cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
মোঃ কায়ছার আলী: দিনাজপুর থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব আকাশপথে ২৭৮ কি:মি:, সড়কপথে ৩৯০ কি:মি:, রেলপথে ৪৯০ কি:মি:। ভিন্ন ভিন্ন রুট ব্যবহারে দূরত্বের কমবেশি হওয়া স্বাভাবিক। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে দিনাজপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে টিকিট ক্রয়কালীন বারবার চোখে পড়েছে বিশাল সাইনবোর্ড যেখানে লিখা রয়েছে বিভিন্ন ষ্টেশনের নাম, দূরত্ব এবং ভাড়ার পরিমাণ। যমুনা নদীর ওপারে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব ষ্টেশন ৩৭২ কি:মি: এবং নদীর এপারে শহীদ মনসুর আলী ষ্টেশন ২৭৮ কি:মি:। কেন ৯৪ কি:মি: পার্থক্য তা জানার জন্য ষ্টেশন সুপার এবিএম জিয়াউর রহমান সাহেবের কক্ষে গেলাম, সেখানে বসে ছিলেন ষ্টেশন মাষ্টার নার্গিস বেগম। সুপার সাহেব ভদ্র এবং বিনয়ী। আমাকে বসতে দিয়ে বললেন “নদী পারাপারের জন্য নির্দিষ্ট সমন্বিত দূরত্ব ৮১ কি:মি: নির্ধারণ করা আছে।
বিভিন্ন নদ-নদীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম দুরত্ব কম বেশি করা আছে। এটা আমাদের রেলের নীতিমালা।” সাধারণত রেলের যাত্রী হিসাবে আমরা সেই দূরত্বের ভাড়া দিয়ে থাকি। তবে আমরা দেশবাসী মনে প্রাণে চাই রেলের সেবা এবং মানের আরো উন্নতি হউক। বর্তমানে রেলের যাত্রী, ষ্টেশন সংখা, নতুন রেলপথ অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা-জগতি (কুষ্টিয়া) রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে এ অঞ্চলে রেলের প্রথম নবযাত্রা শুরু হয়। দেশের গণপরিবহন গুলোর মধ্যে “বাংলাদেশ রেলওয়ে” সরকারের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রীয় খাত। অবিভক্ত ভারতবর্ষে রেলওয়ে বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হত। ২০১১ সালে ২৮ শে এপ্রিল সরকার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতায় রেলপথ বিভাগ সৃষ্টি করে। ঐ বছরের ৪ ঠা ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠিত হয়।
সরকারের স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় হিসাবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কাজ হছে রেলপথ ও রেলগাড়ীর উন্নয়ন, পরিকল্পনা গ্রহণ, অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা। বর্তমান সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক নজরদারীতে রেখেছেন রেলের মেগা প্রকল্প তথা মেট্রোরেল সহ। ২০৩০ সালের মধ্যে আড়াইলাখ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করে যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের সকল জেলায় রেলের নেটওয়ার্ক স্থাপন করা।
অনেকগুলো শ্লোগানের মধ্যে তিনটি উল্লেখ করছি। (এক) “রেলসেবায় আনব উৎকর্ষ, পালন করব মুজিববর্ষ।” (দুই) “বুলেট ট্রেনের রূপকার, শেখ হাসিনা সরকার।” (তিন) “সব জেলায় রেল যাবে, জনগণ সেবা পাবে।” স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মত রেলপথেও বুলেট ট্রেন একসময় সারাদেশে বাস্তবায়িত হবে ইনশাআল্লাহ। ১৯৯৮ সালের ২৩ শে জুন বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেললাইন সংযোগের ফলে এদেশে রেলপথের নবদিগন্তের সূচনা হয়। ১০ বছর পর ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ঢাকা-কলকাতা-ঢাকার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হয়। ২০১৮ সালের ১০ই নভেম্বর এদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ ৬৩৯ কি:মি: ঢাকা-পঞ্চগড়-ঢাকা ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান আমলের শম্ভুক গতিতে চলা মিটার গেজ এর পরিবর্তে ব্রডগেজ লাইনে আধুনিক উন্নত মানের তিনটি আন্ত:নগর ট্রেন (একতা, দ্রুতযান, পরে পঞ্চগড়) উৎসব ও আমেজের মধ্যে শুভ উদ্বোধন হয়। সারা দেশে আজ রেলের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হচ্ছে।
নিরাপদ, আরামদায়ক যাত্রা হিসাবে রেলের যে দীর্ঘ দিলের অর্জন তা সুষ্টূ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিপূর্ণ কার্যকর করতে বা স্বাভাবিক চিত্রে ফিরতে একটু সময় প্রয়োজন। যদিও মাঝে মধ্যে কারনে অকারনে বিলম্ব বা ছোট খাটো দুই একটি অপ্রত্যাশিত দূর্ঘটনা ঘটে তবে সেটা কারো কাম্য নয়। এজন্য প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। আশা করা যাচ্ছে ২০২২ সালের জুনের মধ্যেই ঢাকা থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন শহর কক্সবাজারে ট্রেনে যাওয়া যাবে। দোহাজারী-কক্সবাজার ১০২ কি:মি: রেলপথ নির্মাণ কাজ এখন দৃশ্যমান। বিশটি ছোট, চারটি বড়, নয়টি নতুন ষ্টেশন নির্মাণ সহ সম্ভাব্য মোট ব্যয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। করোনা সংক্রমন পরিস্থিতিতে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকলেও এখন আবার সেই কাজ পুরোদমে চলছে এবং সেখানকার বাস্তব চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের ৪২ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে ছুটে যান মাননীয় রেলমন্ত্রী এ্যাড: নূরুল ইসলাম সুজন (এম.পি)। তাঁর বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: সিরাজুল ইসলাম (১৯৪৪-১৯৯৭) ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, উত্তরবংগের বর্ষীয়ান জননেতা, বড় দু:সময়ের আওয়ামী লীগের কান্ডারী, চারবারের-নির্বাচিত এম.পি তুখোড় মেধাবী ছাত্রনেতা, অনন্য অসাধারণ দীপ্তিময় বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন ৬ নং সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা হিসাবে তেঁতুলিয়াকে মুক্তাঞ্চলের তীর্থভূমিতে পরিণত করায় সারা বিশ্বের কাছে পরিচিতি পান। তাঁর কর্মগুণের জন্যই তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রথম আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। তিনি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘির মহাজনপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তৃতীয় বারের মত পঞ্চগড়-২ আসনের ২০১৮ সালের ৩০ শে ডিসেম্বর পার্লামেন্ট নির্বাচনে জাতিয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মাননীয় রেলমন্ত্রী।
তিনি ছাত্রজীবনে ডাকসুর বিজ্ঞান মিলনায়তন বিষয়ক বিষয়ক সম্পাদক, ঢাবি সিনেট সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবি সমিতির জেনারেল সেক্রেটারি সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে সততা ও নিষ্ঠার সাথে যথাযথ অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের জনক ভোটের আগের দিন তাঁর সহধর্মিনী নিলুফার ইয়াসমিন মারা যান এবং ভোটের পরের দিন তাঁর লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। দু:খ ভারাক্রান্ত মনে তিনি ২০১৯ সালের ৭ই জানুয়ারী বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। সেদিন থেকেই তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উল্কার মত ছুটে বেড়াচ্ছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তাঁর সারথী হিসাবে। তাঁর নিরলসভাবে পরিশ্রমের উদ্দেশ্য, ব্রত বা সাধনা হল কিভাবে রেলকে আন্তর্জাতিক মানের করে দেশ এবং জাতির সেবা করা যায়। সমগ্র দেশের রেল উন্নয়নের পাশাপাশি নিজ নির্বাচনী এলাকা দেবিগঞ্জে প্রায় ১০০০০ লোকের কর্মসংস্থানের জন্য ২১৭’৭৮ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য নিবেদিত ভাবে কাজ করছেন।
গত ২৪ শে আগস্ট পঞ্চগড় ডিসি অফিস সম্মেলন কক্ষে বেজার সাথে ভূমি স্বাক্ষর ও দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এর শুভ সুচনা করেন। চা শিল্প বিপ্লবের পাশাপাশি উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত এবং কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত, শিল্প প্রতিষ্টানের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে। ইতিমধ্যে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা নতুন রেলপথ স্থাপিত হলে ভারতের শিলিগুড়ির সাথে কানেক্টিভিটি হবে। তখন বাংলাবান্ধা হবে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটান মিলে ৪টি দেশের স্থলবন্দর।
সারা দেশের সাথে পঞ্চগড় যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে বহুল প্রতীক্ষিত দীর্ঘদিনের বৃহত্তর দিনাজপুর বাসীর জন্য পঞ্চগড়-রাজশাহী-পঞ্চগড় সরাসরি একটি আন্তঃনগর ট্রেন অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি যে কোন দিন শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনছে। পূর্বে শিক্ষাবোর্ড, বিআইটি (এখন রুয়েট) বড় বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহীতে থাকায় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুর জেলার যাত্রীরা বিশেষ করে টিচার এবং স্টুডেন্ট নিদারুণ কষ্ট করে পার্বতীপুর গিয়ে ট্রেন বদল করে অস্বাভাবিক বিড়ম্বনা বা যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন, আজ তা ইতিহাস। এখন সারা দেশের সাথে-রাজশাহী বিভাগের যাত্রীরা একে অপরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনায়াসে উপভোগ করতে পারবেন। আধুনিক রেলপথ প্রতিষ্টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আপনার নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখা রবে। তবে একটা কথা বিনয়ের সাথে বলতে চাই প্রায় সব সেক্টরে যদি কালো বিড়ালের উৎপাত না থাকত তবে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন সার্বভৌম রক্তস্নাত বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধশালী হত।একটু বিলম্ব হলেও মহৎকাজের সময় পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি।
লেখকঃ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট
০১৭১৭-৯৭৭৬৩৪