সর্বশেষ আপডেট : ৫ মিনিট ৫ সেকেন্ড আগে
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কপাল পুড়েছে

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন সংক্রান্ত রাজনৈতিক চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সরকারের নতুন ভিসা ও অভিবাসন নীতি সোমবার (১২ মে ২০২৫) ঘোষণা করেছেন। নতুন নীতির আওতায় নন-ইইউ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি ২০ হাজার থেকে ৪১ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের ওপর প্রথমবারের মতো ৬ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে, যা অভিবাসন নীতিতে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নতুন শর্ত অনুযায়ী, স্নাতক শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার পরে চাকরি পেতে হবে দক্ষতার ভিত্তিতে। অন্যথায়, ১৮ মাসের মধ্যে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী, তারা দুই বছর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে থাকতে পারতেন।

ব্রিটেন সরকারের ভাষ্য, এই পদক্ষেপ অভিবাসন হ্রাসের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে এবং শুল্কের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দেশীয় শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত হবে। সরকারের দাবি, এই উদ্যোগ উচ্চ শিক্ষায় ব্রিটিশ নাগরিকদের প্রবেশাধিকারে উৎসাহ দেবে এবং দেশীয় দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

তবে উচ্চশিক্ষা খাতের প্রতিনিধিরা এই পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘ইউনিভার্সিটিজ ইউকে’ নামক সংস্থা, যা ১৪০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে, পূর্বাভাস দিয়েছে—এই শুল্কের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় খাতে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হতে পারে।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, “ভেটেরিনারি মেডিসিনের মতো একটি কোর্সে শিক্ষার্থীপ্রতি ২০ হাজার পাউন্ড খরচ হয়, যার প্রায় অর্ধেকই আসে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। যদি সরকার মনে করে দেশীয় শিক্ষার্থীরাই এই খরচ বহন করবে, তবে তাদের উচ্চ-মূল্যের কোর্সে সুযোগ দেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত হবে?”

তিনি আরও বলেন, “ফি জমে থাকা, গবেষণা খাতে অপর্যাপ্ত তহবিল এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের হ্রাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতিমধ্যেই কঠিন সময় পার করছে। এখন এই বাড়তি কর পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।”

একই ধরনের উদ্বেগ জানিয়েছে ‘রাসেল গ্রুপ’, যুক্তরাজ্যের ২৪টি শীর্ষ পাবলিক রিসার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন। তারা জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ২ লাখ ৫৭ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছিলেন। এসব শিক্ষার্থী থেকে প্রাপ্ত ফি তাদের প্রতিষ্ঠানের মোট আয়ের এক-পঞ্চমাংশ থেকে এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অবদান রেখেছে।

রাসেল গ্রুপ বলছে, “২০২২-২৩ সালে একজন ব্রিটিশ শিক্ষার্থীর কোর্স খরচে যে £২,৫০০ ঘাটতি ছিল, তার বড় অংশই পূরণ হয়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ফি থেকে। নতুন নীতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিকে থাকার ঝুঁকি বাড়াবে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন এই অভিবাসন নীতির ফলে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার আকর্ষণ হ্রাস পেতে পারে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যেতে পারে, যার প্রভাব পড়বে পুরো শিক্ষাখাতের অর্থনীতির ওপর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: