর রহমান। দুজনেরই চাকরি হা’রানোর কারণে দিশেহারা অবস্থা। মায়িশা বলেন, ‘অনাহারে–অর্ধাহারে দিন কাটতে থাকে। লজ্জায় কারও কাছে হাত পাততেও পারি না, চেয়েচিন্তে খেতেও পারি না। লকডাউনে সংসার অচল। বগুড়া শহরে কেউ চেনে না। কাজ কে দেবে! শেষে মতিউর নওগাঁর রানীনগরে ফিরে যান। সেখানে ভাড়ায় ইজিবাইক চালাতে শুরু করেন।’
সন্তানের কা’ন্না আর ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে সেপ্টেম্বর মাস থেকে মাকে নিয়ে রাস্তায় নামেন মায়িশা। মানুষের কাছে হাত পেতে চেয়েচিন্তে সন্তানের দুধ কেনেন। ‘মানুষের কাছে আকুতি–মিনতি করি—ভাই, আমি ডিগ্রি পাস করেছি, করো’নায় চাকরি হারিয়েছি। সন্তানের দুধ কেনার টাকা নেই। ১০টা টাকা ভিক্ষা দেন। মানুষ বিশ্বা’স করতে চায় না, নানা কথা শোনায়। রাস্তাঘাটে উ’ত্ত্যক্তের শিকার হতে হয়,’ বলে যান মায়িশা।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর নওগাঁ থেকে খবর আসে মতিউর করো’নায় আ’ক্রান্ত। প্রচণ্ড জ্বর, শ্বা’সক’ষ্ট। তাঁকে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লে। ৩০ ডিসেম্বর মুঠোফোনে স্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেন হাসপাতাল থেকে। মতিউর মায়িশাকে বলেন, ‘খুব ক’ষ্ট হচ্ছে, মাফ করে দিয়ো।’ ৩১ ডিসেম্বর শ্বা’সক’ষ্ট বেশি হয়। আইসিইউর ব্যবস্থা না হওয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা’রা যান মতিউর। মায়িশা বলেন, ‘করো’নায় মা’রা যাওয়ার কারণে শেষ দেখাও হয়নি ওর সঙ্গে। তিন দিন পর সন্তানদের নিয়ে শুধু কবর দেখে এসেছি।’
গত মা’র্চে বগুড়া শহরের একটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে অনলাইনে পণ্য সরবরাহের কাজ নেন মায়িশা। হেঁটে হেঁটেই মানুষের বাসাবাড়িতে পণ্য সরবরাহ করে দিন শেষে গড়ে ১৫০ টাকা উপার্জন হতো। কিন্তু রমজান মাসে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় অনলাইনে বিক্রি–মন্দার কারণে কাজ হারাতে হয়। সবশেষে একটা কাজের জন্য আকবরিয়া লিমিটেডে যান মায়িশা। সেখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজের আশ্বা’স পান।
আকবরিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসান আলী বলেন, ‘ঈদের আগে মায়িশা ফারাহ্ আমা’র কাছে চাকরির জন্য এসেছিলেন। তাঁর জীবনযু’দ্ধের কাহিনি শুনে তাঁকে আমা’র প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতা বিভাগে একটা কাজ দেওয়ার আশ্বা’স দিয়েছি। তিনি পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করেছেন। তবে এখনো তাঁকে কাজ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, বেতন–ভাতার ব্যাপারেও আলোচনা হয়নি।’