সর্বশেষ আপডেট : ১৩ ঘন্টা আগে
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

নতুন বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে: প্রধানমন্ত্রী

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ আমাদেরকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে শনিবার (১৩ এপ্রিল) এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, শুভ নববর্ষ ১৪৩১। উৎসবমুখর বাংলা নববর্ষের এই দিনে আমি দেশবাসীসহ সকল বাঙালিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। এটি সর্বজনীন উৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। আবহমান কাল ধরে নববর্ষের এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণ স্পন্দনে, নব-অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে বাঙালি রচনা করে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, আনন্দ ও ভালোবাসার মেলবন্ধন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে ‘পহেলা বৈশাখ’ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মুগল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালিয়ানার প্রতিচ্ছবি। এই উদযাপন আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়, এর মধ্য দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় জাতিসত্তার পরিচয়।

তিনি বলেন, বাঙালির প্রতিটি ঘরে, জনজীবনে এবং আর্থসামাজিক সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখ এক অনন্য উৎসব। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে হালখাতার পাশাপাশি যাত্রাগান, পালাগান, পুতুলনাচ, অঞ্চলভিত্তিক লোকসংগীত, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন পসরা নিয়ে মেলার বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে যেমন লোকজ-সংস্কৃতি প্রাণ ফিরে পায় তেমনি দেশের অর্থনীতি তথা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমৃদ্ধ হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পহেলা বৈশাখ পূর্ণপ্রাণ নিয়ে অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়ন। এটি ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করতে শেখায়। অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পহেলা বৈশাখ আমাদের মনে আনে নতুন তেজ। একারণেই আমরা দুর্বার প্রতিরোধে রুখে দিতে পেরেছি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক অপশক্তিকে, যারা বাঙালির ঐতিহ্য নস্যাৎ করতে চেয়েছিল।

তিনি বলেন, আত্মপরিচয় ও স্বীয় সংস্কৃতির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম মুক্তির সংগ্রামে। সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলিত স্রোত পরিণত হয়েছিল স্বাধিকার ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে। এভাবেই বিশ্বের বুকে অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালনের মাধ্যমে বিশ্বসমাজে বাঙালি শ্রেষ্ঠ জাতি হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাখের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নববর্ষের-এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সারাবিশ্বের বাঙালির জন্য নিঃসন্দেহে বিরাট অর্জন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক, উদারনৈতিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রের ভাবাদর্শে আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তার মূলমন্ত্র জাতিগত ঐতিহ্য ও অহংকার। একারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং দেশ পুনর্গঠনে কাজ করেছে তাঁর অভিন্ন চেতনা। আমরা বীরের জাতি, এ জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। কাল থেকে কালান্তরের পথ পরিক্রমায় বাঙালির অর্জন ও অগ্রগতি চির ভাস্বর হয়ে থাকবে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলি। সুখী, শান্তিময়, আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। কবিগুরুর ভাষায়…

মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,

অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।

রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,

আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ

মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক।

এসো হে বৈশাখ এসো, এসো..

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: