সর্বশেষ আপডেট : ১০ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

কাল থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা

মামুন পারভেজ ::

বাঙালী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীর উৎসব দুর্গাপূজার আর মাত্র বাকি একদিন। তাই চরম ব্যস্ততায় সময় পার করছেন সিলেটের মৃৎশিল্পীরা। রংতুলির আঁচড়ে প্রতিমা তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

গতকাল সরেজমিনে নগরীর দাড়িয়াপাড়ায় বল্লব নারায়ণ মৃতশিল্পে গিয়ে দেখা যায় চরম ব্যস্ততায় সময় পার করছেন শিল্পীরা। মূর্তি তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কাস্টমাররা গাড়ি নিয়ে আসছেন একের পর এক। চাহিদামত ডেলিভারী দিতে ব্যস্ত শিল্পীরা। করোনা পরিস্থিতির প্রভাবে এবার নগরীতে পূজা তেমন কমেনি বলে জানান শিল্পীরা। তবে আয়োজনের দিক থেকে কিছুটা সীমিত পরিসরে করা হবে বলে জানান বল্লব নারায়ণ মৃতশিল্পের দুলাল পাল। তিনি বলেন মূর্তির অর্ডার গতবছরের মতই এসেছে। তবে আকারে ছোট মূর্তির চাহিদা এবছর বেশি। এবছর তারা ৫০টি মূর্তির কাজ করেছেন। যার মধ্যে ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম রয়েছে। সিলেট মহানগর এলাকায় মোট ৬৪টি পূজার আয়োজন করেছেন পূজারীরা। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৪৯টি ও পারিবারিক ১৫টি। যার মধ্যে বেশির ভাগই বল্লব নারায়ণ মৃতশিল্পের তৈরি করা। সিলেট আশপাশ উপজেলা থেকেও মূর্তি নিতে আসে।

এবার সিলেট সদর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা হচ্ছে ৫৭টি। দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ২১টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন ২০টি ও পারিবারিক একটি। গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৫৮টি ম-পে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা গত বছর থেকে ৪টি কম। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৫৫টি ও পারিবারিক ৩টি। বালাগঞ্জ উপজেলায় ২৯টি ম-পের সার্বজনীন পূজা ২৮টি ও একটি পারিবারিক। যা গত বছর থেকে দুইটি কম। কানাইঘাট উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ৩৫টি। জৈন্তাপুর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ২২টি। বিশ্বনাথ উপজেলায় পূজাম-প ২৬টি। গোয়াইনঘাট উপজেলায় এবার ৩৯টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলায় জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপজেলায় এবার সার্বজনীন পূজা ৮৪টি। যা গত বছর থেকে ৯টি কম। বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৫১টি ম-পে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। যা গত বছর থেকে ৪টি কম। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৩৮টি ও পারিবারিক ১৩টি।

এসময় কথা হয় কানাইঘাট গাছবাড়ি ইউনিয়নের নয়াগ্রাম পূজা সংঘের সদস্য নিতিন দাসের সাথে। তিনি জানান, এবছর করোনার কারণে বাজেট কম। আর মূর্তির দামও বেশি তাই আমরা অন্যান্যবারের মত এতো ঘটা করে আয়োজন করতে পারছিনা।

এদিকে, শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পূজার বাজার। করোনা পরিস্থিতির কারণে শুরু দিকটায় বাজার না জমলেও এখন নগরীর শপিংমলগুলোতে ভীড় দেখাযাচ্ছে। উৎসব আনন্দের কাছে যেন ম্লান হয়ে পড়েছে করোনা ভয়। সিলেটের শপিংমলগুলোতে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। হাতে গোনা কয়েকটি ব্র্যান্ডশপে স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম মানা হচ্ছে। এছাড়া বাকি শপিংমলগুলোতে ভীড় ঠেলে যে যার মত ঘুরছেন শপিং করছেন। এবার দেশিও ব্যান্ডশপের কাপড়ের চাহিদা বেশি জানান ক্রেতারা। মেয়েদের তাতের শাড়ি, দেশি বুটিকসের ত্রিপিসে আগ্রহ বেশি। এছাড়া ধর্মীয় নিশানযুক্ত ব্লকের কাপড়গুলোরও চাহিদা রয়েছে বাজারে। ছেলেদের আগ্রহ পাঞ্জাবি পায়জামা, জিন্স টিশার্ট এসবে। এছাড়া, তরুণ তরুণীদের নজর কেড়েছে বিভিন্ন অনলাইন শপ। রিভিউ দেখে অনলাইন থেকে চাহিদা মত প্রোডাক্ট আনছেন তারা।

নিউইয়র্ক থেকে কিছুদিন হলো দেশে ফিরেছেন নগরীর করেরপাড়ার বাসিন্দা সুকন্যা শৈলী। তিনি জানান, দেশে প্রায় দুবছর পর ফিরেছি। প্রবাসে দেশের পূজা অনেক মিস করেছি। নিজ, পরিবার ও আত্মীস্বজন সবার জন্য পূজার শপিং করতে এসেছি। শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে হাতে গোনা কয়েকটা ব্র্যান্ডেরশপ ছাড়া কোথাও স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। বেশিরভাগ মধ্যমান শপিংমল গুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। বেশিরভাগই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এছাড়া শপিংমলে ক্রেতাদের ভীড় রয়েছে। সবাই বেশ পূজার আমেজেই আছেন। অন্যান্য বারের মত না হলেও উৎসবের আনন্দতো পুরোপুরি ম্লান হতে দেয়া যায় না। তাই সবার উচিত পরিবার নিয়ে যে যার মতো নিরাপদে উৎসব আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া।

এদিকে, এ বছর সরকার ঘোষিত স্বাস্থবিধি মেনে শারদীয় উৎসব সুষ্ঠু সুন্দর ও সফল করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা জানান, এ বছর সরকার ঘোষিত স্বাস্থবিধি মেনে শারদীয় উৎসব সুষ্ঠু সুন্দর ও সফল করতে হবে। এ জন্য তিনি সবার সহযোগীতা কামনা করেন। পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগর শাখার বৈঠকে ৩৮টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিদ্ধান্তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ভলন্টিয়ার রাখা, আলোক সজ্জা না করা, সাউন্ড সিস্টেম ও মাইক না বাজানো, বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার, প্রসাদ উন্মুক্ত না রাখা, আরতির পর মন্দিরে দর্শনার্থীদের আসতে নিরুৎসাহিত করা প্রভৃতি।

পূজায় নিরাপত্তার ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বি.এম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ করোনা পরিস্থিতির কারণে বাড়তি সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: