ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে- এমন খবরে তাকে খুঁজতে বের হয়ে আরও পাঁচ নেতার হদিস মিলছিল না বলে অভিযোগ করে বিএনপি। শনিবার (১৯ আগস্ট) দিনভর এ নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় ছিলেন বিএনপি নেতারা।

তবে অবশেষে তাদের ছয়জনের খোঁজ মিলে। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের গ্রেপ্তার করে ব‌লে জানা য‌ায়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে ফজিসান (৩১),বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ (৩০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান হাসান (৩২), ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ (২১)।

ডিবি বলছে, বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য গ্রেপ্তারকৃতরা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন।

রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে লালবাগ থানার বাসা নং- ৩৮/১/এ এর ৩য় তলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গতকাল তিনটি অবৈধ আগ্নেয়ার ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মমিনুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহর দেহ তল্লাশী করে এক রাউন্ড গুলি ভর্তি অবস্থায় একটি লোহার তৈরী কাঠের বাটযুক্ত পিস্তল, তাদের কাধে থাকা ব্যাগের ভিতর আট রাউন্ড গুলি ভর্তি অবস্থায় একটি লোহার তৈরী কাঠের বাটযুক্ত টপ ব্রেক রিভলবার, একটি কালো রংয়ের প্লাষ্টিকের বক্সের ভিতরে ১৯ রাউন্ড গুলি, আট রাউন্ড গুলি ভর্তি অবস্থায় একটি লোহার তৈরী কাঠের বাটযুক্ত টপ ব্রেক রিভলবার উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ছাত্রনেতাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র হাইকমান্ড এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের হাইকমান্ডের নির্দেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখাগু‌লো রাজপথে বিএনপির শক্তি বৃদ্ধি করতে ছাত্রদলের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়ার উদ্দেশ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে লালবাগে তারা স্থানে করছিল। তাদের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠা‌নো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার ছাত্র নেতাদের মোবাইল জব্দ করে আমরা তাদের মোবাইলে বিভিন্ন অস্ত্র ও জব্দ হওয়া অস্ত্রের ছবি দেখতে পাই। জিজ্ঞাসাবাদে কার কাছ থেকে এবং কোথা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে সেই তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে নুরুন্নবী বলেন, তারা একটি অস্ত্র টেকনাফ থেকে আর দুইটি অস্ত্র পাবনা থেকে সংগ্রহ করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের হোয়াটসঅ্যাপ অস্ত্র সংগ্রহের বিষ‌য়ে কথোপকথনে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান চলছে।

‌ডি‌বি কর্মকর্তা ব‌লেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানা যায়, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা নাশকতামূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করছিলো। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেসহ দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিএনপি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয় শুক্রবারে এই ছাত্রদলের নেতাদেরকে ডিবি তুলে নিয়ে যায় এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মামলার এজাহারে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেভাবেই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

সরকারি দলের অনেক নেতা কর্মী অস্ত্রসহ অনেক সময় ধরা পড়ে বা তাদের দেখা যায়, তাদের বিষয়ে আপনার কোন ব্যবস্থা নিবেন কিনা বা নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে ডিবির এই কর্মকর্তা বিষয়টি এড়িয়ে যান।

সংবাদটি শেয়ার করুন:

• ফেইসবুক
• টুইটার
• গুগল প্লাস
• ইমেইল