সর্বশেষ আপডেট : ১৮ ঘন্টা আগে
বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেট জুড়ে ফের জ্বর-সর্দির প্রকোপ

ভ্যাপসা গরমের পর দুয়েকদিনের বৃষ্টির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সিলেট জুড়ে। হঠাৎ করে সিলেটের ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ জ্বর বা সর্দিতে আ’ক্রান্ত। ফার্মেসীতে সর্দি, জ¦র ও কাশির ওষুধ বিক্রি বেড়েছে।

এদিকে দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়লেও করো’না সংক্রমণ অনেকাংশে কমেছে। তবুও সিলেট জুড়ে সর্দি, জ¦র-কাশির প্রকোপ বাড়লেও করো’না পরীক্ষায় আগ্রহ নেই অধিকাংশ মানুষের। অ’পরদিকে গত কয়েকদিন থেকে একদিন কমলেও পরদিনের রিপোর্টে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। তবে বিভাগে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা উঠা নামা করলেও এখনো দুইশোর নিচে থাকছে।

নগরীর কয়েকটি ফার্মেসী ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল সপ্তাহে কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই জ্বর, সর্দি-কাশির ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। জ্বর, সর্দি-কাশিতে আ’ক্রান্ত ব্যক্তিদের কেউ কেউ চিকিৎসকদের পরাম’র্শ নিলেও অধিকাংশ রোগীর স্বজনরা নাপা, প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন, কাশির বিভিন্ন জাতের সিরাপসহ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কিনছেন। এই ওষুধ খেয়ে খুব কম সময়ের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন। ফলে এমন রোগে অনেকেই চিকিৎসকমূখী হওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। এদিকে জ্বর, সর্দি- কাশি আ’ক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের প্রাত্যহিক কাজ করে যাচ্ছেন। মেলামেশা করছেন সবার সঙ্গেই। ফলে করো’নাজনিত রোগের ঝুঁ’কি বাড়ছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ।

নগরীর শামীমাবাদ এলাকার এক গৃহবধু জানান, সোমবার থেকে তিনি, তার সাড়ে বছর বয়সী ছে’লে ও দেড় বছর বয়সী মে’য়ে সবার এক সাথে সর্দি জ¦র ও কাশি হয়। তারপর ফার্মেসী থেকে সাধারণ ঔষুধ সেবন করার পর ৩ দিনেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এজন্য তার পরিবারের কারো জন্য এন্টিবায়েটিক ঔষুধের প্রয়োজন হয়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি সম্প্রতি বৃষ্টিকে দায়ী করেন। বৃষ্টিজনিত কারণেই তিনি সহ বাচ্চারা জ¦র, সর্দি-কাশিতে আ’ক্রান্ত হয়েছিলেন বলে আশ’ঙ্কা করেছেন। তাই করো’না পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা মনে করেননি।

শুধু শামীমাবাদের ঐ গৃহবধু ই নয়, নগরীর প্রায় প্রতিটি ঘরে কেউ না কেউ জ¦র, সর্দি-কাশিতে আ’ক্রান্ত হচ্ছেন। একজনের পর একই পরিবারের কয়েকজনের সর্দি-জ¦রে আ’ক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ শামসুদ্দিন আহম’দ হাসপাতাল সহ নগরীর বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতা’লের বর্হিবিভাগে জ¦র, সর্দি-কাশির রোগীদের ব্যাপক উপস্থিতির খবর পাওয়া গেছে। যদিও এটাকে মৌসুমী জ¦র-সর্দি হিসেবে বলছেন কেউ কেউ। তবুও যেহেতু দেশে করো’নার সংক্রমণ এখনও থামেনি সেহেতু করো’না টেস্টের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ১৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জনের করো’না শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ১ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিলেটে ৮ দিনে অর্ধশতাধিক রোগীর করো’না শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১ জন করো’নায় মৃ’ত্যুবরণ করেন। সব মিলিয়ে সিলেটের বর্তমান করো’না পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো রয়েছে। তবে মওসুমী জ¦রে আ’ক্রান্তরা যদি দীর্ঘদিন অ’সুস্থ থাকেন তাহলে ডেঙ্গু এবং করো’নার আশ’ঙ্কা কোনভাবেই উড়িয়ে দেয়া যায়না।

এ ব্যাপারে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: জাবেদ জিল্লুল বারী দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, বর্তমানে সিলেটে জ¦র, সর্দি ও কাশির প্রধান কারণ হলো আবহাওয়ার পরিবর্তন। দিনে গরম রাতে হঠাৎ ঠাণ্ডা এমন আবহাওয়াই মূলত এজন্য দায়ী। এছাড়া সিলেটে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। অনেক রোগীর মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা গেলেও তারা নমুন পরীক্ষা না করে ঔষুধ সেবন করছে ফলে জ¦রের প্রকৃত কারণ অজানা থেকে যাচ্ছে। সিলেট বিভাগের বাইরে থেকে সিলেটে এসে যদি কারো সর্দি, জ¦র ও কাশি দেখা দেয় তাহলে জরুরী ভিত্তিতে উনার ডেঙ্গু পরীক্ষা করা উচিত।

তিনি বলেন, জ¦র, সর্দি-কাশি হলেই নিজে থেকে এন্টিবায়েটিক সহ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাবলেট-ক্যাপসুল খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। মওসুমী জ¦র হলে ৩/৪ দিন পর এমনিতেই সাধারণ ঔষুধে ভালো হয়ে যাবে। ৫ দিন পরও যদি শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে ডেঙ্গু ও করো’না টেস্ট করানোর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের স্ম’রণাপন্ন হওয়া উচিত।

সিলেটের ডেপুটী সিভিল সার্জন ডা: জন্মে জয় শংকর দত্ত বলেন, বর্তমানে জ¦র, সর্দি-কাশির প্রকোপ বৃদ্ধির মূল কারণ তাপমাত্রার পরিবর্তন। এছাড়া প্রতি বছরের ন্যয় ভাদ্র মাস হিসেবে এই সময়ে পানিবাহিত রোগও বৃদ্ধি পাওয়ার আশ’ঙ্কা থাকে। তবে সিলেটে কয়েকদিন থেকে পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা কমছে। এছাড়া জ¦র, সর্দি-কাশি রোগী যদি ৪/৫ দিনের মধ্যে ভালো না হয় তাহলে তাদের ডেঙ্গু ও করো’না পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছি। কয়েকদিন থেকে সরকারী, বেসরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে মওসুমী জ¦র-সর্দি-কাশিতে আ’ক্রান্ত রোগীর উপস্থিতি বাড়ছে বলে আম’রা খবর পেয়েছি। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা: হিমাংশু লাল রায় বলেন, বর্তমানে প্রতিনিয়ত আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে। ফলে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। এজন্য জ¦র, সর্দি-কাশির প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রতি বছর এমন সময়ে এই পরিস্থিতি ঘটে থাকে। যা সাধারণ ঔষুধেই ৩/৪ দিনে সেরে যায়। এরপরও কারো যদি সাধারণ ঔষুধে সুস্থ না হয় তাহলে অবশ্যই ডেঙ্গু ও করো’না পরীক্ষা করতে হবে এবং চিকিৎসকের স্ম’রণাপন্ন হতে হবে। তিনি বলেন, সিলেটে বর্তমানে করো’নার প্রকোপ একেবারে কম। এছাড়া এখনো সিলেটে ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়নি। মৌলভীবাজারে একজন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছিল। তিনি সুস্থ হয়ে (আজ) বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ী চলে গেছেন। এর বাইরে সিলেটের কোথাও ডেঙ্গুরোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। সৌজন্যঃ দৈনিক জালালাবাদ

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: