সর্বশেষ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেটে ৫ উপজেলার ৩৭ ইউনিয়ন বন্যা কবলিত

ফের উজানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল। ডুবে গেছে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট। পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে সিলেটের বুক চিড়ে বহমান বড় দুই নদী সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নগর ও শহরতলীর নিম্নাঞ্চল জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

সুনামগঞ্জ শহরের অনেক এলাকায় বন্যার পানি থৈ থৈ করছে। যানবাহন ছেড়ে নৌকাই হয়েছে মানুষের চলাচলের ভরসা। অকাল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে সিলেট নগরের নিম্নাঞ্চল মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, চালিবন্দর, মেন্দিবাগ, সাদীপুর, নওয়াগাঁও, কুশিঘাট, শেখঘাট, কলাপাড়া, কানিশাইল, ঘাসিটুলা এলাকা। নগরের বিভিন্ন ছড়াখালগুলো দিয়ে সুরমা নদীর পানি সরাসরি ঢুকে পড়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এলাকাজুড়ে অনেক বাড়িঘর, দোকানপাট ও রাস্তাঘাটে বন্যার পানি। অনেক বাড়িঘর থেকে লোকজন অন্যত্র সরে গেছেন। যারা বাড়িঘরে রয়েছেন, তারা খাটের ওপর বসবাস করছেন। খাটের ওপরই রান্নাবান্না সারছেন। অনেকের টয়লেট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় সাপের আতঙ্কও দেখা দিয়েছে জনমনে।

মাছিমপুর এলাকার বন্যার্ত মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, ঘর-দুয়ারে পানি। সন্তানদের নিয়ে অনিরাপদ অবস্থায় আছি। কাজে যাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

টানা বৃষ্টিপাত ও স্থানে স্থানে জমে থাকা পানির কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

ভুক্তভোগীদের আশঙ্কা, বৃষ্টিপাত বন্ধ না হলে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। বন্যার পানিতে অনেক স্থানে টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে।

ঘাসিটুলা এলাকার আলী আফছর বলেন, করোনার কারণে এমনিতে কাজকর্ম তেমন নাই। এখন বন্যা যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। কী করে সংসার চালাবো সেই চিন্তা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।

সিলেট সদর উপজেলার বাধাঘাটের মুশাহিদ আলী বলেন, বন্যার পানির কারণে রাস্তায় নৌকা চলাচল করছে। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় হাটবাজার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে সোমবার সকালে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের সদর উপজেলা, সীমান্তবর্তী গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। এসব এলাকার লোকজন কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে গবাদিপশু নিয়েও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

অন্যদিকে সোমবার (১৩ জুলাই) থেকে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার আশার বাণী শুনিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট। তবে সিলেটে বন্যার পানি কমলেও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের পানি নাও সরতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সিলেটের সীমান্ত অঞ্চল কানাইঘাট ও উজানে ভারতের মেঘালয়ে প্রবল বর্ষণের কারণে সুরমা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অবশ্য এ ৪/৫ দিন পানি কমতে থাকবে। তবে ১৯, ২০, ২১ ও ২২ জুলাই সিলেটে ভারী বর্ষণে আবারও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, জুলাই মাসে ১২ দিনে সিলেটে ৪৮৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় ৮১৯ মিলিমিটার। মাসের বাকি সময়জুড়ে এর চেয়ে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) শাম্মা লাবিনা অর্ণব এ প্রতিবেদককে বলেন, সিলেট জেলার মধ্যে ৫টি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৩৭টি ইউনিয়ন কন্যা কবলিত হয়েছে। এ যাবত ২১৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৯শ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের মনিটরিং সেল থেকে ওই এলাকাগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্য মতে, সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারার পানি ৮টি পয়েন্টের ৫টিতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: