সর্বশেষ আপডেট : ২৮ মিনিট ২৭ সেকেন্ড আগে
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙালী জাতির ইতিহাস আর এই ইতিহাসের মহানায়ক হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু

মকিস মনসুর: ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার লালসূর্য অস্তমিত হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর ১৯৪৭ সালে সাম্প্রদায়িকও অবৈজ্ঞানিক দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে প্রায় ২হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত পৃথক দুটি ভূ-খন্ড নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়।

ইতিহাসের ধারাবাহিকতার আলোকে বাংলার স্বাধীনতার হারানো লালসূর্যকে ফিরে আনার দূঢ়প্রত্যয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাগণ দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের দিন হিসেবে এই ২৩ জুন তারিখটিই বেছে নিয়েছিলেন। ঢাকার টিকাটুলি এলাকার কে এম দাস লেনের নান্দনিক সৌন্দর্যে অতুলনীয় উন্নত রুচি ও অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গিতে নির্মিত এক আলোজ্জ্বল ইতিহাসের সাক্ষী ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেনেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক এ দলটির জন্ম হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।

আজ ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। বাংলাদেশ তথা এ উপমহাদেশের রাজনীতিতে এ দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, জননেতা শামছুল হককে সাধারণ সম্পাদক, এবং জেলে থাকা অবস্থায় তথকালীন তেজোদ্দীপ্ত তরুণ সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করে নতুন এ দলটির জন্মের খবরে চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠি। তারা গণতন্ত্রের মানস পুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে ভারতীয় চর বলে আখ্যায়িত করে।

৪০ সদস্যের ঘোষিত ওয়ার্কিং কমিটি পাকিস্তানের শাসকদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে তীব্র গতিতে দলটিকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে সক্ষম হন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানের প্রকৃত অর্থেই প্রথম বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী মুসলিমলীগ ছাড়া কার্যত আর কোন দলের অস্তিত্ব ছিলো না।

পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। এর পর  ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য ও দলীয় মূলনীতিতে ধর্ম নিরপেক্ষতা গ্রহণের মাধ্যমে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগ, নামকরন করা হয়। এবং ১৯৭০ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ঐতিহাসিক নৌকা হিসাবে টিক করা হয়।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এই সংগঠনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামে পরিচিতি লাভ করে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। এই দলের জন্মলাভের মধ্য দিয়েই রোপিত হয়েছিল বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ। জন্মলগ্ন থেকেই দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি দলটির নেতাকর্মীদের অঙ্গীকার ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামে ও স্বাধীনতা অর্জনে আওয়ামী লীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিশ্বের ইতিহাসে একমাত্র রাজনৈতিক দল, যে দল একটি জাতির ভাষা, স্বাধীনতা এবং পতাকার জন্যে সংগ্রাম করেছে। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভ করে বাংলাদেশ নামক শব্দটি বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্টা লাভ করেছে.। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আজও দলটি দেশের জনগণের পছন্দের শীর্ষে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং মানবাধিকারের সবচেয়ে বড়ো ধারক ও বাহক।

এই দলটির স্বপ্ন অতীতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাত ধরে বাস্তবায়িত হয়ে চলেছে। আমাদের জন্যে বাংলাদেশ শুধুই একটি মানচিত্র নয় বরং ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত এবং তিন লক্ষ বীরাঙ্গনার সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া এক সম্পদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।প্রত্যেকটি যুদ্ধেরই একটি পটভূমি থাকে।

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধও ১৯৬৬ এ বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা, ৬৯ এর গণ আন্দোলন. ১৯৭০ এ আওয়ামীলীগের নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করা সহ কয়েকটি ঘটনার পর্যায়ক্রমিক রূপান্তর। । ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন যেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেয়, সেই আন্দোলনও এই যুদ্ধের পটভূমি রচনায় সহায়তা করে। ৭১ বছরের দীর্ঘ যাত্রায়, এই দলটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সকল সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বিরাট এক কালো মেঘ ঢেকে দেয় স্বাধীনতার আলো।

বাঙালীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা, বাঙালীর আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বায়ত্তশাসন সর্বশেষ স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগ তার আদর্শ এবং উদ্দেশ্যে অটল থেকেও সময়ের বিবর্তনে একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দেশের শুধু প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমাদের প্রাণের এই সংগঠন এখন ও বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে মাতৃ-সংগঠন হিসাবে স্থান করে নিয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আজকের এই লেখার শুরুতেই স্রদ্ধার সাথে স্ররন করছি ঐতিহাসিক এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাকালীল সময়ের অগ্রদূত মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও জননেতা শামসুল হক. গণতন্ত্রের মানস পুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ. আবুল হাশেম. ক্ষণজন্মা পুরুষ অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান. অলি আহমদ. তাজ উদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপটেন এম মনসুর আলী, কামারুজ্জমান সহ যাদের নেতৃত্বে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় সুকঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নতুন প্রাণ পায় দীর্ঘদিনের পুরনো এই দলটি।

এছাড়াও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজবধি ২০টি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ ছয় জনকে সভাপতি পদে পেয়েছে আর সাধারণ সম্পাদক পদে পেয়েছে নয় জনকে। দলের প্রথম সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তিনি ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত চারটি কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ওই বছর একটি বিশেষ কাউন্সিলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ।

১৯৬৪ সালে দলের পঞ্চম কাউন্সিলে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি পদে ছিলেন ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত। ওই বছর ষষ্ঠ কাউন্সিলে দলের সভাপতি হন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সভাপতি পদে ছিলেন। ১৯৭৪ সালে দশম কাউন্সিলে সভাপতি হন এ এইচ এম কামরুজ্জামান। ১৯৭৫ সালে ঘাতকের গুলিতে কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে ও জাতীয় চার নেতা নিহত হওয়ার পর ১৯৭৬ সালে মহিউদ্দিন আহমেদ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন। এর পরের বছর ১৯৭৭ সালে দলের ১১তম কাউন্সিলে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে আহ্বায়ক করা হয়।

এরপর ১৯৭৮ সালে কাউন্সিলে সভাপতি হন আবদুল মালেক। তিনি ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে দলের সভাপতি পদে আছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। দলের ১৩তম কাউন্সিলে তিনি প্রথম সভাপতি হন। সর্বশেষ ২০তম কাউন্সিলেও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগ গঠনের পর ১৯৪৯ সালে দলের প্রথম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। এরপর ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত দলের দ্বিতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। এরপর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক। ১৯৮৭ সালে সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। ছিলেন ১৯৯২ সাল পর্যন্ত। এর জিল্লুর রহমান আবারও দুই মেয়াদে ২০০২ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন আবদুল জলিল। ছিলেন ২০০৯ সাল পর্যন্ত। ওই বছর দলের ১৮তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত।

সর্বশেষ ২০তম কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়ে নবম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জননেতা ওবায়দুল কাদের।

এখানে উল্লেখ্য যে পাকিস্তান সৃষ্টির ৪ মাস ২০ দিন পর ১৯৪৮ সালের ৪ টা জানুয়ারি তৎকালিন পূর্ব বাংলায় প্রথম সরকার বিরুধী ছাত্র সংগঠন ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’, আত্ম-প্রকাশ করে। বাংলাদেশের তৎকালীন তরুণ প্রজন্মের উদীয়মান এক উজ্জ্বল নকত্র শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রেরণায় সংগঠিত জাতীয় আন্দোলনের মূল ধারায় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালণ করে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগ।

এদিকে ১৯৫৩ সালের ১৪-১৫ নভেম্বর ময়মনসিংহ শহরে অনুষ্ঠিত দলের বিশেষ কাউন্সিলে সাধারণ নির্বাচনে জোট গঠনের সিদ্ধান্তের পর ১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২২৭টি আসন পায় জাতীয় তিন নেতা শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্ট। আওয়ামী মুসলিমলীগ একা পায় ১৪৩টি আসন। মাত্র ২৪ বছর বয়সে এ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচিত হন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। এ নির্বাচনে পাকিস্তানের মুসলিমলীগের শোচনীয় পরাজয় হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, সব আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশ গঠনে সর্বোচ্চ ভুমিকা পালন করেছে আওয়ামী লীগ।

তাই স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। আওয়ামী লীগ মানেই বাংলাদেশ! আওয়ামীলীগ মানে বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গবন্ধু মানে বাংলার মানচিত্র.; জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নামই নয়, একটি মুক্তির পথ, একটি বিশ্বাসের নাম। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির পথ প্রদর্শক ও জাতির মুক্তির নায়ক।

যতকাল ধরে পদ্মা-মেঘনা-গৌরী যমুনা মনু বহমান থাকবে, ততকাল বঙ্গবন্ধুর নাম বাঙালি জাতির অন্তরে লালিত হয়ে থাকবে চির অম্লান হয়ে। আওয়ামীলীগের ইতিহাস বাংগালী জাতির ইতিহাস. আর এই ইতিহাসের মহানায়ক হচ্ছেন,সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান.। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একদল সেনা অফিসারের হাতে নির্মমভাবে খুন হবার পর একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর গুলি করে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট চার সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে।

বঙ্গবন্ধু ও জাতীর চার নেতাকে হত্যার পর সামরিক সরকারের শাসনামলে দমনপীড়নের মুখে ও মতের ভিন্নতায় বিভক্ত হয়ে পড়ে সংগঠনটি। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যারত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলকে ঐক্যবদ্ধ ও পুনরায় সংগঠিত করে সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। ঐতিহ্যের ধারক বাহক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর থেকে ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা সত্বেও দলটির খাঁটি নেতাকর্মীরা মনোবল হারায়নি, বরং প্রতিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন সংগ্রামে ছিল বীর বেশে।

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের ভাত ও কাপড়ের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয় লাভের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন আবার হারানো আলো ফিরে পায় প্রিয় বাংলাদেশ.। দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উতরাই ও প্রাসাদসম ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দলটি আজ এ দেশের গণমানুষের ভাব-ভাবনার ধারক-বাহকে পরিণত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ভাবধারার আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে দলটি।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল আজ স্বয়ংবর.জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামীলীগ তাঁরই যোগ্যতম কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ প্রজন্ম পরম্পরায় বাংলার আলোর প্রতীক. হিসাবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের উন্নয়নের মডেলে পরিণত করেছেন। ভগ্নপ্রায় রাষ্ট্রব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়ে মজবুত করেছেন দেশের মেরুদণ্ড। বাংলাদেশের গণমানুষের শান্তি-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

সংকটে, সংগ্রামে ও অর্জনে গণমানুষের পাশে থাকা আওয়ামী লীগের ৭১ বছরের শুভ জন্মদিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ম্যাদার অব ইউমিনিটি দেশরত্ন শেখ হাসিনা উন্নয়ন-অগ্রগতি ও ডিজিটালাইজড নতুন প্রজন্মের উপযুক্ত বাংলাদেশ তথা ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে এই হোক আমাদের দীপ্ত শপথ.. জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ চিরজীবী হোক। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। জয় হোক মানবতার।

লেখক পরিচিতি:-( ৯০ এর গন-আন্দোলনের বাংলাদেশের সাবেক ছাত্রনেতা বৃটেনের কমিউনিটি লিডার ও সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর. ১/১১’র গঠিত দেশরত্ন শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলন কমিটি ইন ইউকের তৎকালীন কনভেনার. যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাবেক সহ সভাপতি. ইউকে ওয়েলস যুবলীগের সাবেক সভাপতি. ইউকে ওয়েলস ছাত্রলীগ সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়া ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় সদস্য, ওয়েলস আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি. জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইউকের সভাপতি. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত-বার্ষিকী মুজিববর্ষ সার্বজনীন উদযাপন নাগরিক কমিটি ইউকে ওয়েলসের যুগ্ম আহবায়ক এবং হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ইন ইউকের সভাপতি এবং বৃটেনের কার্ডিফ ইন্টারন্যাশনাল ম্যাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট তথা শহীদ মিনার কমিটির সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন।)

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: