সর্বশেষ আপডেট : ১৪ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

রায়হান হত্যা: পলাতক আসামি নোমান প্যারিসে

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পু’লিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নি’র্মম নি’র্যা’তন চালিয়ে হ’ত্যা করা হয় আখালিয়ার বাসিন্দা রায়হান আহম’দকে। নি’র্যা’তনে রায়হান যখন নিস্তেজ হয়ে পড়েন তখন নিয়ে যাওয়া হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতা’লে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃ’ত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর রায়হানের মৃ’ত্যু গণপি’টুনিতে হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পু’লিশ।

সোমবার (১০ অক্টোবর) রায়হান হ’ত্যা মা’মলার দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। ইতোমধ্যে আ’লোচিত এ হ’ত্যা মা’মলায় ৬৯ সাক্ষীর মধ্যে ৪৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আ’দালতের বিচারক। এছাড়া আ’দালতে ১৬৪ ধ’রায় জবানব’ন্দি দেওয়া ১০ জন আ’দালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এদিকে, ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা হয়ে যান কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি রায়হান হ’ত্যার ৬ নম্বর আ’সামি। নোমান ছাড়া ওই মা’মলার বাকি পাঁচ আ’সামি সিলেট মহানগর পু’লিশে কর্ম’রত ছিলেন। পাঁচ জনই বর্তমানে কারাগারে। রায়হান হ’ত্যায় জ’ড়িত না থাকলেও নোমানের বি’রুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অ’ভিযোগ এনেছে ত’দন্তকারী সংস্থা পু’লিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বর্তমানে নোমান ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

ঘটনার চার দিন পর থেকেই পলাতক হন নোমান। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজে’লার বুড়িডহর গ্রামের ইছরাইল আলীর ছে’লে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রায়হান হ’ত্যার পর নগরীর মজুম’দারির ভাড়া বাসাতেই ছিলেন নোমান। হার্ডডিস্ক গায়েবের খবর গণমাধ্যমে আসার পর সট’কে পড়েন। এরপর বেশ কিছুদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানের পর উত্তরবঙ্গ হয়ে ভা’রতে পাড়ি জমান। দক্ষিণ ভা’রতের কেরালা রাজ্যেও কিছুদিন অবস্থান করেন। সেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচয় হওয়া এক বন্ধুর মাধ্যমে নাম-পরিচয় লুকিয়ে ভিন্ন নামে ভা’রতের আধার কার্ড, পাসপোর্টসহ জাল কাগজপত্র জোগাড় করেন। এরপর ভা’রত থেকে অন অ্যারাইভাল ভিসায় আরও একটি দেশে আশ্রয় নেন। পরে সেখান থেকে ইউরোপে পাড়ি জমান। বর্তমানে নোমান ফ্রান্সে অবস্থান করছেন। প্যারিস শহর থেকে দূরে একটি গ্রামে পরিচিত এক অ’ভিবাসীর বাসায় আশ্রয় নেন বলে জানা গেছে।

রায়হান হ’ত্যা মা’মলার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবুল ফজল চৌধুরী বলেন, রায়হানের স্ত্রী’, মা, সুরতহাল প্রস্তুতকারী ও চাচাসহ ৪৪ জন আ’দালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আ’লোচিত এ হ’ত্যা মা’মলার সাক্ষী ৬৯ জন। হ’ত্যা মা’মলায় ক্রমান্বয়ে আ’দালতে সাক্ষ্য দেবেন ওসমানী হাসপাতা’লের চিকিৎসক, ত’দন্ত কর্মক’র্তাসহ বাকিরা। আম’রা আশাবাদী, ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় ন্যায়বিচার পাবো। ইতোমধ্যে আ’দালতে যতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা ঘটনার যথাযথ বর্ণনা দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, রায়হান হ’ত্যা মা’মলার আ’সামিরা কারাগারে থাকলেও এজাহারভুক্ত ৬ নম্বর আ’সামি আব্দুল্লাহ আল নোমান ঘটনার পর থেকেই পলাতক। যতটুকু জেনেছি, তিনি প্যারিসে আছেন। আ’দালত তার বি’রুদ্ধে গ্রে’প্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তাকে খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর তার মালামাল ক্রোকের আদেশ দিলেও ব্যক্তিগত মালামাল না থাকায় ক্রোক তামিল হয়নি।

আ’দালত সূত্র জানায়, রায়হানের দেহে ১১১ আ’ঘাতের চিহ্ন উঠে আসে ফরেনসিক প্রতিবেদনে। আ’ঘাতগুলো লা’ঠির। অ’তিরিক্ত আ’ঘাতের কারণে র’ক্তক্ষরণে রায়হানের মৃ’ত্যু হয়। আ’ঘাতে শরীরের মাংস থেঁতলে যায়। রগ ফেটে গিয়ে আন্তঃদেহে র’ক্তক্ষরণ হয়। আ’ঘাতের সময় রায়হানের পেট খালি ছিল। পেটে কেবল এসিডিটি লিকুইড ছিল।

রায়হান হ’ত্যা মা’মলার অ’ভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পু’লিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অ’ভিযু’ক্ত করা হয়। অন্য অ’ভিযু’ক্তরা হলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুনর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), ফাঁড়ির টুইআইসি (সেকেন্ড-ইন-কমান্ড) পদে থাকা সাময়িক বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক হাসান উদ্দিন ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজে’লার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (পলাতক)।

পু’লিশ জানায়, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেটের আখালিয়ার বাসিন্দা রায়হান আহম’দকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নি’র্যা’তন করা হয়। পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতা’লে তার মৃ’ত্যু হয়। রায়হানের মৃ’ত্যুর পরদিন ১২ অক্টোবর তার স্ত্রী’ তাহমিনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে পু’লিশি হেফাজতে মৃ’ত্যু (নিবারণ) আইনে কোতোয়ালি থা’নায় একটি হ’ত্যা মা’মলা করেন। মা’মলার পর মহানগর পু’লিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি ত’দন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নি’র্যা’তনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার জনকে ওই বছরের ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত এবং তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়।

এরপর কনস্টেবল হারুনসহ তিন জনকে গ্রে’প্তার করে মা’মলার ত’দন্তকারী সংস্থা পিবিআই। তবে প্রধান অ’ভিযু’ক্ত আকবর ১৩ অক্টোবর পু’লিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে ভা’রতে চলে যান। ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাকে গ্রে’প্তার করা হয়। ত’দন্তের শেষ পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি প্রধান আ’সামি আকবরকে পালাতে সহায়তা করা ও আলামত গো’পন করার চেষ্টার অ’ভিযোগে বন্দরবাজার ফাঁড়ির টুআইসি পদে থাকা সাময়িক বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক হাসান উদ্দিনকে গ্রে’প্তার করে পিবিআই। এরপর ২০২১ সালের ৫ মে পিবিআই আ’লোচিত এ মা’মলার চার্জশিট আ’দালতে জমা দেয়। নির্ধারিত তারিখে শুনানি শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর এক হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার ত’দন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন আ’দালত। এরপর শুরু হয় বিচারকাজ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: